ভাষাসংগ্রামী আহমদ রফিকের ৯৪তম জন্মদিন আজ
আজ সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) লেখক, গবেষক ও ভাষাসংগ্রামী আহমদ রফিকের ৯৪তম জন্মদিন। আহমদ রফিক আমাদের ইতিহাস-সাহিত্য-সংস্কৃতির অভিজ্ঞতা সম্পন্ন এক জীবন্ত কিংবদন্তি।
আহমদ রফিক ১৯২৯ সালের এই দিনে তদানীন্তন ত্রিপুরা জেলার ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহকুমার শাহবাজপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৪৭ সালে মেধা তালিকার ষোড়শ স্থানসহ ম্যাট্রিকুলেশন, ১৯৪৯ সালে দ্বাদশ স্থানসহ ইন্টারমিডিয়েট এবং ১৯৫৮ সালে এমবিবিএস পাস করেন তিনি।
সুদীর্ঘ জীবনে সাহিত্য-সংস্কৃতি বিষয়ে তার লেখালেখির পরিমাণ বিপুল। তার সাহিত্যকর্ম বিংশ শতাব্দীর পঞ্চাশের দশক থেকে একবিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় দশক পর্যন্ত পরিব্যাপ্ত। রবীন্দ্র-গবেষক হিসেবে আহমদ রফিক দুই বাংলাতেই খ্যাতি অর্জন করেছেন। রবীন্দ্রবিষয়ক গবেষণার ফসল হিসেবে তিনি বাংলা সাহিত্য ভাণ্ডারে একাধারে যোগ করেছেন অসংখ্য অনবদ্য সব গ্রন্থ।
ছাত্রজীবন থেকেই সাহিত্য ও রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন তিনি। ভাষা আন্দোলনে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ছিলেন অগ্রসৈনিক। তিনি ১৯৫৩-৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট গঠন ও বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে অংশ নেন। এ কারণে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। ১৯৫৮ সালে তার প্রথম গবেষণাধর্মী প্রবন্ধ গ্রন্থ প্রকাশ হয়।
১৯৬০ সালে ওষুধ প্রতিষ্ঠান ‘অ্যালবার্ট ডেভিড’ এ টেকনিক্যাল তথ্য বিভাগের প্রধান হিসেবে যোগ দেন আহমদ রফিক। ১৯৬৪ সালে কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে গড়ে তোলেন স্বদেশী ওষুধ কোম্পানি ‘ওরিয়ন ল্যাবরেটরিজ’। ১৯৯৬ সালে এই সংস্থার চেয়ারম্যান পদ থেকে অবসর নেন তিনি। ভাষা আন্দোলনে সরাসরি অংশগ্রহণ ও গবেষণার ফলে এ বিষয়ে তার একাধিক তথ্যবহুল গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। তার রচিত ও সম্পাদিত গ্রন্থের সংখ্যা শতাধিক।
বাংলা একাডেমির ফেলো, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির আজীবন সদস্য, ‘রবীন্দ্রচর্চা কেন্দ্র’ ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, একুশে পরিষদ ও ভাষা আন্দোলন জাদুঘরের অন্যতম উদ্যোক্তা ভাষাসংগ্রামী আহমদ রফিক সাহিত্যে গবেষণামূলক রচনার জন্য ১৯৭৯ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার, ১৯৯২ সালে অলক্ত সাহিত্য পুরস্কার, অগ্রণী ব্যাংক শিশুসাহিত্য পুরস্কার ও ২০১৩ সালে রবীন্দ্র পদক লাভ করেন। সাহিত্যে অসামান্য অবদান রাখায় ১৯৯৫ সালে পান একুশে পদক। এ ছাড়া ১৯৯৭ সালে টেগোর রিসার্চ ইনস্টিটিউট তাকে রবীন্দ্রতত্ত্বাচার্য উপাধিতে ভূষিত করে।
আরএ/