বেরোবিতে ফলাফল জটিলতা নিরসনে অনশনে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থীরা
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) ইংরেজি বিভাগে ফেল করা ছাত্রকে পাস দেখিয়ে ফলাফল প্রকাশ করার ঘটনায় জটিলতা নিরসন ও নতুন করে ফলাফল প্রকাশের দাবিতে আমরণ অনশন শুরু করেছেন ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থীরা। রবিবার (১৯ মার্চ) সকাল ১০টায় প্রশাসন ভবনের সামনে অনশনে বসেছেন তারা।
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ দপ্তর ও ইংরেজি বিভাগের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুরের ইংরেজি বিভাগের ২০১৭-২০১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. শামীম ইসলাম (আইডি ১৭০২০২৬, রেজিস্ট্রেশন নম্বর-০০০০০৯৭৮৩) বর্তমানে তৃতীয় বর্ষ দ্বিতীয় সেমিস্টারে অধ্যয়নরত। প্রথম বর্ষ দ্বিতীয় সেমিস্টারে ল্যাব পরীক্ষায় (কোর্স কোড: ENG ১২০৬) তিনি উত্তীর্ণ হতে পারেননি। কিন্তু তৎকালীন প্রশাসন প্রকাশিত ফলাফলে তাকে পাস দেখিয়েছে। এতে সেই পরীক্ষার্থী মানোন্নয়ন পরীক্ষাও দেননি। তৃতীয় বর্ষ দ্বিতীয় সেমিস্টারে এসে সেই শিক্ষার্থীর প্রথম বর্ষে ফেল করার বিষয়টি প্রকাশ পায়। এতে সেই শিক্ষার্থী শামীমের সনদপ্রাপ্তিতে জটিলতা সৃষ্টি হয়। এই প্রেক্ষাপটে গত বছর ২৫ মে অনুষ্ঠিত একাডেমিক কাউন্সিলের ৪০তম সভার সুপারিশ ও একই বছরের ৩০ মে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ৮৭তম সভার সিদ্ধান্ত মতে, চার সদস্য বিশিষ্ট একটি তথ্যানুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়।
তথ্যানুসন্ধান কমিটির প্রতিবেদনে ৩টি পর্যবেক্ষণে ফলাফল যাচাইকারী উপপরীক্ষা নিয়ন্ত্রক সামসুল হকসহ একজন কর্মচারীর অসতর্কতা ও অসাবধানতার কারণ উল্লেখ করা হয় হয়েছে। তথ্যানুসন্ধান কমিটির প্রতিবেদনের আলোকে গত ২০২২ সালের ৩১ মে অনুষ্ঠিত একাডেমিক কাউন্সিলের ৪২তম সভার সুপারিশক্রমে একই সালের ১৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ৯১তম সভার অনুমোদনক্রমে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। বর্তমানে বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ও তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলমগীর চৌধুরী।
এদিকে দীর্ঘদিনেও প্রশাসনিক জটিলতায় এই সমস্যা সমাধান না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা অনশন শুরু করেছে। তাদের দাবি, পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশে যে অনিয়ম হয়েছে তা দ্রুত সমাধান করতে হবে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী শামীম বলেন, আমি একজন নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তান। ৫ বছর হয়ে গেল আমি আমার রেজাল্ট পেলাম না। আমার ভবিষ্যত অনিশ্চিত। যখন আমার বন্ধুরা চাকরি করছে, ঠিক সেই সময় দাঁড়িয়ে আমি বঞ্চনার শিকার হয়েছি। আমি কোনো চাকরিতে আবেদন করতে পারছি না। আমাকে প্রথম বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টারে প্রোমোটেড দেখিয়েও আজ আমার রেজাল্ট পেলাম না। আমি আমরণ অনশন শুরু করেছি যতক্ষণ রেজাল্ট না পাই আমি এই অনশন চালিয়ে যাব।
প্রসঙ্গত, তদন্ত কমিটি গঠনের সংবাদ প্রকাশ করায় উপপরীক্ষা নিয়ন্ত্রক সামসুল হক সময় টেলিভিশনের প্রধান বার্তা সম্পাদক মোজতবা দানিশ এবং রংপুরের ব্যুরো চিফ রতন সরকারের নামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮ এর ২৫(ক)/২৯৯(১) ধারায় মামলা (৬২/২০২২) করেন।
এসএন