জাবি জিমনেসিয়ামে ডাম্বেলের পরিবর্তে ইট!

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্যসচেতন শিক্ষার্থীরা সকালে শরীরচর্চায় বের হয়। নজর যায় জিমনেসিয়ামে। ডাম্বেল না থাকায় ‘ইট’ দিয়ে শরীরচর্চা করছে কয়েকজন শিক্ষার্থী।
তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা সপ্তাহের অধিকাংশ দিনই শরীরচর্চা করেন। কিন্তু জিমনেসিয়ামে ডাম্বেল না থাকায় ইট দিয়েই কাজ সারতে হচ্ছে তাদের।
সরেজমিনে জিমনেসিয়াম ঘুরে দেখা যায়, মেঝেতে পড়ে আছে ধুলোর আস্তরণ। ছাদে অসংখ্য ফাটলের অস্তিত্ব। ফলে বৃষ্টি হলেই এসব ফাটল দিয়ে পানি পড়ে মেঝেতে। দেবে গেছে মেঝের বেশ কিছু অংশ।
এভাবেই দীর্ঘদিন ধরে বেহাল অবস্থায় পড়ে আছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র জিমনেসিয়াম। দেশের একমাত্র আবাসিক এ বিশ্ববিদ্যালয়ের জিমনেসিয়ামে শরীরচর্চার জন্য পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতিও নেই। যেগুলো আছে সেগুলোতেও মরিচা ধরে নষ্ট হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে ওজন মাপার যন্ত্রটিও অকেজো হয়ে পড়ে আছে। শিক্ষার্থীদের জন্য ব্যবহৃত খাবার পানির পাত্রটিও অব্যবহার্য।
বিগত বছরগুলোতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগলেও শরীরচর্চার অন্যতম সহায়ক জিমনেসিয়ামের গায়ে লাগেনি সংস্কারের হাওয়া। ফলে ক্ষোভ জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্টরা। এদিকে ছাত্রীদের জন্য আলাদা ব্যায়ামাগার না থাকার জন্যও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিমনেসিয়ামের সংস্কার করা হয়নি। তবে করোনা পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন বন্ধের পরে গতবছর দেয়ালগুলোতে রঙ করা হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের জিমনেসিয়ামের ইনস্ট্রাক্টর ঠিকমতো আসেন না। তাই নিজেদের মতো করেই শরীরচর্চা করেন শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া শরীরচর্চার সময় পর্যাপ্ত খাবার পানিও পাচ্ছেন না তারা। নিয়মিত ঝাড়ু না দেওয়ায় সবসময় ধুলোবালি উড়ে। আর মেঝেতে দীর্ঘদিন ধরে বৃষ্টির পানি জমে থাকায় মশা জন্মানোর আশঙ্কা প্রকাশ করছেন শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মাসুম হাসান বলেন, শিক্ষার জন্য সব শিক্ষার্থীকে সুস্থ থাকা প্রয়োজন। জিমনেসিয়ামের আধুনিকায়ন জরুরি। তাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জিমনেসিয়ামের এক কর্মকর্তা বলেন, শরীরচর্চায় প্রয়োজনীয় সাইক্লিং মেশিন, ট্রেডমিল, মাল্টিজিম, ডাম্বেল, বারবেল ও ওয়েট যন্ত্রসহ বিভিন্ন সরঞ্জামাদি না থাকায় শিক্ষার্থীরা তাদের প্রয়োজন মতো শরীরচর্চা করতে পারেন না। এখানে যেসব সরঞ্জামাদি আছে তা পর্যাপ্ত নয়। তাই শরীরচর্চার জন্য শিক্ষার্থীরা আগের মতো এখানে আর আসেন না। আবার ছাত্রীদের জন্য আলাদা ব্যায়ামাগার না থাকায় তারা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষার ভারপ্রাপ্ত পরিচালক বেগম নাছরীনের সঙ্গে মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
উল্লেখ্য, অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের দ্বিতীয় ধাপে তৈরি হচ্ছে আধুনিক সুবিধা সম্বলিত স্পোর্টস কমপ্লেক্স।
টিটি/
