ক্যাম্পাসে ইবি উপাচার্যের ভাইরাল অডিও মাইকে প্রচার
অডিও ফাঁসের ঘটনাকে কেন্দ্র করে তৃতীয় দিনের মতো ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালামের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ করছেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা-কর্মীরা। একই সঙ্গে উপাচার্যের 'কণ্ঠ সদৃশ' অডিও কথোপকথন প্রশাসন ভবনের সামনে মাইকে বাজিয়েছে আন্দোলনকারীরা। এই ঘটনায় উপাচার্যের নিরাপত্তার স্বার্থে প্রশাসন ভবনের সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সকালে উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভকারীদের উপাচার্যের অপসারণ চেয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায়। এছাড়া তার অপসারণের দাবিতে ব্যানার ঝুলিয়ে দিয়েছে তারা। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে ভ্যানে রাখা এক মাইকে হঠাৎ বেজে উঠে বিতর্কিত অডিওগুলো। কিছুক্ষণ পর পর মাইকে অডিওগুলো এক এক করে বাজানো হয়। তবে অডিওগুলো বাজানোর সময় আশপাশে কাউকে দেখা যায়নি।
পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদাৎ হোসেন আজাদ এসে মাইক বন্ধ করে দেন। কে এখানে মাইক রেখেছে তা জানতে চান। এসময় দিনমজুর ছাত্রলীগ নেতাদের কাছে জানতে চাইলে তারা রাখেননি বলে জানান। এসময় প্রক্টর তাদের বলেন, তোমরা যেহেতু জানো না তাহলে মাইকটি আমি থানায় দিয়ে আসি। পুলিশ বের করুক কে মাইক রেখেছে। প্রক্টরের এ কথা শুনে ১০টার দিকে ডে লেবাররা মাইকসহ ভ্যান সরিয়ে নেয়।
এ বিষয়ে আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী টিটু মিজানকে ফোন করা হলে তিনি রিসিভ করেননি। ডে লেবারদের আন্দোলনের কারণে গত কয়েক দিন ধরে কার্যালয়ে আসছেন না উপাচার্য। বুধবারও কার্যালয়ে আসেননি তিনি। বাংলোতে বসেই ক্যাম্পাসের দাপ্তরিক কাজ চালাচ্ছেন বলে জানা গেছে।
পরে দুপুর বারোটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আন্দোলনকারী নেতাদের উপাচার্যের বাংলোতে নিয়ে যান। সেখানে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষক নেতাদের সাথেও বসেছে উপাচার্য বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদকে ফোন দিলে তিনি রিসিভ করেননি।
গত বৃহস্পতিবার থেকে গত মঙ্গলবার পর্যন্ত দিনের বিভিন্ন সময় 'ফারাহ জেবিন', 'মিসেস সালাম', ও 'আল বিদা' নামের ফেসবুক আইডি থেকে অগ্রিম চাকরির প্রশ্নফাঁস, ইবি শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষপূর্ণ কথোপকথন, কয়েকটি বিভাগের নিয়োগ- বাণিজ্য সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে উপাচার্যের মোট আটটি অডিও ক্লিপ ফাঁস হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
অডিও ফাঁসের ঘটনাকে কেন্দ্র করে উপাচার্যকে দুর্নীতিবাজ আখ্যা দিয়ে গত শনিবার থেকে 'অস্থায়ী চাকরিজীবী পরিষদ' ভিসির পদত্যাগের দাবিতে কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে আন্দোলন শুরু করে। একই দাবিতে সোমবার এবং সর্বশেষ বুধবার তারা কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ করেছে।
অডিও ফাঁসের ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আন্দোলনকারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন দপ্তর ও বিভাগে দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কাজ করেন। তাদের বেশিরভাগই সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকর্মী বলে জানা গেছে। চাকরী স্থায়ীকরণের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছে তারা।
এএজেড