বাবা-ছেলেকে পিটিয়ে টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) গাড়ি দুর্ঘটনার জেরে ক্যান্সারে আক্রান্ত ছেলে ও তার বাবাকে পিটিয়ে টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ঢাবি ছাত্রলীগের একদল নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে ঢাবির শহীদুল্লাহ হলের মূল ফটকের সামনের সড়কে ঘটা এ ঘটনায় বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বিকালে শাহবাগ থানায় অভিযোগপত্র জমা দেন ভুক্তভোগী সেলিম মোল্লা।
অভিযুক্তরা হলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের উপ-মানবসম্পদ উন্নয়ন সম্পাদক নাজমুল হাসান রুপু, ফজলুল হক শাখা ছাত্রলীগের কর্মী মো. তারেক। এ ছাড়া অভিযোগপত্রে অজ্ঞাতনামা আরও ১০-১৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অভিযুক্তরা সবাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল করিম শয়নের অনুসারী হিসেবে পরিচিত বলে জানা গেছে।
অভিযোগপত্রে ভুক্তভোগী বলেন, মঙ্গলবার রাতে আমি, আমার স্ত্রী খাদিজা আক্তার এবং ছেলে ক্যানসারের রোগী রুবায়েত হাসান সায়েমসহ নিজস্ব প্রাইভেটকারে করে বাড়িতে ফিরছিলাম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হলের সামনে পৌঁছালে আমি গাড়িটি ব্রেক ফেইল করে। পরে গাড়িটির গতি কমিয়ে রাস্তার পার্শ্বে আইল্যান্ডে ধাক্কা দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করি। তখন শহীদুল্লাহ হলের একদল শিক্ষার্থী প্রাইভেট কারসহ আমাদের সবাইকে আটক করে আমাকে ও আমার স্ত্রী সন্তানদেরকে গাড়ি থেকে নামিয়ে হত্যার উদ্দেশে শরীরের বিভিন্ন স্থানে রড দিয়ে পিটিয়ে আঘাত করে এবং কিল-ঘুষি মেরে মারাত্মক জখম করে। ১নং আসামি আমাকে হত্যার উদ্দেশে আমার গলা চেপে ধরে শ্বাসরোধ করার চেষ্টা করে। ২নং আসামি হাতে হেলমেট নিয়ে আমার মাথায় সজোরে আঘাত করে। এসময় তারা আমার কাছ থেকে মোট ৩২ হাজার টাকা নিয়ে যায়। এমনকি এই বিষয়ে মামলা করলে আমাকে প্রাণে হত্যার হুমকিও দেয়।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে নাজমুল হাসান রুপু বলেন, আমরা কেন টাকা ছিনতাই করতে যাব। তার গাড়ি দুটি রিকশাকে মেরে দেয়। রিকশায় থাকা যাত্রীদের মধ্যে একজনের মাথা ফেটে যায়। দুটি রিকশা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ অবস্থায় তারা চলে যেতে চাইলে হলের ছোট ভাইয়েরা তাদেরকে মারধর করে। পরে আহত ব্যক্তিকে আমরা মেডিকেলে নেই এবং আমরা গিয়ে মীমাংসা করে জরিমানা নিয়ে দিয়েছি। এখন শুনছি আমাদের নামে থানায় অভিযোগ দিয়েছে। এভাবে হলে তো মানুষের উপকারও করা যাবে না।
এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল করিম শয়ন বলেন, নাজমুল হাসান রুপুকে আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনিই না। সভাপতি বলে অনেকেই ছবি তুলে আমার সঙ্গে। তাই বলে প্রত্যেকেই আমার অনুসারী না। যারা এসব চুরি ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স দেখানো হবে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও হল প্রশাসনকে বলব যেন দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়।
এদিকে শাহবাগ থানার ওসি (তদন্ত) মাহফুজুর রহমান ভুঁইয়া বলেন, আমরা অভিযোগপত্র পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তারা যেই হোক না কেন আইনের উর্ধ্বে কেউ নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এবং ওসির সঙ্গে কথা বলার পর আমরা এ ঘটনায় মামলা নিব।
এসজি
