ইবিতে ছাত্রী নির্যাতন: হল ছেড়েছে বাকি ৩ অভিযুক্ত
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) হলে নবীন ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় হল প্রশাসনের নির্দেশে হল ছেড়েছে অভিযুক্ত তিন শিক্ষার্থী। মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দিনের বিভিন্ন সময়ে তারা হল ছাড়েন বলে জানিয়েছেন হলের শাখা কর্মকর্তা খাতুন।
হল ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, সকালে হল ছাড়েন ছাত্রী নির্যাতনে অভিযুক্ত ফিন্যান্স এ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের মাওয়াবিয়া জাহান। হলের গণরুম প্রজাপতি-১ এ থাকতেন তিনি। বাবার সঙ্গেই তিনি ক্যাম্পাস ছেড়েছেন বলে জানা গেছে। পরে দুপুরে নিজের মালপত্র গুছিয়ে হল ছাড়েন একই অভিযোগে অভিযুক্ত আইন বিভাগের একই সেশনের ইসরাত জাহান মীম। তারা উভয়ই ক্যাম্পাস পার্শ্ববর্তী মেসে উঠেছেন বলে জানা গেছে৷ তবে হল প্রশাসনের নির্দেশনার আগেই হল ছেড়েছেন ফাইন আর্টস বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের ছাত্রী হালিমা আকতার ঊর্মী। ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় দেশব্যাপী তোলপাড় সৃষ্টি হলে গা ঢাকা দেন তিনি। এই অভিযুক্তও ক্যাম্পাস পার্শ্ববর্তী মেসে উঠেছেন বলে জানা গেছে। মীম ও ঊর্মী হলের ১০৯ নম্বর কক্ষে ছিলেন।
এর আগে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় হাইকোর্টের নির্দেশে হল ছাড়ে ছাত্রী নির্যাতনের মূলহোতা ও হুকুমদাতা শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা ও তার কর্মী ফিন্যান্স এ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের তাবাসসুম ইসলাম। অন্তরা হলের দক্ষিণ ব্লকের ৪০৮ নম্বর কক্ষে ও তাবাসসুম প্রজাপতি-২ তে (গণরুম) ছিলেন।
এ বিষয়ে হলের শাখা কর্মকর্তা হামিদা খাতুন বলেন, আজ (মঙ্গলবার) সকালে মাওয়াবিয়া ও দুপুরে মীম হল ছেড়েছে। হল ছাড়ার নির্দেশনার কপি তাদের কাছে পৌঁছাতে গেলে মীমকে তার রুমে পাই। এ সময় তাকে প্রস্তুতি নিতে দেখেছিলাম। তবে মাওয়াবিয়াকে রুমে পাইনি। তার রুমমেটরা জানিয়েছে সকালে হল ছেড়েছে সে। তবে ঊর্মী আগেই হল ছেড়েছেন। প্রভোস্ট স্যারের নির্দেশনায় তাকে ডাকতে গেলে রুমে পাওয়া যায়নি।
এ প্রসঙ্গে হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. শামসুল আলম বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশনা পাওয়া মাত্রই অন্তরা ও তাবাসসুম ওইদিন সন্ধ্যায় হল ত্যাগ করে। পরে হলের পক্ষ থেকে আবাসিকতা বাতিলের সিদ্ধান্ত জানালে আজ বাকিরা সবাই হল ছেড়েছে। বুধবার বেলা ১২টার মধ্যে তাদের হল ত্যাগের নির্দেশনা ছিল।
উল্লেখ্য, ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় গত ১৫ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টে জনস্বার্থে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী গাজী মো. মহসিন। পরে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট প্রশাসন ক্যাডার, বিচার বিভাগ ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের সমন্বয়ে একটি কমিটি করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেন। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের গঠিত কমিটির প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। এ সময় দুই অভিযুক্ত অন্তরা ও তাবাসসুমকে ক্যাম্পাসের বাইরে রাখার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। ওইদিন সন্ধ্যায় হল ত্যাগ করেন অভিযুক্তরা।
এদিকে হল প্রশাসন কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পর্যালোচনা সাপেক্ষে সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) পাঁচ অভিযুক্তের আবাসিকতা ও দেশরত্ন শেখ হাসিনা হল সংযুক্তি বাতিল করেন হল প্রভোস্ট। এ সময় পহেলা মার্চ (বুধবার) বেলা ১২টার মধ্যে তাদেরকে হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়। এর প্রেক্ষিতে নির্ধারিত সময়ের আগেই মঙ্গলবার দিনের বিভিন্ন সময়ে তারা হল ত্যাগ করেন।
এসআইএইচ