ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শোক দিবস পালিত
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শোক দিবস আজ (১৫ অক্টোবর)। দিনব্যাপী নানা কর্মসূচির মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে দিবসটি পালিত হয়েছে।
শনিবার (১৫ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক-কর্মকর্তা, কর্মচারিরা সকাল সাড়ে ৭টায় জগন্নাথ হল স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপরে জগন্নাথ হলের অক্টোবর স্মৃতি ভবনস্থ টিভি কক্ষে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
রেজিস্টার প্রবীর কুমার সরকার অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান নিহতদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, ‘১৫ অক্টোবর’-এর মর্মান্তিক ঘটনা থেকে আমাদের শিক্ষা গ্রহণ করে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সবার সুরক্ষায় সংশ্লিষ্টদের সচেতন ও সরিলা থাকতে হবে। এই ধরনের দুঃখজনক ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সবাইকে দায়িত্বশীল জায়গা থেকে কাজ করতে হবে। অসাম্প্রদায়িক ও মানবিক মূল্যবোধ এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ও ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি ধারণ করে সমন্বিতভাবে কাজ করার জন্য উপাচার্য সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানান।
আলোচনা সভায় কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক ড. সাবিতা রিজওয়ানা রহমান ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. আবদুর রহিম, জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মিহির লাল সাহা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব মোল্লা মো. আবু কাওছার হলের ছাত্র নেতারা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন, তৃতীয় শ্রেণি কর্মচারী সমিতি, কারিগরী কর্মচারী সমিতি ও চতুর্থ শ্রেণি কর্মচারী ইউনিয়নের নেতারা বক্তব্য রাখেন।
এ সময় বিভিন্ন অনুষদের ডিন, হলের প্রাধ্যক্ষ, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও অ্যালামনাইরা উপস্থিত ছিলেন।
দিবসটি পালন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব হল, হোস্টেল ও প্রধান প্রধান ভবনে কালো পতাকা উত্তোলন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা অর্ধনমিত রাখা ও কালো ব্যাজ ধারণ করা হয়। নিহতদের আত্মার শান্তি কামনায় জগন্নাথ হল প্রাঙ্গণে হিন্দু বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের প্রার্থনা সভা অনুষ্ঠিত হয় এবং বাদ আছর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদ মসজিদুল জামিআসহ সব হল মসজিদে নিহতদের আত্মার শাস্তি কামনা করে মোনাজাত করা হবে। এ ছাড়া, নিহতদের তৈলচিত্র ও তৎসম্পর্কিত দ্রব্যাদি প্রদর্শন করা হয়।
উল্লেখ্য, ১৯৮৫ সালের ১৫ অক্টোবর রাত তখন পৌনে নয়টা হলের ১৫০ বছরের পুরনো অনুদ্বৈপায়ন নামের ভবনের দোতলার টিভি কক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশনে (বিটিভি) সম্প্রচার হওয়া মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিতে নির্মিত জনপ্রিয় ধারাবাহিক নাটক ‘শুকতারা’ দেখছিলেন ২৫০-৩০০ জনের মত। হঠাৎ বিকট শব্দে ছাদের মাঝখানের অংশ ভেঙে পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে ধুলায় অন্ধকার হয়ে যায় পুরো কক্ষ।
ঘটনাস্থলেই মারা যান ৩৪ জন। পরে আরও ছয়জনের মৃত্যু হয়। নিহতদের মধ্যে ২৬ জন ছিলেন ছাত্র, ১৪ জন ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী ও অতিথি। আহত হন শতাধিক। কোন কোন পত্রিকায় আহতের সংখ্যা ৪০০ প্রকাশ করে। আহত হয় ৩০০ উপর। আহতদের অনেকেই পঙ্গু হয়ে যান চিরতরে।
আরএ/