ঢাবির ছাত্রী লীলা নাগের নামে পরীক্ষা হলের উদ্বোধন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) প্রথম ছাত্রী লীলা নাগের নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবন পরীক্ষার হলের নামফলক উন্মোচন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) কলা ভবনের ৫ম তলায় অবস্থিত ‘লীলা নাগ পরীক্ষার হল’ এর নামফলক উন্মোচন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ছাত্রী লীলা নাগের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, ১৯২১ সালে তিনি ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হন। শিক্ষা জীবন শেষে তিনি সমাজ সংস্কারে আত্মনিয়োগ করেন এবং সামাজিক রূপান্তর ঘটানোর ক্ষেত্রে এক অনন্য ভূমিকা পালন করেন। নারী শিক্ষা, নারী অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং নারীদের মাঝে সামাজিক ও রাজনৈতিক সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে তিনি দীপালি সংঘসহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। যা বাঙ্গালি নারী সমাজে ব্যাপক জাগরণ সৃষ্টি করে।
অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠন এবং সমাজের অবহেলিত ও বঞ্চিত নারীদের উন্নয়নের মূল ধারায় সম্পৃক্ত করতে তিনি আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। লীলা নাগের জীবন ও কর্ম থেকে শিক্ষা নিয়ে আত্মপ্রত্যয়ী, উদ্যমী ও সাহসী নারী হিসেবে নিজেদের গড়ে তোলার জন্য তিনি বর্তমান প্রজন্মের ছাত্রীদের প্রতি আহ্বান জানান।
উপাচার্য আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অসচ্ছল ছাত্রীদের আর্থিক সুরক্ষা বলয়ের আওতায় আনতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বদ্ধপরিকর। এ ব্যাপারে স্ব স্ব অবস্থান থেকে সহায়তা প্রদানের জন্য তিনি সকলের প্রতি আহ্বান জানান। নারীর প্রতি সামাজিক সহিংসতা প্রতিরোধ ও প্রযুক্তিগত নির্যাতন বন্ধে কার্যকর প্রযুক্তি উদ্ভাবনের উপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবদুল বাছিরের সভাপতিত্বেম এসময় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখন ইংরেজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জেরিন আলম। এ সময় কলা অনুষদভুক্ত বিভিন্ন বিভাগের বিপুল সংখ্যক শিক্ষক ও শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, লীলা নাগ (বিবাহের পরে নাম হয় লীলা রায়) একজন বাঙালি সাংবাদিক, জনহিতৈষী এবং রাজনৈতিক আন্দোলনে একজন সক্রিয় ব্যক্তির নাম। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ছাত্রী ছিলেন। ১৯২১ সালে তিনি কলকাতার বেথুন কলেজ থেকে বিএ পাশ করেন। সেখান থেকে তিনি ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিষয়ে এমএ ভর্তি হন। ১৯২৩ সালে তিনি দ্বিতীয় বিভাগে এমএ ডিগ্রী লাভ করেন।
তিনিই ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম এমএ ডিগ্রীধারী। তখনকার পরিবেশে সহশিক্ষার কোনো ব্যবস্থা ছিল না বলে লীলা রায়ের মেধা ও আকাঙ্ক্ষা বিচার করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য ড. হার্টস তাকে পড়ার বিশেষ অনুমতি প্রদান করেন। ১৯০০ সালের ২ অক্টোবর জন্মগ্রহণ করেন করা লীলা ১৯৭০ সালের ১১ জুন মৃত্যুবরণ করেন।
এমএমএ/