অনিয়মিত সাহিত্য সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর ৫০ বছর পূর্তি
‘অনিয়মিত সাহিত্য সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর প্রযোজনায় ও ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে মুন্সীগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হয় নাট্যকার মমতাজউদ্দিন আহমেদের বিখ্যাত নাটক ‘ছহি বড় বাদশাহী কাব্য’ নাটকটি।
শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় মুন্সীগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠান হয়।
মুন্সীগঞ্জে ১৯৭৩ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি শহরের মালপাড়ায় আত্মপ্রকাশ ঘটে অনিয়মিত সাহিত্য সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর। ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দীপ্ত আমাদের সংস্কৃতি’-স্লোগানকে ধারণ করে ৫০ বছরে পদার্পণ করল অনিয়মিত সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী।
মুন্সীগঞ্জের নাট্যাঙ্গনে গৌরবময় ৫০ বছরে সাফল্যের সঙ্গে পদার্পণ উপলক্ষে সংগঠনটি মঞ্চায়ণ করে তারা।
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গন থেকে ফেরা কয়েকজন তরুন দেশ ও সমাজ সচেতনা তৈরির হাতিয়ার ও মাধ্যম হিসেবে বেছে নেয় নাটককে। মুক্তিযুদ্ধের প্রেরণায় উদ্দিপ্ত হয়ে নাট্যচর্চা ও সামাজিক সংস্কৃতির ধারাকে সমুন্নত রাখার প্রত্যয়কে বুকে ধারণ করে তারা ১৯৭৩ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠা করে ’অনিয়মিত সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী’।
সংগঠনটি আশির দশকে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন ছাড়াও বিভিন্ন জাতীয় ও সামাজিক আন্দোলনে সম্মিলতি সাংস্কৃতিক জোটের সদস্য হিসেবে বিশেষ ভূমিকা পালন করে এবং মুন্সিগঞ্জের বিভিন্ন প্রগতীশীল সংগঠনগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করার কাজে অগ্রনী ভূমিকা পালন করে। গত ৫০ বছরে প্রায় এক হাজারটি নাটক মঞ্চায়ণ ছাড়াও রবীন্দ্র-নজরুল-সুকান্ত জয়ন্তী, বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবস পালন ছাড়াও অসংখ্য চিত্র প্রদর্শনী ও নাট্য কর্মশালার আয়োজন করে অনিয়মিত সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী। সংগঠনটি বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনেরও নিয়মিত সদস্য।
গত পাঁচ দশকে নাটক মঞ্চায়ন ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনের পুরোধা নেতৃত্ত্বে ছিলো অনিয়মিত সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী। তারই ধারাবাহিকতায় মঞ্চস্থ হলো মমতাজউদ্দিনের বিখ্যাত নাটক ’ছহি বড় বাদশাহী কাব্য’।
সম্প্রতি প্রয়াত অবয়ব আহমেদ পূর্ণকে উৎসর্গকৃত নাটকটির পরিচালকের দায়িত্বে ছিলেন অপূর্ব সূচনা এবং প্রধান সমন্বয়কারী হিসেবে কাজ করেছেন আরিফ মোড়ল। এ ছাড়া, মঞ্চে অভিনয় করেছেন মাহবুবুল আলম, মামুন হোসেন, আব্দুল কাইয়ুম রতন, সুভাষ চন্দ্র শীল, মোহাম্মদ সামির ও রিমঝিম দাস।
প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিভিন্ন চড়াই উৎড়াই পেরিয়ে ধারাবাহিকভাবে এবং সফলতার সঙ্গে একাধিক প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে বাঙালি সংস্কৃতিপনাকে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত বক্তারা সবাই প্রায় সমস্বরে সংগঠনের এই মহতি প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানান এবং আগামীতেও এই প্রচেষ্টা চলমান থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। পঞ্চাশ বছর পূর্তী ও নাট্যমঞ্চায়ণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মুন্সিগঞ্জের প্যানেল মেয়র সোহেল রানা ( রানু), খালেদা খানম, গিয়াসউদ্দিন আহমেদ, আল মাহমুদ বাবু, সাইফুল বিন সামাদ শুভ্র, শামসুল ইসলাম, আব্দুল্লাহ আল মামুন টিটু, আশরাফুল ইসলাম, মেহেদি হাসান বাবু, সুজন হায়দার জনি, আরিফ মোড়ল, আরিফুল ইসলাম, সোনিয়া হাবীব লাবণী, আক্তারুজ্জামান, উত্তম দেব, অপূর্ব সূচনা, পূর্ণর পরিবারসহ সাংস্কৃতিক অঙ্গনের নেতৃস্থানীয় সুধীবৃন্দ। নাটকের কলাকুশলীদের মাঝে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন আগত অতিথিরা।
এমএমএ/