তোপের মুখে জবি ছাত্রীহল খোলা রাখার সিদ্ধান্ত
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল পূজার ছুটিতে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। প্রশাসন এটা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হলে প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে পুনরায় হল খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আজ শুক্রবার (২৩ আগস্ট) প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. শামীমা বেগমের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানানো হয়।
এর আগে আরেক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে পূজার ছুটিতে হল বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয় কর্তৃপক্ষ। এতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এসময় শিক্ষার্থীরা টিউশনসহ বিভিন্ন কারণে বাড়ি যেতে ইচ্ছুক না হওয়ায় থাকার আবেদন জানান। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকে হলে থাকা আবাসিক শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে শিক্ষার্থী-শিক্ষকদের মাঝে সমালোচনার ঝড় ওঠে। পূজার ছুটিতে আবাসিক ছাত্রীহলের শিক্ষার্থীরা কোথায় অবস্থান করবে সেটা নিয়েও নানা প্রশ্ন ওঠে।
এ ছাড়া হল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় ভাড়া না থাকা শিক্ষার্থীরা বাড়িতে কীভাবে যাবে এটা নিয়েও ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করে কয়েকজন শিক্ষার্থী। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শিক্ষকরাও বিরূপ প্রতিক্রিয়া জানান।
কলা অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক চঞ্চল বোস ফেসবুকে মন্তব্যের মাধ্যমে জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের হল ছুটিতে বন্ধ থাকে বলে কখনো শুনিনি। ঢাবিতে ৬ বছরের বেশি মুহসীন হলে ছিলাম, এক মুহূর্তের জন্যও কোনো হল বন্ধ থাকার কথা কেউ কল্পনাও করতে পারেনি। বরং ছুটিতে হলে থেকেই আমরা বেশি পড়াশুনা করেছি, লাইব্রেরি ওয়ার্ক করেছি। অনেক ছেলেমেয়ে টিউশনি, চাকরি, পত্রিকা অফিসে কাজ করত। এরকম অদ্ভুত কথা তো শুনিনি। এদিকে দেখছি "মুজিব" আবার "মুবিজ" হয়ে গেছে। এসব কর্মকাণ্ড বিশ্ববিদ্যালয় কনসেপ্টের সঙ্গে একেবারেই বেমানান।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষার্থীরা জানান, 'আমরা ঢাকায় টিউশন করানোর জন্য এবার বাসায় যাওয়ার কোনো পরিকল্পনা ছিল না। হঠাৎ হল বন্ধের নোটিশ দেখে বেশ বিড়ম্বনার মাঝে পড়ে গিয়েছিলাম। দেশের অন্য কোনো হল এভাবে ছুটিতে বন্ধ রাখে বলে জানা নেই। এ ছাড়া বন্ধের পরে আমাদের পরীক্ষাও ছিল। তবে হল কর্তৃপক্ষ তাদের সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের কারণে খুশি হয়েছি।'
শিক্ষার্থীরা আরও জানান, 'পূজার ছুটি যদি বৈষম্য সৃষ্টি করে তাহলে আমরা ঈদেও হল বন্ধ হোক সেটা চাই না। পূজার সময় হল বন্ধ রাখার ঘোষণা কী কারণে দেওয়া হলো তা জানা নেই। কোনো বিবেকবান মানুষ এমন সিদ্ধান্ত জানাতে পারে না। অনেকের টিউশন আছে, ছুটির পরই পরীক্ষা। তারা বাড়ি যেতে চায় না। হল বন্ধ হয়ে গেলে তারা থাকবে কোথায়?'
প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. শামীমা বেগম জানান, বন্ধের শেষে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর পর কিছু বিভাগে ছাত্রীদের পরীক্ষা আছে। তাদের কথা বিবেচনা করে প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে হল খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এসএন