তীব্র লোডশেডিংয়ে নাকাল বেরোবি

লেখা ও ছবি : ইভান চৌধুরী, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি।
দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে লোডশেডিং কম হলেও মাত্রাতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের কবলে পড়েছে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি)। ফলে বিঘ্ন ঘটছে স্বাভাবিক কার্যক্রম-ছাত্র, ছাত্রীদের ক্লাস-পরীক্ষা, গবেষণায়।
মাত্রাতিরিক্ত লোডশেডিংয়ে নাকাল তাদের জীবন। গত কয়েকদিনের প্রচন্ড গরমে অসুস্থ হয়েছেন বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী।
পবিত্র ঈদ-উল-আজহার ছুটি শেষে পুরোদমে ক্লাস-পরীক্ষায় ফিরেছে বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের পূর্ণ্য স্মৃতিতে প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়টি। তবে মাত্রাতিরিক্ত লোডশেডিংয়ে তাদের প্রশাসনিক ও অ্যাকাডেমিক কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটছে। তীব্র গরমে মনোরম পরিবেশেও শিক্ষা কার্যক্রম অসম্ভব হয়ে পড়েছে। রুমে ক্লাস করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন শিক্ষার্থীরা। অনেক অধ্যাপক ক্লাস শিডিউল পরিবর্তন করতে বাধ্য হচ্ছেন, অনেকে গরমে গাছতলায় ক্লাস নিচ্ছেন। আজ বৃহস্পতিবার ২১ জুলাই সরেজমিনে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি ইভান চৌধুরী আরো রিপোর্ট করেছেন, “আমাদের লোকপ্রশাসনের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র, ছাত্রীরা অ্যকাডেমিক ভবন-৩’র সামনের গাছতলায় বসে ক্লাস করছে। দরদর করে ঘাম ঝরছে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের। ক্লাস নিচ্ছেন সহকারি অধ্যাপক জুবায়ের ইবনে তাহের।’
তিনি স্বাভাবিকভাবে বাইরে ক্লাস করার কারণ জানতে চাইলে শিক্ষার্থীরা অন্যতম এই ছাত্রকে বলেছেন, ‘সামনে সেমিস্টার ফাইনাল বলে ক্লাস ও ইনকোর্স এবং অ্যাসাইনমেন্টের চাপ খুব। আজ সকাল ১১ টার ক্লাসের পর থেকেই লোডশেডিং শুরু হয়েছে। ফলে প্রচন্ড গরম। রুমে বসে ক্লাস করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। কজন ছাত্র, ছাত্রী অসুস্থ বোধ করেন। অবস্থা খারাপ দেখে স্যার বাইরের গাছতলায় আমাদের নিয়ে চলে এসেছেন। প্রচন্ড গরমে ক্লাসে মনোযোগ রাখা অসম্ভব হয়ে গিয়েছিল।’
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, ছাত্রীদের আরো অভিযোগ, বিশ্বজুড়ে জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধিতে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য সরকারের এলাকাভিত্তিক লোডশেডিং চালু হয়েছে। তবে মানছেন না রংপুর অঞ্চলের নর্দান ইলেক্ট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি (নেসকো)’র কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। ফলে এলাকাভিত্তিক ১ ঘন্টা লোডশেডিংয়ের কথা থাকলেও ২৪ ঘণ্টায় তাদের বিদ্যুত থাকছে মাত্র ৬ থেকে ৮ ঘন্টা।
তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুতের দাবি করেছেন।
এ বিষয়ে মার্কেটিং বিভাগের ছাত্রী নুসাইবা রিফা বলেছেন, ‘প্রচন্ড গরমে আমাদের ক্লাস করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। স্যারকে অনুরোধ করে দুই দিন ক্লাস বাতিল করেছি। একদিন সময় পরিবর্তনও করেছি। এ অবস্থায় আমাদের সবার পড়ালেখার অনেক ক্ষতি হচ্ছে। মনোযোগ দিতে পারছি না। অতিদ্রুত অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়েও নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুত সরবাহ না করলে শিক্ষার্থীরা নেসকো অফিস ঘেরাও করতে বাধ্য হবে।’
বিদ্যুৎ বিষয়ে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক ও রসায়নের সহকারি অধ্যাপক নুরুজ্জামান খান বলেছেন, ‘নেসকো ২৪ ঘণ্টায় ১ ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের কথা বললেও আমাদের ক্যাম্পাসে ৫ থেকে ৮ ঘণ্টা চলছে। চরম বিপাকে পড়তে হয়েছে শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের।’
বেরাবির স্বাভাবিক কার্যক্রম ও পড়ালেখার মনোরম পরিবেশের স্বার্থে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুত সরবরাহের জন্য নেসকোর সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
নর্দান ইলেক্ট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি (নেসকো)’র রংপুর বিতরণ অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী শাহাদাত হোসেন সরকার বলেছেন, ‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকাটিতে লোডশেডিং কম দেয়ার চেষ্টা করছি।’
ওএস।
