ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়লেও রাবিতে নেই ব্যবস্থা!
সারাদেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়লেও প্রতিরোধের কোন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে মশক নিধন কিংবা মশার উপদ্রব কমানোর সব কার্যক্রমই যেন হিমঘরে। মশক নিধনে ব্যবস্থা না নেয়ায় ক্যাম্পাসে মশার উপদ্রব বেড়েছে আগের তুলনায় কয়েকগুণ। ফলে ডেঙ্গু ঝুঁকিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
ডেঙ্গুকে দৃশ্যমান শত্রু হিসেবে উল্লেখ করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, ডেঙ্গু মশাবাহিত একটি রোগ। ডেঙ্গু থেকে রক্ষা পেতে হলে এডিস মশা নিধন করতে হবে। মশার উৎপত্তিস্থল ধ্বংস করতে হবে। এক্ষেত্রে অবহেলা করা হলে সামনে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হবে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে ডেঙ্গু প্রতিরোধে রাবি ক্যাম্পাসে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে দেখা যায় নি।
প্রতিটি আবাসিক হলের পড়ার টেবিল থেকে শুরু করে রিডিংরুম, ডাইনিং, ঘুমানোর জায়গা, হোটেল- রেস্তোরা, শ্রেণিকক্ষ, খেলার মাঠ সর্বত্র চলছে মশার রাজত্ব। এ থেকে মশাবাহিত রোগ ছড়ানোর প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এসব ঝুঁকি মাথায় নিয়ে বাধ্য হয়েই ক্যাম্পাসে বিচরণ করতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ক্যাম্পাস ও আবাসিক হল সমূহের আশপাশে থাকা ড্রেন, ডোবা, ঝোঁপঝাড় নিয়মিত পরিষ্কার না করা ও যত্রতত্র ময়লা আবর্জনার স্তুপ থাকার কারনে ক্যাম্পাসে মশার উপদ্রব বেড়েই চলেছে। বিকেলের পর থেকে আবাসিক হল, একাডেমিক ভবনসহ ক্যাম্পাসের খোলা জায়গাগুলোয় মশার উপদ্রবে টিকতে পারছেন না শিক্ষার্থীরা। এতে শিক্ষার পরিবেশ বিঘ্নিত হওয়ার পাশাপাশি ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা করছেন শিক্ষার্থীরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় একাডেমিক ভবন ও আবাসিক হলগুলোর আশপাশের ডোবা-নালা, ঝোড়-জঙ্গল, নর্দমার পচা পানি ও ড্রেনগুলো অব্যবস্থাপনার মধ্যে রয়েছে। এগুলো নিয়মিত পরিষ্কার না করার কারণে খুব সহজেই মশা বংশ বিস্তার করছে। দেখা মিলছে মশার লার্ভার ঝাঁক।
এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ মখদুম হলের আবাসিক শিক্ষার্থী আশিক আলী বলেন, ইতোমধ্যে আমরা দেখেছি সারাদেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে গেছে। প্রতিদিন শত শত মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছে এমনকি মারাও যাচ্ছে। ডেঙ্গুর ভয়াবহ থেকে বাঁচতে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। তবে আমাদের ক্যাম্পাসে এখনো ডেঙ্গু প্রতিরোধে তেমন কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। অপরিস্কার ডাস্টবিন, ড্রেন, যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা যা থেকে ডেঙ্গু মশা জন্মাতে পারে। তাই ডেঙ্গুর প্রকোপ থেকে আমাদের মুক্ত রাখতে নিয়মিত ক্যাম্পাসে মশা নিধনের জন্য কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
সৈয়দ আমীর আলী হলের আবাসিক শিক্ষার্থী রাকিব হাসান বলেন, আমাদের হলে মশার উপদ্রব এত বেড়েছে যে, কোথাও দাড়িয়ে বা বসে কথা বলার মতো পরিস্থিতি নেই। প্রতিদিন মশার কামড় সহ্য করতে হচ্ছে। বিকেল হয়ে সন্ধ্যা নামার আগেই মশার প্রকোপ বেড়ে যায়। যার ফলে পড়াশোনাসহ অন্যান্য কাজ করতে পারছি না। এর ফলে মশাবাহিত বিভিন্ন রোগের আশঙ্কায় আছি।
এবিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ প্রশাসক অধ্যাপক প্রদীপ কুমার পান্ডে বলেন, আমাদের সন্তান সমতুল্য শিক্ষার্থীরা যাতে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত না হয় সে বিষয়ে আমরা যথেষ্ট সচেতন আছি। আমরা ইতোমধ্যে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের সাথে মশক নিধনের ঔষধ সরবরাহের জন্য কথা বলেছি। যত দ্রুত সম্ভব মশক নিধনের জন্য অভিযান শুরু হবে।
এএজেড