ছাত্রলীগের সংবাদ বয়কট জবি সাংবাদিকদের
বিভিন্ন সময়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের ঘটনায় শাখা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে কোনো সাংগঠনিক ব্যবস্থা না নেওয়ায় সংগঠনটির সব ধরনের ইতিবাচক সংবাদ বয়কটের ঘোষণা দিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবে (জবি প্রেসক্লাব) কর্মরত সাংবাদিকরা।
শনিবার (১১ মার্চ) সংগঠনটির এক জরুরি সভায় সিদ্ধান্তের পর সভাপতি মোস্তাকিম ফারুকী ও সাধারণ সম্পাদক আরমান হাসান এক যৌথ বিবৃতিতে এ বয়কটের ঘোষণা দেন।
জানা গেছে, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজির অনুসারী গাজী মো. শামসুল হুদাসহ একাধিক ছাত্রলীগ কর্মী এক সাংবাদিককে হেনস্তা ও সাংবাদিক সংগঠনকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে। পরে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে অভিযুক্ত গাজীর চাঁদাবাজির খবর প্রকাশিত হওয়ার পরও কোনো সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়নি শাখা ছাত্রলীগ। এ ছাড়া শাখা ছাত্রলীগের কর্মীদের চাঁদাবাজি, সাধারণ শিক্ষার্থীদের হেনস্তাসহ নানাবিধ কর্মকাণ্ডের ঘটনা ঘটতে থাকে।
এর আগে দৈনিক জনবাণীর প্রতিবেদক ছাত্রলীগের দুই পক্ষের ধাক্কাধাক্কির ভিডিও ধারণকালে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কর্মী তাকে হেনস্তা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এ ছাড়া গত বছরের ৪ ডিসেম্বর একটি মারামারির ঘটনার ভিডিও ধারণ করতে গেলে এক সাংবাদিকের মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে অতর্কিত হামলা করেন শাখা ছাত্রলীগের কর্মীরা। পরে ক্যাম্পাসের অন্যান্য সাংবাদিকরা হামলাকারীকে চিহ্নিত করতে গেলে জবি ছাত্রলীগ সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজীর নেতৃত্বে ছাত্রলীগ কর্মী সুজন দাশ অর্ক, তুর্য ও চিঠি কমিটির কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক রায়হান কবির ৪ জন সাংবাদিকের উপর অতর্কিত হামলা করেন। এ ঘটনাতেও সাংগঠনিক কোনো ব্যবস্থা নেয়নি ছাত্রলীগ।
যৌথ বিবৃতিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের সভাপতি মোস্তাকিম ফারুকী বলেন, বিভিন্ন সময়ে ক্যাম্পাসে কর্মরত সাংবাদিকদের ছাত্রলীগ কর্মীদের দ্বারা হেনস্তা হতে হয়েছে। এমনকি হেনস্তাকারীদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। তাই জড়িতদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা না নেওয়া পর্যন্ত আমরা ইতিবাচক সংবাদ বয়কট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
সাধারণ সম্পাদক আরমান হাসান বলেন, ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের দ্বারা বারবার সাংবাদিকদের উপর হামলা ও হেনস্তার ঘটনা ঘটলেও শাখা ছাত্রলীগ কিংবা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ কোনো সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়নি। এমন পরিস্থিতিতে ক্যাম্পাসে সাংবাদিকতার সুষ্ঠু পরিবেশ বিঘ্নিত হয়েছে এবং সাংবাদিকরা নিরাপত্তা সংকটে ভুগছে। তাই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা না নেওয়া পর্যন্ত আমরা ছাত্রলীগের সব ধরনের ইতিবাচক সংবাদ বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
এসজি