শীতের পিঠায় জমে উঠেছে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের আড্ডা
শীত আর পিঠা যেন একে-অপরের পরিপূরক। শীতকাল আসলেই বাহারি রঙের পিঠা বিক্রির ধুম বেড়ে যায়। ক্যালেন্ডারের পাতায় এখনও শীতকাল না আসলেও প্রকৃতিতে বইতে শুরু করেছে শীতের আমেজ। শীতের আমেজ আসতে না আসতেই জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে বসেছে মৌসুমি পিঠার দোকান। আর এসব দোকানগুলো ঘিরে জমে উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের আড্ডা। সকাল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামার সাথে সাথেই এই দোকানগুলো চালু হয়। দোকানের আশপাশে বসে ছোট ছোট আড্ডার আসর।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ম ও ২য় গেট সংলগ্ন রাস্তার দুই পাশে ছোট ছোট পিঠার দোকান বসলেও ১ম গেটের পিঠার দোকানগুলোতে সবচেয়ে বেশি পিঠা বিক্রি হচ্ছে। অনেকগুলো চুলায় একসঙ্গে পিঠা তৈরি হচ্ছে। আতপ চালের আটা দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে চিতই পিঠা আর সেদ্ধ চাল দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে ভাপা পিঠা। আর এই পিঠা তৈরির দোকানগুলোতে কারিগর হিসেবে নারীদেরকেই বেশি দেখা যায়। গরম গরম পিঠা শিক্ষার্থীদের আড্ডার আসরে পৌঁছে দিচ্ছেন দোকানের কর্মচারীরা। গরম পিঠার সঙ্গে নানা রকম ভর্তায় আড্ডা যেন আরও জমে উঠেছে।পিঠার আড্ডায় কেউবা প্রিয়তমার কাঁধে মাথা রেখে করছে আলাপন আবার কেউবা বন্ধুদের সঙ্গে মেতে উঠেছে গল্প আড্ডায়। কিছু দোকানে বসার ব্যবস্থা না থাকলে পিঠাপ্রেমীরা দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছেন পিঠার জন্য। কেউ পিঠা খাচ্ছেন আবার কেউবা নিয়ে যাচ্ছেন।
পিঠা খেতে আসা আইন ও বিচার বিভাগের শিক্ষার্থী আহসান হাবীব বলেন, ‘এখানকার পিঠা খেতে অসাধারণ। তাই বন্ধুদের সঙ্গে পিঠা খেতে এসেছি। আর সঙ্গে চলছে আড্ডা। আমরা আমাদের পরিবারের সঙ্গেও পিঠা খেয়ে থাকি। কিন্তু সেখানকার মজা আর এখানকার পিঠা খাওয়ার মজা আলাদা।’
সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী কামরুল হাসান সজিব বলেন, ‘বন্ধুদের সাথে বসে পিঠা খাওয়ার মজাই আলাদা। এই শীতের শীতল বাতাসে বসে এক সাথে বসে পিঠা খাচ্ছি, গান করছি, আড্ডা দিচ্ছি অন্যরকম এক ভালোলাগা কাজ করছে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম গেটে প্রতি বছর পিঠা বিক্রি করেন হালিমা বেগম। তিনি ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ‘প্রতিদিন বিকাল ৫টা থেকেই আমাদের পিঠা বানানোর প্রস্তুতি শুরু হয়। এই সময়ের মধ্যে প্রতিদিন ভাপা পিঠার জন্য ১৫ কেজি এবং চিতই পিঠার জন্য ২০-২৫ কেজি চাল লাগে। প্রতিদিন প্রায় ১৫০০ থেকে ২ হাজার টাকা বিক্রি হয়। শীত আরো বাড়লে বিক্রি বাড়বে ‘
পিঠা খেতে খেতে কথা হয় বিক্রেতা রুবেল মিয়ার সাথে। তিনি বলেন, ‘আমরা বিকাল থেকে প্রতিদিন রাত ৯টা পর্যন্ত এখানে পিঠা বিক্রি করি। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বাহির থেকে অনেকেই এখানে পিঠা খেতে আসেন। প্রতিদিন ২ হাজার টাকার উপরে বিক্রি হয়। প্রতিটি চিতই পিঠা ১০ টাকা এবং প্রতিটি ভাপা পিঠা ১৫ টাকায় বিক্রি করা হয়। সব কিছুর দাম বাড়লেও পিঠার দাম আগের মতই আছে। সব মিলে দিনে ৩০০-৪০০ টাকার মতো লাভ থাকে।’