দিনাজপুরে জবি শিক্ষার্থীদের উপর হামলায় আহত ১২
দিনাজপুরের স্বপ্নপুরীতে একাডেমিক ফিল্ড ওয়ার্কে গিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষার্থীরা হামলার শিকার হয়েছে। পার্কে কর্মরত স্টাফ কর্তৃক এক নারী শিক্ষার্থীকে হেনস্তার জেরে কথা-কাটাকাটির এক পর্যায়ে এই হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এক শিক্ষকসহ অন্তত ১২ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
রবিবার (১২ মার্চ) সন্ধ্যায় দিনাজপুর জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলার কুশদহ ইউনিয়নে অবস্থিত ‘স্বপ্নপুরী’ পার্কের ভেতরে এ ঘটনা ঘটে। আহত ১২ জন শিক্ষার্থীরর মধ্যে দুই শিক্ষার্থীর মাথা ফেটেছে ও এক শিক্ষারথীার পা ভেঙেছে। আহত শিক্ষার্থীরা দিনাজপুরের এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
জানা গেছে, পার্কে রাইডের সময় জগ্ননাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী ব্যাগ রেখে চলে আসে। পরবর্তীতে সেই ব্যাগটি আরেক বান্ধবী ফেরত আনতে গেলে সেখানে কর্মরত স্টাফরা ওই নারী শিক্ষার্থীর সঙ্গে খারাপ ও অসৌজন্যমূলক কথাবার্তা বলে। এ নিয়ে ওই নারী শিক্ষার্থীর অন্য বন্ধুরা প্রতিবাদ করলে স্টাফরা জড়ো হয়ে লাঠি-সোঠা, রড নিয়ে শিক্ষার্থীদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়।
ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী শ্রেয়সী শিকদার বলেন, আমাদের ১৪তম আবর্তনের শিক্ষার্থীরা বিভাগের ফিল্ডওয়ার্কের কাজে দিনাজপুরের স্বপ্নপুরীতে আসি। সেখানে রাইডে কর্মরত এক ছেলে আমাদের এক বান্ধবীকে ব্যাগ ফেরত আনার সময় টিজ করলে শিক্ষার্থীরা ক্ষিপ্ত হন। পরে তারা হঠাৎ করে জড়ো হয়ে লাঠি-সোঠা, রড নিয়ে আমাদের ওপর আক্রমণ চালায়। আমাদের অনেক শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়েছেন। আহতদের নিয়ে আমরা এখন দিনাজপুর মেডিকেলে আছি।
ঘটনাস্থলে থাকা ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মহিউদ্দিন বলেন, বিভাগের ফিল্ডওয়ার্কের জন্যে আমরা স্বপ্নপূরীতে যাই। সেখানে রাইডের একজন ছেলে আমাদের একজন ছাত্রীকে উত্তক্ত করলে তাদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বাকবিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে অতর্কিতভাবে তারা রড ও লাঠি দিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর আঘাত করে। আমাদের প্রায় ১২ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। দুইজন শিক্ষার্থীর মাথা ফেটেছে ও তার মধ্যে একজনের হাতও ভেঙেছে। আহত শিক্ষার্থীদের আমরা দিনাজপুর মেডিকেল কলেজে ভর্তি করেছি।
এ বিষয়ে স্বপ্নপুরী পার্কের স্বত্বাধিকারী ও দিনাজপুর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান দেলওয়ার হোসেন বলেন, এক শিক্ষার্থী ব্যাগ রেখে চলে যায়। পরবর্তীতে আরেক শিক্ষার্থী ফেরত নিতে আসলে স্টাফরা ব্যাগের আসল মালিককে আসতে বলে। আসল মালিক এসে ব্যাগ ফেরত নেয়। কিন্তু আগের জনকে কেনো ব্যাগ ফেরত দেওয়া হলো না এ নিয়ে শিক্ষার্থীরা ঝামেলা তৈরি করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর নিউটন হাওলাদার বলেন, ‘আমি ঘটনাটি শোনার পরপরই ওখানকার ওসির সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি বিষয়টির সমাধান করবেন বলে জানিয়েছেন। আমরা আরও খোঁজ-খবর নিয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের চেষ্টা করছি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নবাবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ফেরদৌস ওয়াহিদ ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ‘শিক্ষকসহ শিক্ষার্থীরা থানায় আছেন। মামলার কাজ চলছে। অভিযুক্তরা পুলিশ হেফাজতে আছেন।’
এমএমএ/