মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পার হচ্ছেন বেরোবির শিক্ষার্থী
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) চারটি ফটকসংলগ্ন রংপুর-কুড়িগ্রাম-বগুড়া মহাসড়ক নেই কোনিা স্পিডব্রেকার, নেই কোনো উড়াল সেতু। মহাসড়কে উচ্চ গতিতে বাস, ট্রাক, প্রাইভেটকারসহ নানা ভারী যানবাহন যাতায়াত করতে দেখা যায়। এতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপার করতে হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের।
রংপুরের পার্কের মোড়ে অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়টি এই পার্কের মোড়ের বুক চিরে বেরিয়ে গেছে উত্তরাঞ্চলের অন্যতম ব্যস্তময় সড়ক রংপুর-কুড়িগ্রাম মহাসড়ক এবং রংপুর-বগুড়া মহাসড়ক। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপার হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৯ হাজার শিক্ষার্থী। ব্যস্ততম এই মহাসড়কে নেই কোনো পথচারী পারাপারের নিরাপদ ব্যবস্থা। প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট ছোট দুর্ঘটনা। হঠাৎ করে ঘটে যেতে পারে বড় ধরনের কোনো দুর্ঘটনা, যেতে পারে কোমলমতি শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষের প্রাণ।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪টি গেইট রয়েছে এই চার গেইট মহাসড়কসংলগ্ন। প্রধান ফটক নির্মাণাধীন থাকায় বেশি ব্যবহার হচ্ছে ১ নম্বর গেইট, এই ব্যস্ততম গেইট সংলগ্ন সড়কে একটি মাত্র গতিনিরোধক রয়েছে, যা ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা মডার্ন মোড় হয়ে কুড়িগ্রাম ও রংপুর শহরের যানবাহনগুলোর গতি নিয়ন্ত্রণ করে। কিন্তু বিপরীত দিক থেকে আসা যানবাহনগুলোকে গতিনিরোধক ব্যবস্থা করা হয়েছে তা শুধুমাত্র অটোরিকশাকে গতিনিরোধ করতে পারে। আবার এই অবস্থায় শিক্ষার্থীদের রাস্তা পারাপার চরম ঝুঁকিতে ফেলেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী যুথী রানী বলেন, সকাল বেলা ক্যাম্পাসের উদ্দেশ্য বের হয়েছি রাস্তা পাড় হচ্ছি ঠিক সেই সময় একটি বাস দ্রুত গতিতে এসে সামনে থামে একটুর জন্য প্রাণে বেঁচে যাই। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের পথটি একটি হাইওয়ে রোড আমাদের চলাচলের ঝুঁকি খুব বেশি তার উপর নেই কোনো জেব্রা ক্রসিং। আমাদের দাবি একটি নিরাপদ চলাচলের রাস্তা, মৃত্যু ঝুঁকি নিয়ে অনিশ্চিত বিশ্ববিদ্যালয় জীবন আমরা চাই না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আল-মামুন ঢাকাপ্রকাশকে জানান, আমার মেস বিপরীত পাশে হওয়ায় ক্যাম্পাসে যাওয়া-আসা করে এই রাস্তা পার হওয়া লাগে। ওভারব্রিজ থাকলে আমাদের রাস্তা পারাপারের সময় ঝুঁকি থাকত না। বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটার আগে প্রশাসনের এই ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আদিকা পারভীন স্নেহা বলেন, এই সড়কটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সবগুলো গেটের সাথে হওয়ায় এ মহাসড়কে সবসময় শিক্ষার্থীদের ভিড় থাকে। আর এই সড়ক দিয়ে অনেক ভারী মাল বোঝাই করা ট্রাক ও বাস যাতায়াত করে অনেক দ্রুত গতিতে। ভালো কোনো স্পিড ব্রেকার না থাকার ফলে যেকোনো মুহূর্তে আমরা বিপদের মুখে পড়তে পারি। তাই আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের কাছে জেব্রাক্রসিং সহ ওভারব্রিজ স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করছি।
এই বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক সৈয়দ আনোয়ারুল আজিম বলেন, এটা যেহেতু মহাসড়কের আওতাধীন, এখানে সিটি করপোরেশনও কোনো কিছু করতে পারবে না, আমি চাইলেও হাত দিতে পারব না। আমি একটা কথা বলতে পারি সতর্কতা ছাড়া রাস্তা পারাপার করব না। এ ছাড়া কোনো কিছু আমার বলার নেই। উপাচার্য স্যার এই বিষয়ে অবগত আছেন৷ আমি আবারও স্যারকে এই বিষয়ে জানাবো যেন দ্রুতই এই বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপউপাচার্য অধ্যাপক ড. সরিফা সালোয়া ডিন ঢাকাপ্রকাশকে জানান, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের গেইটগুলো যেহেতু মহাসড়কসংলগ্ন তাই জেব্রা ক্রসিং, ওভারব্রিজ, স্পিড ব্রেকার ছাত্র-ছাত্রীদের রাস্তা পারাপারের জন্য আবশ্যিক। এই বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে কি না আমি জানি না। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এই বিষয়ে বলব। আশা করি দ্রুত সম্ভব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এসএন