বৃহস্পতিবার, ৯ মে ২০২৪ | ২৬ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

আন্দোলন-নির্বাচন দুই ইস্যুতেই তৎপর জামায়াতে ইসলামী

আন্দোলন ও নির্বাচন দুই ইস্যুতেই তৎপর রয়েছে জামায়াতে ইসলামী। যদিও ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে বিতর্কিত ভূমিকার বিতর্কিত জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন আইনি জটিলতায় ঝুলে আছে, তারপরও তলে তলে বিএনপির সঙ্গে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে দলটি।

সূত্র জানায়, দেশ-বিদেশের বিভিন্ন মহলের চাপে প্রকাশ্যে জামায়াতের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখছে বিএনপি। তবে ভেতরে ভেতরে দুই দলের নেতাদের মধ্যে যোগাযোগ হচ্ছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে জামায়াতের সঙ্গে বিএনপিও তলে তলে পুরোনো সম্পর্ক বজায় রেখে সরকারবিরোধী যুগপৎ আন্দোলন ও নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। মূলত রাজপথে জামায়াতের শক্তি ও ভোট ব্যাংকের কারণেই অনেকটাই ওপেন সিক্রেট কৌশলে জামায়াতকে কাছে রাখার চেষ্টা অব্যাহত রাখছে বিএনপি নেতৃত্ব।

জামায়াতে ইসলামীর একাধিক দায়িত্বশীল নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নির্দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে বিএনপির চলমান যুগপৎ আন্দোলনে এককভাবে সম্পৃক্ত জামায়াতে ইসলামী। জোটবদ্ধ না হলেও এককভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাবে দলটি। রাজনীতিতে শেষ বলে কিছু নেই। ২০১৪ সালে একই দাবিতে নির্বাচন বয়কট করে ২০১৮ সালে যদি বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারে। সেক্ষত্রে এবারও তো শেষ মুহূর্তে কোনো সিদ্ধান্ত আসতে পারে।

তাই আন্দোলনের পাশাপাশি নির্বাচনের প্রস্তুতিও নিতে জামায়াতে ইসলামী। জামায়াত নেতৃত্ব বলছে, জামায়াত নির্বাচনমুখী একটি রাজনৈতিক দল। কোনো কারণে বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নিলে জামায়াত যাতে নিবন্ধিত অন্য দলের প্রতীকে নির্বাচন করতে পারে সে প্রস্তুতিও রাখা হচ্ছে। দলগুলোর সঙ্গে জামায়াত যোগাযোগ রাখছে। একইসঙ্গে নিজেদের দলের নিবন্ধন ফেরত পাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।

সংশ্লিষ্টদের মতে, ২০ দলীয় জোট অকার্যকর হয়ে গেলেও এ জোটের বেশ ক’টি দলের সঙ্গে জামায়াতের নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোনো কারণে বিএনপি অংশ না নিলে কিংবা জামায়াতের প্রার্থীরা বিএনপির প্রতীক ব্যবহার করতে না পারলে যেকোনো একটির সঙ্গে মিশে নির্বাচন করার চেষ্টা করা হবে।

জামায়াতে ইসলামী দেশের অন্যতম প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক দল বিএনপির দীর্ঘ দিনের পথ চলার জোট-ভোটের অন্যতম সঙ্গী। আইনি জটিলতায় নিবন্ধন প্রক্রিয়া ঝুলে থাকায় দলীয় প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ নেই দলটির। ফলে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটে থেকে ভোটযুদ্ধে অংশ নেওয়াটাই ছিল তাদের রাজনৈতিক দল হিসেবে টিকে থাকার শেষ ভরসা।

