বেরোবিতে ১৫ বছরেও নির্মিত হয়নি স্থায়ী শহীদ মিনার
রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) প্রতিষ্ঠার ১৫ বছরেও নির্মাণ হয়নি স্থায়ী কোন শহীদ মিনার, নেই ভাষা শহীদদের স্মরণে কোনো স্থাপনা। অথচ মাতৃভাষা বাংলার জন্য যারা জীবন উৎসর্গ করেছিলেন তাদের স্মরণে দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে রয়েছে স্থায়ী শহীদ মিনার।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, ২০১১ সালে ১৪ ফেব্রুয়ারি অস্থায়ী ক্যাম্পাস থেকে স্থায়ী ক্যাম্পাসে আসার পর কাপড় দিয়ে নির্মাণ করা হয় একটি অস্থায়ী শহীদ মিনার। শহীদ মিনারটি কিছুদিন পরেই কে বা কারা আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেয়। পরে ২০১২ সালে কনক্রিট ব্যবহার করে নির্মাণ করা হয় আরেকটি অস্থায়ী শহীদ মিনার। শহীদ মিনারটি সর্বশেষ ২০১৪ সালের ২৬ মার্চ (স্বাধীনতা দিবস) পর্যন্ত ব্যবহৃত হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় সড়কের কোল ঘেঁষে নির্মিত অস্থায়ী শহীদ মিনারটি পড়ে আছে অযত্নে-অবহেলায়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নজরদারির অভাবে শহীদদের স্মৃতি বিজড়িত এই স্থাপনায় শিক্ষার্থী ও বহিরাগতদের আড্ডার আসরে প্রতিনিয়তই ঘটছে দায়িত্বহীন কাণ্ড।
সরজমিনে দেখা গেছে, প্রতিদিন বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বহিরাগতরা জুতা পায়ে শহীদ মিনারের বেদিতে কিংবা সিঁড়িতে বসে আড্ডা দিচ্ছেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকেও কোনো নেমপ্লেট দেওয়া নেই যে- জুতাসহ বেদিতে উঠা যাবে না। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নজরদারির অভাব ও উদাসীনতাকেই দায়ী করছেন অনেকে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী অপু বলেন, আমাদের দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি করে স্থায়ী শহিদ মিনার আছে, আমরাও চাই অতিদ্রুত আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি স্থায়ী শহিদ মিনার নির্মাণ করা হক।
বেরোবির ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু রায়হান বরাধ বলেন, শহিদ মিনারে প্রায় সময়ই কিছু লোক জুতা পায়ে দিয়ে উঠে বসে থাকে, আড্ডা দেয়। আমি কাউকে দেখলে জুতা পায়ে না দিয়ে উঠার জন্য অনুরোধ করি। ভালো একটা শহিদ মিনার থাকলে কেউ এই ভাবে অযত্নে, আবহলা করতো না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাতিহুল ইসলাম শোভন, ঢাকা প্রকাশে জানায়, প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে একটি স্থায়ী শহিদ আছে, কিন্তু আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ী শহিদ মিনার না থাকার কারণে মাতৃভাষা দিবসে স্থায়ী শহিদ মিনারে ফুল দিয়ে শহিদের সম্মান জানাতে পারি না। আমি প্রশাসনের নিকট আকুল আবেদন জানাচ্ছি অভিলম্বে ক্যাম্পাসে একটি স্থায়ী শহিদ মিনার নির্মাণ করার জন্য ও সঠিক পরিচর্যার জন্য।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শফিক আশরাফ বলেন, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি স্বাধীনতা স্মারক একটি শহীদ দুইটাই থাকে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন যেহেতু শিক্ষাক, শিক্ষার্থী ও পরিবেশবান্ধব সেহেতু আশা করি, প্রশাসন অতিদ্রুত একটা উদ্যোগ নিবে।
এই বিষয়ে আরো জানতে চাওয়া হল রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শরিফুল ইসলাম বলেন, প্রশাসন হয়তো চাইতেছে এক শহীদ মিনার তৈরি হক। আমি কোন নেতিবাচক কথা বলতে চাই না, আমি চাই আমাদের ক্যাম্পাসে একটা স্থায়ী শহিদ মিনার তৈরি করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) মোঃ শাহরিয়ার আকিফ ঢাকা প্রকাশকে বলেন - ইউজিসিকে জানানো হয়েছে তারা এখনো কোন বাজেট বরাদ্দ দেয়নি। বাজেট বরাদ্দ করা হলে আমরা স্থায়ী একটা শহিদ মিনার তৈরি করবো।
এএজেড