রাবিতে হলের রেলিং থেকে পড়ে শিক্ষার্থীর মৃত্যু
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ হবিবুর রহমান হলের তৃতীয় তলার রেলিং থেকে পড়ে এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার রাত ৮ টার দিকে এ ঘটনার পর তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। রাত ৯টার দিকে হাসপাতালের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
তবে এ ঘটনায় চিকিৎসকদের অবহেলার অভিযোগ তুলে হাসপাতালে ভাঙচুর চালিয়েছেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। পরে হাসপাতালের ভেতরে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন শুরু করে তারা। এসময় শিক্ষার্থী ও পুলিশের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
নিহত এমজিএম শাহরিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি ওই হলের ৩৫৪ নম্বর কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি দিনাজপুরের বিরল উপজেলায়।
হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের ভাষ্য, রাত ৮টার দিকে নিচে কিছু পড়ে যাওয়ার শব্দ পায় তারা। ঘটনাস্থলে গিয়ে শাহরিয়ারকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. আসাবুক হক। তিনি বলেন, যতটুকু জেনেছি, নিহত শিক্ষার্থী হলের তৃতীয়তলার রেলিংয়ে বসে ছিলেন। একপর্যায়ে অন্যমনস্ক হয়ে নিচে কংক্রিটের ঢালাইয়ের ওপর পড়ে যান। এতে তার নাক মুখ দিয়ে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে নিলেও তাকে বাঁচানো যায়নি।
হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, 'ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। তবে এটি হত্যা, আত্মহত্যা নাকি দুর্ঘটনা আমরা এখনো নিশ্চিত না। সিসিটিভির ফুটেজ দেখার পরে বিষয়টি জানতে পারব।'
এ প্রতিবেদন লেখা অবধি (রাত সাড়ে ১০টা) হাসপাতালের সামনে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন চলমান রেখেছে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। এতে অসুবিধায় পড়েছে হাসপাতালে আসা রোগী ও তাদের স্বজনরা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ভাষ্য, গুরুতর অবস্থায় শাহরিয়ারকে হাসপাতালে নেওয়া হলে দায়িত্বরতরা তাদের কাছে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপউপাচার্যের স্বাক্ষরসহ বিভিন্ন কাগজপত্র চেয়ে বসে। এ ছাড়া তাৎক্ষণিক চিকিৎসা শুরু না করে বিভিন্ন নিয়ম মানতে বাধ্য করা হয়। এতে করে কালক্ষেপণ হওয়ায় ওই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে।
বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা, ৮ নম্বর ওয়ার্ডে দায়িত্বরতদের পরিচয় প্রকাশ এবং তদন্তের নামে টালবাহানা না করে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানিয়েছেন। যদিও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অসহায় হয়ে পড়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীরা যাতে হাসপাতালে কোনো ধরনের ভাঙচুর বা ক্ষতি না করতে পারে, আমরা সেদিকে নজর রাখছি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আমরাও সর্বাত্মক চেষ্টা করছি।
এসএন