ঢাবিতে হল প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হলের প্রাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দায়িত্বের অবহেলা, শিক্ষার্থী হয়রানিসহ নানা অভিযোগ এনে তার পদত্যাগ দাবি করেছেন হলটির আবাসিক ছাত্রীরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সঙ্গে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দল বৈঠক করেন। প্রায় দুই ঘন্টার বৈঠক শেষে শিক্ষার্থীরা হলে ফিরে যান।
বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ৯টা থেকে শুরু করে রাত ১১টা পর্যন্ত উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বেশ কয়েকবছর যাবত হলের নানা সমস্যা তারা হল প্রাধ্যক্ষকে জানিয়ে আসলেও তিনি কোনো সমাধান করেন নি। এছাড়া সরস্বতী পূজা উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েদের চারটি হল সাজানো হলেও কুয়েত মৈত্রী হল সাজানো হয়নি। তৃতীয়, চতুর্থ বর্ষে উঠেও সিট না পাওয়া, ক্রিকেট টুর্নামেন্টে নিম্নমানের জুতা দেওয়া, বার্ষিক ক্রিড়া প্রতিযোগিতায় সবাইকে টি-শার্ট ও খাবার না দেওয়া এবং নিম্নমানের খাবার দেওয়া, ক্যান্টিনের খাবারের নিম্নমান ও উচ্চ দাম ; এগুলোর পেছনে প্রাধ্যক্ষের দায়-সারা মনোভাব রয়েছে।
শিক্ষার্থীরা আরও জানান, গত ২৪ জানুয়ারি হলের একটি রুমে যখন আগুন লাগে তখনও হল প্রাধ্যক্ষ তার নিজের রুম থেকে বের হননি। বের হলেও তিনি অভিভাবকসুলভ আচরণ করেননি। এ ছাড়া শিক্ষার্থীরা তাদের বিভিন্ন সমস্যার কথা হল প্রাধ্যক্ষকে জানালে হল প্রাধ্যক্ষ এগুলোর তোয়াক্কা না করে উল্টো শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। এমনকি প্রাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নিয়ে কেউ ফেসবুকে পোস্ট করলে তাকে একাকী ডেকে নিয়ে শাসানো হয়।
এদিকে, শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচির খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক নিজামুল হক ভূঁইয়াসহ আরও কয়েকজন। এরপরই সেখানে আসেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত।
অবস্থানের পরে রাত সোয়া ১১টায় শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি দল উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলতে যান। সেখান থেকে প্রায় ১ ঘণ্টা বৈঠক শেষে বের হয়েই অবস্থান থেকে সরে গিয়ে হলের দিকে হেঁটে চলে যান শিক্ষার্থীরা। বৈঠকে কী কথা হয়েছে জানতে চাইলেও বিষয়টি নিয়ে কোনো বক্তব্য দেননি শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, ছাত্রীরা তাদের দাবি দাওয়া উপাচার্যকে বলেছে। উপাচার্য তাদের কথা শুনেছেন এবং আশ্বস্ত করেছেন। ছাত্রীরাও উপাচার্যের প্রতি আস্থা রেখেছে এবং হলে ফিরে গেছে।
ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, শিক্ষার্থীদের কথাগুলো শুনেছি, তাদের কথাগুলো যৌক্তিক মনে হয়েছে। সেগুলোর সমাধান কোনো কঠিন বিষয় নয়। কিছু সমস্যা হলে রয়েছে। কিছু বিষয় আমলে নিলে, আন্তরিক হলে সমস্যার সমাধান করা যায় ৷ আমাদের মেয়েরা অল্পতে সন্তুষ্ট হয়। আমাদের সীমাবদ্ধতা, প্রতিকূলতাগুলো তারা বোঝে।
/এএস