‘মেয়র তাপস ব্যারিস্টার হয়েও পার্কের গুরুত্ব বুঝেন না’
তাপস সাহেব ব্যারিস্টার হয়েও পার্কের গুরুত্ব বুঝেন না বলে মন্তব্য করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সাবেক অধ্যাপক ও অর্থনীতিবিদ ড. আনু মুহাম্মদ।
বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিকালে পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্ক মুক্তমঞ্চে ‘ঐতিহাসিক বাহাদুর শাহ পার্ক ও পার্কের ঐতিহ্য সংরক্ষণ সংগ্রাম পরিষদ’ কর্তৃক আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘পার্ক, উন্মুক্ত স্থান, খেলার মাঠের গুরুত্ব বুঝতে অনেক বেশি শিক্ষিত হওয়ার প্রয়োজন হয় না, ব্যারিস্টার হওয়ারও প্রয়োজন হয় না। কিন্তু আমাদের দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র তাপস সাহেব ব্যারিস্টার হয়েও পার্কের গুরুত্ব বুঝেন না।’
আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘কিছু লোক উন্মুক্ত স্থান দেখলেই সেটা দখলে নিয়ে নেয়। বাণিজ্যিক স্থাপনা নির্মাণ করে। ইট-পাথরের স্থাপনা নির্মাণে মরিয়া হয়ে যায়। কিন্তু নাগরিকদের যে এসব উন্মুক্ত জায়গা-পার্কেরও দরকার আছে এটা সবাই বুঝে। কিন্তু মেয়র সাহেব এটা যেন বুঝেও বুঝেন না। ঢাকা শহরে এখন খুব বেশি উন্মুক্ত স্থান, পার্ক নেই। যেগুলো আছে সেগুলোও উন্নয়নের নামে দখলে নিয়ে ইট-পাথরের স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে। উন্নয়ন হলো নাগরিকদের জন্য খেলার মাঠ নিশ্চিত করা, পার্ক সংরক্ষণ করা, প্রয়োজনে নতুন পার্ক নির্মাণ করা, দখলকৃত উন্মুক্ত স্থান উদ্ধার করা। এগুলো দখল করে সেখানে স্থাপনা নির্মাণ উন্নয়ন নয়। যদি মানুষের শ্বাস-প্রশ্বাসের পরিবেশ না থাকে, হাঁটা চলার জায়গা না থাকে তবে সেই উন্নয়ন দিয়ে নাগরিকদের কোনো লাভ হয় না।’
বাহাদুর শাহ পার্কের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘বাহাদুর শাহ পার্কের অনেক গুরুত্ব রয়েছে। সামাজিক গুরুত্ব, পরিবেশগত গুরুত্ব, ঐতিহাসিক গুরুত্ব। এগুলো সবাইকেই খেয়াল রাখতে হবে। এই পার্কে মানুষ একটু মানসিক শান্তির জন্য শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে আসে। তাও বন্ধ করার পাঁয়তারা করা হচ্ছে। বাহাদুর শাহ পার্ক ঐতিহাসিকভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি ১৮৫৭ সালের স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক স্থান। সেই ইতিহাস সবার মাঝে তুলে না ধরে তা মুছে ফেলার চেষ্টা করা করা হচ্ছে। এটা সিটি করপোরেশনের কাজ নয়।’
দ্রুত বাণিজ্যিক স্থাপনা নির্মাণ বন্ধের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘অবিলম্বে এখান থেকে খাবারের দোকান সরাতে হবে। এখানে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ করতে হবে। এ পার্কের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে হবে এবং ছোট একটি জাদুঘর করতে হবে। সিটি করপোরেশনসহ সরকারকেও এ ব্যাপারে দায়িত্ব নিতে হবে।’
ঐতিহাসিক বাহাদুর শাহ পার্ক ও পার্কের ঐতিহ্য সংরক্ষণ সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল মান্নানের সভাপতিত্বে সদস্য সচিব আক্তারুজ্জামান খানের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ড. হারুন-অর রশিদ, আদি ঢাকা সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি মানস ঘোষ বাবুরাম, সাধারণ সম্পাদক হানিফ খান, যুব কনভেশন কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক মাসুক শাহী, জনরাষ্ট্র আন্দোলনের সদস্য সচিব কামাল হোসেন বাদল, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সাবেক সভাপতি ইকবাল কবীর, বিশিষ্ট গবেষক মাহতাব উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।
এসজি