ইবি শিক্ষিকার সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগে কর্মচারী বরখাস্ত
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক শিক্ষিকার সঙ্গে অসদাচরণ ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক কর্মচারীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষিকা উম্মে সালমা লুনা। তার অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত কর্মচারী জে এম ইলিয়াস (ইলিয়াস জোয়ার্দার) কে সাময়িক বরখাস্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
লুনা বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। আর অভিযুক্ত কর্মচারী জে এম ইলিয়াস (ইলিয়াস জোয়ার্দার) বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেলের নেটওয়ার্ক টেকনিশিয়ান।
এদিকে ওই শিক্ষিকার স্বামীর পরিচয়ে বরখাস্তকৃত কর্মচারী ইলিয়াসকে হুমকি প্রদান করা হয়েছে বলে পাল্টা অভিযোগ করেছেন ইলিয়াস।
সোমবার (১৫ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
অভিযোগপত্রে ভুক্তভোগী শিক্ষিকা দাবি করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক ভবনে উম্মে সালমা লুনার বাসায় ইন্টারনেট সংযোগের সমস্যা হওয়ায় আইসিটি সেলের নেটওয়ার্ক টেকনিশিয়ান ইলিয়াসকে ফোন দেন তিনি। প্রথম দিনে তার ফোন রিসিভ না করলেও গত শনিবার লুনার বাসার রাউটারটি রিসেটআপ করে দেন ইলিয়াস। পরে লুনা তার রাউটারের পাসওয়ার্ট জানার জন্য ইলিয়াসকে কল দিলে তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন ইলিয়াস।
এসময় তিনি বলেন, ‘একজন শিক্ষকের কী কারণে ইন্টারনেট লাগে?’ এ ছাড়া তিনি স্থানীয় প্রভাব দেখিয়ে তাকে হুমকিও দেন বলে জানান ভুক্তভোগী শিক্ষিকা লুনা। এ ঘটনায় প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিলে অভিযুক্ত কর্মচারী ইলিয়াসকে সাময়িক বরখাস্ত করে কর্তৃপক্ষ।
এ ছাড়া এ বিষয়ে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেনকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শেলীনা নাসরীন ও উপ-রেজিস্ট্রার আলীবদ্দীন খান।
এদিকে ভুক্তভোগী শিক্ষিকার স্বামী জাহাঙ্গীর আলম ফোন দিয়ে ইলিয়াসকে কয়েক দফায় হুমকি প্রদান করেছেন বলে পাল্টা অভিযোগ ইলিয়াসের। তিনি বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি সেক্রেটারি হিসেবে পরিচয় দিয়ে তাকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন বলে দাবি করেন ইলিয়াস। এ বিষয়ে সোমবার নিরাপত্তা চেয়ে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন তিনি।
এ বিষয়ে হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহকারী অধ্যাপক উম্মে সালমা লুনা বলেন, ‘তিনি আমার সঙ্গে খুবই বাজে ব্যবহার করেছেন এবং হুমকি দিয়েছেন। আমি আইন অনুযায়ী তার বিচার চাই।’ তার স্বামী কর্তৃক ইলিয়াসকে হুমকির বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ‘আমার স্বামী বিষয়টি সমাধানের জন্য ইলিয়াসের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। তাকে কোনো হুমকি দেননি তিনি।’
এদিকে আইসিটি সেলের নেটওয়ার্ক টেকনিশিয়ান জে এম ইলিয়াস (ইলিয়াস জোয়ার্দার) বলেন, ‘আমি ওই শিক্ষিকাকে কোনো হুমকি দেইনি। আর যদি কোনো ভুল করে থাকি তাহলে প্রশাসন আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে। কিন্তু আমাকে ফোন দিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আমি আমার জীবনের নিরাপত্তা চাই।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান বলেন, ‘ভুক্তভোগী শিক্ষিকার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্ত কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
কেএম/এসজি