‘আইইআর, রাবি’ পালন করছে ‘আর্ন্তজাতিক স্বাক্ষরতা দিবস’
লেখা ও ছবি : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি।
আজ ‘ইউনেসকো’ ঘোষিত ‘আর্ন্তজাতিক স্বাক্ষরতা দিবস’। সারা বিশ্বের দেশগুলোর মতো আমাদের শিক্ষায় বিশ্বে অনন্য বাংলাদেশও নানা আয়োজন, সেমিনার, সিম্পোজিয়ামে দিবসটি পালন করছে।
যারা অভাব, অনটন, নানা দূর্ঘটনা ও প্রয়োজনের বলি হয়ে পড়ালেখা করতে পারেন না, এমনকি নাম, দস্তখত, নামতা, বাংলা ও ইংরেজি এবং আরবি পড়তে পারেন না তাদের স্বাক্ষরতাহীন মানুষ বলা হয়। নানা বয়সের এই মানুষদের জন্যই আন্তর্জাতিক স্বাক্ষরতা কমসূচি গ্রহণ করা হয়, সেভ দি চিলড্রেন, রুম টু রিড, কারিতাস, ব্র্যাকসহ বিশ্বখ্যাত এনজিও এবং বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, মাদ্রাসাসহ নানা ধরণের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র, ছাত্রী এবং শিক্ষকদের উদ্যোগে শিশুদেরও বর্ণমালা শেখানো কর্মসূচিতে। বাংলাদেশে বিনা পয়সায় এই কার্যক্রম পরিচালনা করে এমন অসংখ্য খ্যাতনামা ও অখ্যাত ব্যক্তি রয়েছেন। তরুণদের এই কার্যক্রম পরিচালনা সংগঠন হলো জাগো, ডু সামথিং ফাউন্ডেশন, অল ফর ওয়ান, অভিযাত্রিক ইত্যাদি। আরো অনেক আছে।
এবারের দিবসের প্রতিপাদ্য হলো ‘স্বাক্ষরতা শিখন ক্ষেত্রের প্রসার’।
বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ সরকারী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইআর) দিবসটি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে পালন করছে।
ঢাকাপ্রকাশ ২৪.কমের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি আসাদুল্লাহ গালিব জানিয়েছেন, সকাল থেকে দিবসটি পালন শুরু করে আইইআর।
ছাত্র, ছাত্রীরা সকাল থেকে সেজে, গুজে তাদের প্রিয় প্রতিষ্ঠানে এসেছেন। তাদের শিক্ষকরাও ছিলেন উৎসবের আমেজে।
ইনস্টিটিউট থেকে তারা আর্ন্তজাতিক স্বাক্ষরতা দিবসের আয়োজন শুরু করেন।
৫৫তম স্বাক্ষরতা দিবসের র্যালি এরপর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ সিনেট ভবন, প্রশাসনিক ভবন, প্যারিস রোডসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান সড়কগুলো ঘুরে আসে।
এরপর আলোচনা সভা। সেখানে ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে আইইআর, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের অধ্যাপকরা বলেছেন, আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবসের গুরুত্ব, তাৎপর্য ও প্রাসঙ্গিকতা।
তারা জানিয়েছেন, ‘সকল শিক্ষার প্রাথমিক ভিত্তিই হলো সাক্ষরতা। প্রাথমিক শিক্ষা থেকেই স্বাক্ষরতার শুরু হয়। তবে পৃথিবীতে দক্ষিণ-এশিয়া, সাব-সাহারান, ইউরোপের অনুন্নত অঞ্চলসহ সবখানে বিদ্যালয় থেকে অভাব ও অনটনে পড়ালেখা করতে না পারা বিপুল পরিমাণ মানুষ আছেন। তাদের যেমন স্বাক্ষরতার প্রয়োজন, তেমনি শিশু ছাত্র, ছাত্রী ঝরে পড়া রোধ ও ভবিষ্যতের বিদ্যালয়গুলোতে ডিজিটালাইজড এডুকেশন ব্যবস্থা চালু করতে হবে। উন্নত, মানবিক ও শিক্ষিত, সচেতন মানুষের পৃথিবী বিনির্মাণে আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস অপরিহার্য।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রথম বছর থেকেই স্বাক্ষরতা দিবস পালন শুরু হয়েছে। এই দেশ প্রথম থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত সকল ছাত্রছাত্রীকে অত্যন্ত উন্নত, কারিকুলামভিত্তিক, শিখন-শিক্ষণভিত্তিক বিনামূল্যের বোড বইগুলো প্রদান করে বিশ্বে অনন্য নজির স্থাপন করেছে। এছাড়াও বাংলাদেশের সরকারী বিদ্যালয়গুলোতে প্রায় বিনামূল্যে পড়ালেখাসহ টিফিন প্রদান করে ইতিহাস তৈরি করেছে। ভালো, গরিব ছাত্র, ছাত্রীদের সরকারী ও বেসরকারীভাবে বিপুল পরিমাণ শিক্ষাবৃত্তি সকল স্তরে প্রদান করা হয়। বাংলাদেশের নারী শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি প্রদান করা হয়।
২০২২ সালের জনশুমারিতে বাংলাদেশে সাক্ষরতার হার ৭৪.৬৬ শতাংশ। এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ। এই দেশে প্রথম থেকে মাস্টার্স পযন্ত পড়ালেখার অবারিত ও অত্যন্ত মানসম্পন্ন সুবিধা রয়েছে। কর্মমুখী শিক্ষার প্রসার ও প্রচার ঘটেছে।
এই আলোচনার মাধ্যমে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের কৃতি ও আইইআরের অধ্যাপকরা বাংলাদেশের শিক্ষা, গবেষণা, গুণগত শিক্ষাদান, শিখনের বহুমুখীতা, শিখন পদ্ধতির বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। দেশের প্রধান সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আইইআর, বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও এবং শিক্ষক প্রশিক্ষণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানসমূহে তাদের ভূমিকা আলোচনা করেছেন।
আইইআর, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সব ছাত্র, ছাত্রী ও অধ্যাপক আর্ন্তজাতিক স্বাক্ষরতা দিবস পালন করেছেন।
ওএফএস।