হলে হলে মাইকিং করে শিক্ষার্থীদের জড়ো, সাংবাদিকের উপর হামলা
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের কয়েক দফা সংঘর্ষের ঘটনায় প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করছে শিক্ষার্থীরা। হলে হলে গিয়ে মাইকিং করে শিক্ষার্থীদে জড়ো করা হচ্ছে। বিক্ষোভ চলাকালে উগ্র কয়েকজন শিক্ষার্থীর নেতৃত্বে সাংবাদিকদের উপর হামলা চালানো হয়। এ ঘটনায় চ্যানেল-২৪ এর রিপোর্টারসহ সহকারী এক ক্যামেরাম্যান আহত হন। এ সময় আরও বেশ কয়েকটি টিভি চ্যানেলের ক্যামেরা ভাঙচুর করা হয় বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় রাজশাহীতে কর্মরত সাংবাদিকরা ক্যাম্পাসের বাইরে অবস্থান নিয়েছেন।
বিক্ষোভে অংশ নিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে হলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের মাইকিং করে জড়ো করছেন আন্দোলনকারীরা। মিছিলে শিক্ষার্থীদের অংশ নিতে হলের মসজিদের মাইকে আহ্বান জানাতেও দেখা গেছে।
জানা গেছে, এ জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মতিহার হল, এস এম হল, নবাব আব্দুল লতিফ হল, মাদারবক্স হল, শহীদ জিয়াউর রহমান হল, হবিবুর রহমান হলসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সব হলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে অংশগ্রহণের আহ্বান জানানো হয়।
এর আগে শিক্ষার্থীদের উপর হামলার প্রতিবাদে রবিবার (১২ মার্চ) সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে বিভিন্ন হলের উদ্দেশ্যে পদযাত্রা শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।
এদিকে দ্বিতীয় দিনের মতো শিক্ষার্থীরা মাঠে নামলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখনও নিরব। এখনো শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রশাসনের কাউকে কথা বলতে দেখা যায়নি।
অন্যদিকে সংঘর্ষের ঘটনার দ্বিতীয় দিনে আবারও পরিস্থিতি অবনতির দিকে যাচ্ছে। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শত শত শিক্ষার্থী আহত হয়ে মেডিকেলে ভর্তি আছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছে। প্রশাসনের ঘুমন্ত চেহারা ও গতকালের ঘটনায় প্রশাসনের কাউকে পাশে পাননি বলে জানান তারা।
এ সময় প্রক্টরের পদত্যাগের দাবি তোলার পাশাপাশি প্রশাসনিক ভবনের পর উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলেও হুমকি দেন শিক্ষার্থীরা।
প্রসঙ্গত, শনিবার (১১ মার্চ) সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বিনোদপুর বাজারে স্থানীয়দের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, সংঘর্ষ চলে। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাবার বুলেট ছোড়ে পুলিশ। এতে সাংবাদিকসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। আহতদের মধ্যে একজন আইসিইউতে ভর্তি রয়েছেন। তার বর্তমান শারীরিক অবস্থা স্থীতিশীল বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। আর আহত অন্যরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টার ও রামেক হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
ওই ঘটনার পর পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক আছে বলে জানিয়েছেন রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) রফিকুল আলম। তিনি বলেন, এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক। তবে ক্যাম্পাসে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন আছে। অনাকাঙ্খিত কোন ঘটনায় কাম্য নয়। তারা সজাগ রয়েছেন। আর এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি।
এসআইএইচ