২১তম দিনের অনুষ্ঠানমালা
৭ই মার্চের ভাষণ বাঙালিকে বীর জাতিতে রূপান্তরিত করে
![](https://admin.dhakaprokash24.com/logo/placeholder.jpg)
অমর একুশে বইমেলার ২১তম দিন সোমবার (৭ মার্চ) বিকাল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ স্মরণে অনুষ্ঠিত হয় ‘বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ : বহুমাত্রিক পরিপ্রেক্ষিত’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। আলোচনা করেন মো. নজরুল ইসলাম খান এবং মনজুরুল আহসান বুলবুল। সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন।
মুহম্মদ নূরুল হুদা বলেন, ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণ কবি-সাহিত্যিক, ছাত্র-শিক্ষকসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে উদ্বুদ্ধ করেছিল। বঙ্গবন্ধু সেদিন বীরসত্তায় পরিণত হন, আর তাঁর বীরচেতনা ব্যক্তিসত্তা থেকে জাতিসত্তার মাঝে সঞ্চারিত হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু ৭ই মার্চের ভাষণের মাধ্যমে বাঙালিকে বীর জাতিতে রূপান্তরিত করেছিলেন।
প্রাবন্ধিক বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের মূলমন্ত্র ছিল বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ। এই ভাষণের মাধ্যমে তিনি কেবল সাড়ে সাত কোটি মানুষকে ঐক্যবদ্ধই করেননি, মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার নির্দেশনাও দিয়েছেন। স্বাধীনতা ও মুক্তির জন্য বঙ্গবন্ধুর দৃঢ় প্রত্যয় প্রতিফলিত হয়েছে ৭ই মার্চের ভাষণে। বঙ্গবন্ধুর এই ঐতিহাসিক ভাষণ যেভাবে বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতার মন্ত্রে উদ্দীপ্ত করে সামগ্রিক লড়াইয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ার উদ্দীপনা যুগিয়েছিল; পৃথিবীর ইতিহাসে তা বিরল। ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চে প্রদত্ত বঙ্গবন্ধুর ভাষণ কেবল বাঙালি জাতির মুক্তির সনদই নয়, এটি নিপীড়িত মানুষের মুক্তির সনদ।’
আলোচকরা বলেন, ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যে রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও দূরদৃষ্টির প্রতিফলন ঘটেছে, তা এক কথায় অনন্য। সংক্ষিপ্ত এই ভাষণের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু সত্যনিষ্ঠ ও যুক্তিপূর্ণ ভাষায় বাঙালির চেতনাকে উজ্জীবিত করেছেন। সাড়ে সাত কোটি বাঙালির যৌথ কণ্ঠস্বর সেদিন প্রতিধ্বনি হয়েছিল বঙ্গবন্ধুর বলিষ্ঠ কণ্ঠে।
সেলিনা হোসেন বলেন, ‘বাংলার সাধারণ মানুষ তাদের আপন চিন্তায়, আপন কর্মে বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণের মর্মবাণী ধারণ করেছিল আর তা-র বাস্তবায়ন ঘটিয়েছিল মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে। বঙ্গবন্ধুর এই অমর ভাষণ বিশ্বজুড়ে নিপীড়িত মানুষের প্রতিরোধের প্রেরণা হয়ে থাকবে।’
লেখক বলছি
লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের বই নিয়ে আলোচনা করেন কামরুল হাসান এবং আনজীর লিটন।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান
মূল মঞ্চে আজকের অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন কবি বায়তুল্লাহ কাদেরী এবং সঞ্জীব পুরোহিত। ছড়া পাঠ করেন ছড়াকার আনজীর লিটন এবং সুজন বড়ুয়া। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ছিল সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী’-এর পরিবেশনা। সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী জালাল খান ইউসুফী, শিবু রায়, সমর বড়ুয়া, সন্দীপন দাস, আবদুল হালিম খান, ফারহানা ফেরদৌসী তানিয়া, শ্যামা সরকার এবং শরণ বড়ুয়া। যন্ত্রাণুষঙ্গে ছিলেন বিশ্বজিৎ সরকার (তবলা), অজিত কুমার (দোতারা), মো. মামুনুর রশিদ (বাঁশি) এবং ইফতেখার হোসেন সোহেল (কী-বোর্ড)।
বঙ্গবন্ধু-মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ শিশু-কিশোর চিত্রপ্রদর্শনী
ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ উদযাপন উপলক্ষে বিকেল সাড়ে ৩ টায় বাংলা একাডেমির ড. মুহম্মদ এনামুল হক ভবনে অবস্থিত ভাস্কর নভেরা প্রদর্শনী কক্ষে ‘বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ’ শীর্ষক শিশু-কিশোর চিত্রপ্রদর্শনী ২০২২ উদ্বোধন করা হয়। প্রদর্শনীতে ২০০৮ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত অমর একুশে বইমেলা উপলক্ষে বাংলা একাডেমি আয়োজিত শিশু-কিশোর চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় পুরস্কারপ্রাপ্ত চিত্রাবলি স্থান পায়। উদ্বোধন করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। আগামী ১৭ মার্চ পর্যন্ত বইমেলা চলাকালে প্রদর্শনী খোলা থাকবে।
মঙ্গলবারের অনুষ্ঠান
মঙ্গলবার (৮ মার্চ) অমর একুশে বইমেলার ২২তম দিন। মেলা চলবে বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত।
বিকাল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে ‘সংগীত ও কবিতায় একুশের চেতনা’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন সাইম রানা। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন ফেরদৌস হোসেন ভূঁইয়া, এ এফ এম হায়াতুল্লাহ ও মুস্তাফিজ শফি। সভাপতিত্ব করবেন নিরঞ্জন অধিকারী।
সন্ধ্যায় রয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
এপি/
![Header Ad](https://admin.dhakaprokash24.com/images/single-post-anniversary.jpeg)