টিয়া উড়লো আকাশে

লেখা ও ছবি : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি।
রাজশাহী বিভাগের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার একজন শিকারির কাছ থেকে ৪টি টিয়া পাখি উদ্ধার করেছে ডিপ ইকোলজি অ্যান্ড স্নেক রেসকিউ ফাউন্ডেশন ( ডেসরফ)’ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা, বন অধিদপ্তরের রাজশাহী অফিসের সাহায্যে।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ক্যাম্পাসে পাখিগুলোকে আকাশে উড়িয়ে দেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম সাব্বির সাত্তারের ক্যাম্পাসের বাংলোর প্যারিস রোডে পাখিগুলোকে আকাশে উড়িয়ে দিয়েছেন পরিবেশবাদী ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে ছাত্র উপদেষ্টা এম. তারেক নূর।
খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, ফেসবুকে ‘টিয়া পাখি বিক্রয়’ পোস্ট দেখে ডেসরফের কর্মী-মার্কেটিং বিভাগের ছাত্র নাজমুল হোসেন ও ক্লিনিক্যাল সাইকোলজির ছাত্রী শামীমা তাসনীম ক্রেতা সেজে বিক্রেতার সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
অভিযানের অন্যরা হলেন-ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ছাত্র ও ডেসরফ কর্মী মিজানুর রহমান তাসিব, মতিয়ার হোসেন, হৃদয় হোসেন, হাসিবুল হাসান, প্রাচ্য। তাদের কয়েকজন প্রাণীবিদ্যার।
বিক্রেতা পাখিগুলো বিক্রিতে রাজী হবার পর তারা রাজশাহী বন অধিদপ্তরকে অবগত করেন।
তাদের সবার পরিকল্পনা অনুযায়ী, গতকাল ১৮ আগস্ট বিক্রেতাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজলা গেটে পাখিগুলো নিয়ে আসতে বলেন।
বিক্রেতা পাখি নিয়ে আসলে তাকে প্যারিস রোডে হাতেনাতে ধরা হয়।
তারপর বন অধিদপ্তরের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তার মাধ্যমে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জরুরী মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে বন্যপ্রাণী আইন ২০১২’র অধীনে অবৈধ পাখি বিক্রেতাকে কারাদন্ড দেওয়া হয়।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা তারেক নূর বলেছেন, ‘ছাত্রদের এমন কাজগুলো আমাদেরকে অনুপ্রাণিত করে। বন্যপ্রাণীরা অনেক সময় লোকালয়ে চলে আসে। সেগুলো তারা ঝুঁকি নিয়ে উদ্ধার করে। নিরাপদে অবমুক্ত করে। তাদের এমন কাজগুলোকে আমরা সাধুবাদ জানাই ও ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে থাকতে চাই।’
ছাত্রদের প্রশংসা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যার অধ্যাপক ড. এ. এম. সালেহ রেজা বলেছেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্পাসে অনেক টিয়া পাখির বসবাস রয়েছে। আমি ধন্যবাদ জানাই, বিশ্ববিদ্যালয় ডেসরফ ও রাজশাহী বন অধিদফতরকে। তারা টিয়া পাখিগুলোক উদ্ধার করে মাতৃকুলে ফিরে যাওয়ার জন্য অবমুক্ত করেছেন।’
এ বিষয়ে রাজশাহী বন অধিদপ্তরের বন্যপ্রাণী পরিদর্শক জাহাঙ্গীর কবীর বলেছেন, ‘যেকোনো ধরণের পাখিই পরিবেশের সঙ্গী। মানব সমাজের সৌন্দর্য। আমাদের দেশে একশ্রেণীর অসাধু বিভিন্ন মাধ্যমে পাখি শিকার করে পরিবেশ নষ্ট করছেন। এমনই একজন শিকারী পাখি ধরে বিক্রি করতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় একদল শিক্ষার্থী আমাদের সাথে যোগাযোগ করেন। তাদের সাথে আমরা শিকারিকে আটক করে পাখিগুলোকে অবমুক্ত করেছি।’
ওএফএস।
