খুকৃবির সাবেক উপাচার্যের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা
খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুকুবি) সাবেক উপাচার্য এবং বর্তমান রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছে। ১৫ মার্চ দুপুরে নগরীর সোনাডাঙ্গা থানায় মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়েছে। মামলা নং-৯। বিষয়টি নিশ্চিত করে সোনাডাঙ্গা থানার ওসি মোঃ মমতাজুল হক বলেন, মামলাটি দায়ের করার পর নথি আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। মামলাটির তদন্ত করবেন সোনাডাঙ্গা থানার ওসি (তদন্ত) মোঃ নাহিদ মৃধা।
এর আগে গত ১৩ মার্চ খুকৃবির সাবেক উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে খুলনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ৩ ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন নারী কর্মকর্তা। নালিশী অভিযোগে ১নং বিবাদী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. মোঃ শহীদুর রহমান খান এবং ২নং বিবাদী বর্তমান রেজিস্ট্রার ডাঃ খন্দকার মাজহারুল আনোয়ার। ট্রাইব্যুনালের বিচারক আঃ ছালাম খান অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহণের জন্য থানাকে নির্দেশ দিয়েছিলেন।
খুলনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট ফরিদ আহমেদ জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন নারী কর্মকর্তা সাবেক ভিসি ও বর্তমান রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা দায়েরের জন্য সোনাডাঙ্গা থানায় গিয়েছিলেন। কিন্তু থানায় মামলা নেওয়া হয়নি। পরবর্তীতে আদালতে অভিযোগ করলে বিচারক এজাহারটি মামলা হিসেবে নিতে নির্দেশ দেন।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, বাদী খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টোর কিপার হিসেবে ২০২১ সালে কর্মরত ছিলেন। অপরদিকে মামলার ১নং আসামি খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও কন্ট্রোলার বোর্ডের প্রধান ও ২নং আসামি ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ১নং আসামি খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ম তলায় অফিস ও বাসা পাশাপাশি সেখানেই থাকতেন। সেখানে খাওয়ার কোনো ব্যবস্থা না থাকায় ২নং আসামি বাদীকে ১নং আসামির খাওয়ার ব্যবস্থা করার দায়িত্ব দেন।
বাদী প্রতিদিন ১নং আসামির অফিসে খাবার পৌঁছে দেন। সেই সুবাদে ১নং আসামি, বাদীকে বিভিন্ন সময়ে কুপ্রস্তাব দিতে থাকে। বাদী তার কোনো কথায় রাজি না হয়ে ২নং আসামিকে বিষয়টি জানায়। এক পর্যায়ে ২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টার দিকে ১নং আসামি খাবার দিতে এলে পরিকল্পিতভাবে ২নং আসামির সহযোগিতায় ১নং আসামি বাদীকে ধর্ষণ করেন। ২নং আসামি অফিসের বাইরে ছিলেন।
বাদী বেরিয়ে আসার সময় ২নং আসামি তাকে বলে যে, আজকের ঘটনা তুমি কাউকে বলবে না, তাহলে তোমার চাকরি থাকবে না, আর স্যারকে বলে স্যারের সাথে তোমার বিয়ে দেয়ে দিব। তুমি তোমার স্বামীকে তালাক দিয়ে দাও। বাদী চাকরির কথা বিবেচনা করে ও সামাজিক অবস্থান লোক-লজ্জার ভয়ে কাউকে কিছু জানায় না।
১ ও ২নং আসামির কথা মতো বাদী তার স্বামীকে তালাক দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তখন ২নং আসামি বাদী ও ১নং আসামিকে বিয়ে করিয়ে দেওয়ার জন্য একশত টাকার তিনটি নন-জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে ১নং আসামির নিজ হাতে একটি অঙ্গীকারনামা লিখে ২নং আসামিকে দিলে তিনি উক্ত অঙ্গীকারনামা বাদীকে প্রদাণ করেন। তখন বাদী তার স্বামীকে তালাক প্রদাণ করেন। তখন ১নং আসামি বাদীকে বিয়ে না করে।
আজ কাল এ কথা সেকথা বলে সময়ক্ষেপণ করতে থাকে এবং ২০২১ সালের ১৬ নভেম্বর থেকে ২০২২ সালের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে বাদীকে ভুল বুঝিয়ে, বাদীর সঙ্গে স্বামী-স্ত্রীর পরিচয়ে মেলামেশা করতে থাকে। এক পর্যায়ে খুলনা হতে ১নং আসামি বদলি হয়ে যান এবং গত ২০২২ সালের ৩০ নভেম্বর থেকে বাদীর সঙ্গে সব ধরণের যোগাযোগ বন্ধ করে দেন।
এএজেড