ধ্বনি’র গুণীজন সম্মাননা পেলেন সেলিনা হোসেন

লেখা ও ছবি : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি।
স্বাধীনতা ও একুশে পদক পাওয়া বাংলা একাডেমির সভাপতি বরেণ্য সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন আজ বৃহস্পতিবার ৮ সেপ্টেম্বর এসেছেন বাংলাদেশের একমাত্র আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় জাহাঙ্গীরনগরে।
তাদের একমাত্র আবৃত্তি সংগঠন ধ্বনি’র ২৫ বছর বা ‘রজতজয়ন্তী’ উৎসবে তিনি হয়েছেন প্রধান অতিথি।
সেলিনা হোসেনকে তারা ‘ধ্বনি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যলয় রজতজয়ন্তীর গুণীজন সম্মাননা’ প্রদান করেছেন।
ধ্বনির মুক্তমঞ্চে আয়োজিত অনুষ্ঠানে শেষদিনের আলোচনায় সভাপতি হয়েছেন অন্যতম উপদেষ্টা ও ইংরেজির অধ্যাপক ড. আহমেদ রেজা।
আলোচনা করেছেন আরেক উপদেষ্টা ও দর্শনের সভাপতি অধ্যাপক ড. আনাউরুল্লা ভূঁইয়া ও দর্শনের অধ্যাপক, লেখক ড. রায়হান রাইন।
ধ্বনির রজতজয়ন্তী পালন শুরু হয়েছে ৩ সেপ্টেম্বর শনিবার। তাদের ২৫ বছরের বিপুল আয়োজনের শ্লোগান হলো ‘প্রশ্ন তুলুক মুক্তধ্বনি, ঘুচুক আঁধার কালের ফণী’।
র্যালি, সাবেক ও বর্তমানদের মিলনমেলা, আবৃত্তি উৎসব এবং গুণীজন সম্মান প্রদান করেছেন তারা।
আগামীকাল শুক্রবার ৯ সেপ্টেম্বর ‘প্রাক্তণীদের পূর্ণমিলনী’ করবে ধ্বনি।
বরেণ্য লেখক সেলিনা হোসেন তাকে আমন্ত্রণ ও সম্মান প্রদর্শন করায় ধ্বনিকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তিনি তাদের সামনে অনুপ্রেরণার উৎস হয়েছেন। তিনি তার জীবনের গল্প বলেছেন, ‘আমি আমার জীবনে বাবাকে আদর্শ হিসেবে দেখি। আমার বাবা একজন অসম্ভব মানবপ্রেমিক ছিলেন। তিনি সর্বশ্রেণী ও পেশার মানুষকে এক দৃষ্টিতে দেখতেন। আমিও মানবপ্রেমের বোধ অর্জন করতে পেরেছি। সাহিত্যের ক্ষেত্রেও এই অর্জন অসামান্য। ফলে মানুষকে সবসময় মানবিক দর্শন বোধ থেকে দেখতে হয়।’
সেলিনা হোসেন বলেছেন, ‘আমার শৈশব-কৈশোর কেটেছে বগুড়ার করতোয়া নদীর তীরে। তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আমাকে শিখিয়েছে কীভাবে দেশ ও মানুষকে ভালবাসতে হয়। সেই পরিবেশ আমাকে মানবিক দর্শন বুঝতে শিখিয়েছে।’
সেলিনা হোসেন জানিয়েছেন, ‘ছোট, বড় মিলিয়ে আমি আজ পর্যন্ত ১শ ২৫টি বই লিখেছি। আমার লেখাগুলো দেশে ও পশ্চিমবঙ্গের অন্তত ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠ্য। বাংলাদেশে আমার রচনার উপর ভিত্তি করে ১৩টি পিএইচডি প্রদান করা হয়েছে।’
তিনি তরুণ-তরুণীদের জানিয়েছেন, ‘আমার লেখাগুলো তরুণদের কাছে সবসময় যাচ্ছে। একজীবনে এইসবই পাওয়া।’
সেলিনা হোসেন জানিয়েছেন, ‘শুধু বই পড়ে নয়, মানবিক দর্শন থেকেও শিক্ষাকে প্রসারিত করতে হবে। প্রতিটি মানুষের প্রজ্ঞা থাকা উচিত। মানবিক সমাজ গড়ে তোলার জন্য কাজ করা দরকার। সমাজের সবার জন্য একটি দৃষ্টান্ত হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করা প্রয়োজন। তাতে সামাজিক মূল্যবোধ সঠিক থাকবে।’
তাকে উত্তরীয় প্রদান করেছেন ধ্বনির উপদেষ্টা ও ইংরেজির অধ্যাপক ড. আহমেদ রেজা।
ওএফএস।
