খালেদা জিয়া হলে চালু হলো ‘বঙ্গবন্ধু কণার্র'
লেখা ও ছবি : আসিফ আহমেদ, প্রতিনিধি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।
কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র চট্টগ্রাম থেকে ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়া, মুক্তিযুদ্ধের সময় সেক্টর কমান্ডার এবং রাষ্ট্রপতি থাকা অবস্থায় নিহত মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান। তার স্ত্রী ও তিনবারের প্রধানমন্ত্রী, বিএনপি (বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল)’র চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার নামে ২০০১ সালে তৈরি হয়েছে ‘বেগম জিয়া হল’। এই ছাত্রী হলটি উত্তরবঙ্গের প্রধান ও বাংলাদেশের অন্যতম সেরা বিশ্ববিদ্যালয় রাজশাহীর অন্যতম প্রধান ছাত্রী আবাস।
বেগম খালেদা জিয়া হলের ছাত্রীদের অডিটোরিয়াম ও টিভি রুমের পাশে ‘১২৪’ নম্বর রুমে চালু হয়েছে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রতিষ্ঠানের মতো বাংলাদেশ সরকারের মুক্তিযুদ্ধ, সেক্টর কমান্ডারদের অবদান, মুক্তিযোদ্ধাদের জীবনদান ও বাংলাদেশকে স্বাধীন করার জন্য মা-বোনদের অসাধারণ আত্মত্যাগের কাহিনী নিয়ে ‘বঙ্গবন্ধু কর্ণার’।
উদ্বোধন করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতনামা উপাচার্য অধ্যাপড ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার।
বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন দুই উপ-উপাচার্য শিক্ষা অধ্যাপক ড. চৌধুরী মোহাম্মদ জাকারিয়া ও প্রশাসন অধ্যাপক ড. সুলতান-উল-ইসলাম।
প্রক্টর অধ্যাপক ড. আসাবুল হক, ছাত্র উপদেষ্টা তারেক নূর, হল প্রাধ্যক্ষ পরিষদের আহবায়ক অধ্যাপক ড. ফেরদৌসী মহল, খালেদা জিয়া হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. সৈয়দ নুসরাত জাহান, জনসংযোগ বিভাগের প্রশাসক অধ্যাপক ড. প্রদীপ কুমার পাণ্ডে ছাড়াও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭টি হলের প্রাধ্যক্ষ এবং নির্মাণাধীন দুটি হলের প্রাধ্যক্ষরা অতিথি হিসেবে অংশ নিয়েছেন।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম খালেদা জিয়া হলের সব ছাত্রী, শিক্ষিকা, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী এবং তাদের পরিবারকে এখন থেকে মুক্তিযুদ্ধ, বাংলাদেশের জন্ম ইতিহাস ও সংগ্রামের কাহিনী এবং রাজশাহীর অংশগ্রহণের গল্প শোনাবে কর্ণারটি।
বিশেষ অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেছেন বাংলার সহযোগী অধ্যাপক ও হলের অন্যতম আবাসিক শিক্ষক ড. তানিয়া তাহমিনা সরকার।
হলের ছাত্রী, অধ্যাপক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা এই বিশেষ এবং দারুণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বলে জানিয়েছেন ঢাকাপ্রকাশ ২৪.কমের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি আসিফ আহমেদ।
বেগম খালেদা জিয়া হলে বঙ্গবন্ধু কর্ণার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রধান অতিথি অধ্যাপক ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেছেন, ‘আমাদের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কোনো সাধারণ মানুষ ছিলেন না। তাকে না পেলে বাংলাদেশ পেতাম না, বাঙালির স্বাধীন দেশের জন্ম হতো না। মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মদান ও রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতা যুদ্ধকে আমরা বাংলাদেশের মানুষরা সবসময় শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করি। বঙ্গবন্ধুর স্বার্থকতা হলো, তিনি সাড়ে সাত কোটি বাঙালির মধ্যে, যারা পূর্ববঙ্গের মানুষ, পূর্ব পাকিস্তানী, তাদের মধ্যে মুক্তিসংগ্রামের চেতনাকে জ্বালিয়ে দিতে পেরেছিলেন।’
অধ্যাপক ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও একাত্তরের আদশে অনুপ্রাণিত হয়ে চলা সবার কতব্য। এজন্য তাদের ওপর লেখা বইগুলো পড়তে হবে, প্রামাণ্যচিত্র, নানা পত্রিকার কাটিং, লেখা, গবেষণা ও প্রবন্ধগুলো পড়তে হবে। গবেষণা ও কাজ করতে হবে। এই বিরাট সংগ্রহ এই হলে শুরু হলো। বাংলাদেশ সৃষ্টির ইতিহাস ছাত্রীদের এই কর্ণারের মাধ্যমে জানা সম্ভব হবে।’
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সুলতান-উল-ইসলাম অন্যতম বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘এই মানুষগুলোর প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতার কোনো শেষ নেই। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্ম সমার্থক। তার সঠিক ও দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলা ভাষাভাষীদের স্বাধীন দেশটির জন্ম হয়েছে, গড়ে উঠেছে। এই মানুষদের জীবনাদর্শ সবাইকে মেনে চলার অনুরোধ করছি আমি। তাহলেই শেখ মুজিবুর রহমানের ১৪ বছরের কারাগারে কাটানো ও সোনার বাংলা নির্মাণের স্বপ্ন স্বার্থক হবে।’
ওএস।