বশেফমুবিপ্রবি পুরোনো ব্রক্ষ্মপুত্রে মাছের পোনা ছাড়লো
লেখা ও ছবি : বশেফমুবিপ্রবি প্রতিনিধি।
জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০২২’ উদযাপনের অংশ হিসেবে জামালপুর জেলার একমাত্র সরকারী বিশ্ববিদ্যালয় এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্ত্রী ও শেখ হাসিনা-শেখ রেহানার মা ফজিলাতুন্নেসার নামে প্রতিষ্ঠিত ‘বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বশেফমুবিপ্রবি)’-এর আগে ফিশারিজ বিভাগের উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয়ে আলোচনা সভা করেছে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাকে আমন্ত্রণ জানিয়ে।
গতকাল ২৯ জুলাই তারা দ্বিতীয় আয়োজনে গিয়েছেন।
সকালে পুরোনো ব্রক্ষ্মপুত্র নদে নানা জাতের দেশীয় ও দুলর্ভ প্রজাতির মাছের পোনা ছেড়েছেন ফিশারিজ বিভাগে অধ্যাপক, গবেষক ও ছাত্র, ছাত্রীরা।
সারা দিনের আয়োজনের শেষ অংশ মেলান্দহ উপজেলায় ‘নদী ব্যবস্থাপনা ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ’ আলোচনা সভা করেছেন।
সন্ধ্যা ৭টায় স্থানীয় টুপকারচর বাজারের একটি ঘরে আয়োজক হয়েছেন তাদের ‘রিভার ডিফেন্ডার্স ক্লাব’, তারা নদী রক্ষক দল।
গড়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টিরই নদীপ্রেমী ছাত্র, ছাত্রী ও অধ্যাপকরা।
ক্লাবের সভাপতি বিএসএফএমএসটিউ’র সাংবাদিক সমিতির আহবায়ক ও গবেষক এস.এম. আল ফাহাদ।
তিনি জানিয়েছেন, ‘মেলান্দহ রিপোটার্স ইউনিটি ও আমাদের সাংবাদিক সমিতির উদ্যোগে আলোচনা সভাও করেছি।’
তিনি বলেছেন, “পুরোনো বক্ষ্মপুত্রই নয়, জিঞ্জিরাম, ঝিনাই নদীসহ অনেকগুলো দহ বা বিলের সমাহার আছে এই জেলায়। ‘মেলান্দহ’ শব্দটির মানেই হলো মেলা দহ বা অনেক বিল। এই উপজেলায় আছে বেশি।”
এস.এম. আল ফাহাদ জানিয়েছেন, ‘আমরা এই অঞ্চলের নদী ও বিল এবং পুকুর-জলাশয়গুলো বাঁচাতে কাজ করি, উন্নয়নের স্বেচ্ছাসেবক হই।’
জেলা, উপজেলা এবং গ্রামগুলোর মানুষদের নিয়ে এই বিশেষ মৎস্য সপ্তাহিক আলোচনায় প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নিয়েছেন তাদের বশেফমুবিপ্রবি’র উন্নয়ন ও পরিকল্পনা বিভাগের পরিচালক এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাবেক কর্ণেল ও নিরাপত্তা বিশ্লেষণ কাজী শরীফ উদ্দিন।
প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তৃতা করেছেন ফিশারিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও মৎস্য বিজ্ঞানী ড. মাহমুদুল হাছান।
বিশেষ অতিথি ছিলেন জামালপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সভাপতি ও সাবেক গেরিলা কমান্ডার আলহাজ্ব সৈয়দ হারুন-অর-রশীদ।
আলোচনা করেছেন জামালপুর পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বিশিষ্ট নাট্যকার আসাদুল্লাহ ফারাজী।
আলোচনায় অংশ নিয়েছেন ‘শহীদ সমর থিয়েটার’র সাধারণ সম্পাদক ও মেলান্দহ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক রেজাউল করিম বা লেবু মাস্টার, মেলান্দহ রিপোর্টার্স ইউনিটির সহ-সভাপতি ফজলুল করিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মুত্তাছিম বিল্লাহ, ফজলুল হক মেম্বার ও এস.এম. আল ফাহাদ।
সভাপতি ছিলেন মেলাদহ উপজেলা রিপোটার্স ইউনিটের সভাপতি মো. শাহ্ জামাল।
অনুষ্ঠানটি পরিকল্পনা ও পরিচালনা করেছেন মেলান্দহ রিপোর্টার্স ইউনিটি সাধারণ সম্পাদক ফরিদুল ইসলাম এবং রিভার ডিফেন্ডার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক কাওসার আহমেদ সুকর্ণ।
অনুষ্ঠানে গান ও আবৃত্তি হয়েছে।
স্বরচিত নদী ও প্রকৃতি রক্ষা কবিতা আবৃত্তি করেছেন কবি মিজানুর রহমান।
আলোচনা সভায় তারা উল্লেখ করেছেন, ‘মেলান্দহ উপজেলাসহ পুরো জেলার চরাঞ্চলের মানুষের জীবনমান উন্নয়নের জন্য বশেফমুবিপ্রবির অধীনে একটি ‘নদী, চর ও জলাভূমি ইনস্টিটিউট’ তৈরি করা হোক। তাতে নদী-বিল-জলাশয়গুলো নিয়ে যেমন কমসংস্থান, শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম পরিচালিত হবে; তেমনিভাবে পুরো অঞ্চল এবং দেশের সামগ্রিক জলজ সম্পদ রক্ষা ও তাদের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং উন্নয়ন ঘটবে। ফলে চরাঞ্চলের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নতি ঘটবে।’
‘নদী ব্যবস্থাপনা ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ’ আলোচনা সভায় বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ছাত্র, ছাত্রী এবং উপজেলাসহ জেলার মৎস্য কর্মকর্তারা মৎস্য সম্পদের গুরুত্ব, সেগুলোকে বাঁচানোর উপায়, নদীগুলো থেকে অবৈধ বালু উত্তোলনে করণীয়, নদী দূষণ-দখল হলে কী, কী ক্ষতি হয়, নিষিদ্ধ কারেন্ট ও চায়না- দুয়ারি জাল ব্যবহারের ক্ষতি ও প্রতিরোধ নিয়ে আলোচনা করেছেন।
ওএস।