নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে জবিতে শোক দিবস পালিত

বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালিত হয়েছে।
সোমবার (১৫ আগস্ট) দিবসটি উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘মুজিবমঞ্চে’ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। ক্যাম্পাসে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা এবং কালো পতাকা উত্তোলন ও কালো ব্যাজ ধারণ করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক বলেন, ‘আত্মত্যাগ ও নেতৃত্বসহ অন্যান্য বহুগুণের জন্য বঙ্গবন্ধু সমসাময়িক বিশ্বনেতাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন। বহির্বিশ্বের নেতারা তাকে সমীহ করতেন। তিনি যখন যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে নতুন করে সাজানোর জন্য এগিয়ে যাচ্ছিলেন, ঠিক তখনই দেশদ্রোহী ও স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির সহায়তায় তাকে সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিভিন্ন দেশে যুদ্ধাবস্থা বিরাজমান হওয়ায় বিশ্বের অর্থনৈতিক ও সামাজিক ব্যবস্থা কঠিন থেকে কঠিনতর হয়ে পড়ছে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত হয়েই তার সুযোগ্য কন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সচেষ্ট রয়েছেন। পুরো বিশ্ব যেখানে টালমাটাল সেখানে কিছু স্বার্থান্বেষী মহল দেশকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে।’
এসময় তিনি উল্লেখ করেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিগগিরই ‘বঙ্গবন্ধু চেয়ার’-এর কার্যক্রম চূড়ান্ত করা হবে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বঙ্গবন্ধু গবেষণা কেন্দ্র’ ও 'Centre for Liberation War' খোলার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আলোচনা সভায় ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ, কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদদীন, বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. শাহজাহান, লাইফ অ্যান্ড আর্থ সায়েন্স অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. মনিরুজ্জামান খন্দকার, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আবুল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. একেএম লুৎফর রহমান, কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি মো. জহুরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল কাদের, কর্মচারী সমিতির সভাপতি এরশাদ মিয়া, সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন ও সহায়ক কর্মচারী সমিতির সভাপতি আবু সাঈদ বক্তব্য প্রদান করেন। আলোচনা সভায় বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যান, শিক্ষক, প্রক্টর, সহকারী প্রক্টর, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, সাংবাদিক প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভায় বক্তারা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনের বিভিন্ন দিক, আদর্শ, বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও অসাম্প্রদায়িকতাসহ নানাবিধ আন্দোলন সংগ্রামের ইতিহাস তুলে ধরেন। একই সঙ্গে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে কীভাবে দেশে আবারও সাম্প্রদায়িক ও স্বাধীনতাবিরোধীরা ক্ষমতায় আসীন হয়ে দেশকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিয়েছিল তা আলোকপাত করা হয়। এসময় বঙ্গবন্ধুর খুনের নেপথ্যে জড়িতদেরও বিচারের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়।
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের নিচতলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উদ্যোগে পুরান ঢাকার স্কুলের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে ‘জাতির জনক ও বাংলাদেশ’ শিরোনামে শিশু চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।
পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে কোরআন খতম ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। দোয়া মাহফিলে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট স্বাধীনতার মহান স্থপতি ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তার পরিবার ও অন্যান্য শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করা হয়।
এসজি/