কিন্তু সম্প্রতিকালে বিএনপি তাদের নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটকে অকার্যকর ঘোষণা দেয়। পক্ষান্তরে ২০ দলীয় জোটে অন্তর্ভুক্ত দলগুলোও আনুষ্ঠানিকভাবে জোট ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছে। ১২টি রাজনৈতিক দল একত্রিত হয়ে গঠন করেছে ১২ দলীয় জোট। জোটের অন্যান্য দলগুলো মিলে গঠন করেছে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট। এই দুই জোটের কারও সঙ্গেই জোটবদ্ধ নেই ২০ দলীয় জোটের অন্যতম দল জামায়াতে ইসলামী। তবে প্রত্যেকটি দলের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে তাদের।

এদিকে, বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট থেকে বের হয়ে আলাদা আলাদা জোট গঠন করলেও সেই রাজনৈতিক দলগুলো বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে মাঠে থাকার ঘোষণা দিয়েছে। একই দিনে একই রকমের কর্মসূচিও পালন করে আসছে। কিছুটা ব্যতিক্রম শুধু জামায়াতে ইসলামী। শুরুতে বিএনপি ঘোষিত কর্মসূচিতে জামায়াতের নেতা-কর্মীরা অংশগ্রহণ করতে গিয়ে পুলিশি হামলার শিকার হওয়ার পর বিএনপির পক্ষ থেকে কোনো প্রকার সমবেদনা জানিয়ে বিবৃতি প্রদান করা হয়নি। এরপর থেকে বিএনপির চলমান যুগপৎ আন্দোলনে একই দিনে কর্মসূচি পালন করা থেকে বিরত থাকছে জামায়াতে ইসলামী।

দলটির দায়িত্বশীল একাধিক নেতা ঢাকাপ্রকাশ-কে জানান, বিএনপির সঙ্গে জোটবদ্ধ নেই; আবার জোটবদ্ধ আছে জামায়াতে ইসলামী। বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে ২০ দলীয় জোট বিলুপ্ত ঘোষণা দেয়নি; পক্ষান্তরে জামায়াতে ইসলামীও বিএনপির সঙ্গে নাই এমনটার কোনো আনুষ্ঠানিকতা নাই। দুই দলের সর্ম্পককে ঘিরে যে গুঞ্জন সেটা হলো রাজনৈতিক কৌশল। কারণ বিএনপি নির্দলীয় সরকারের অধীনে দাবি আদায় করতে যুগপৎ আন্দোলনে করে যাচ্ছে। জামায়াতে ইসলামীও একই দাবিতে কর্মসূচি পালনে মাঠে রয়েছে।

ইদানিং বিএনপির সঙ্গে সরকারবিরোধী বেশকিছু সমমনা রাজনৈতিক দলের নতুন করে সখ্যতা গড়ে উঠেছে। তাদের সুবিধার্থে এবং বিএনপিও সেই দলগুলোকে দাবি আদায়ের আন্দোলনে পাশে ধরে রাখতে জামায়াতের সঙ্গে দৃশ্যত কিছুটা দূরত্ব বজায় রেখে চলছে। স্পষ্ট কথা-শুরুতে সরকারবিরোধী সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো মুখে মুখে জামায়াতের বিরুদ্ধে অবস্থান থাকলেও এখন সেই অবস্থান তাদের নেই। বেশ কিছু দলের নেতা জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে আদর্শগত পার্থক্য থাকলেও সাংবিধানিক অধিকারসহ ন্যায্য দাবি আদায়ে কোনো পার্থক্য নেই। একে অপরের দীর্ঘদিনের ভোট জোটের অন্যতম বন্ধু। বিএনপি এবং জামায়াত এক সূত্রে গাঁথা। কেউ চাইলেই এই দুই দলের দীর্ঘদিনের বোঝাপড়ার সম্পর্ক ভেঙে ফেলা যাবে না বলেই মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

তারা বলছেন, ভোটের রাজনীতিতে জামায়াতে ইসলামী একটা বড় ফ্যাক্টর। ফলে জামায়াতে ইসলামী রাজনীতিতে না থেকেও আছে; জামায়াতকে নিয়ে রাজনীতিও আছে। দলগতভাবে জামায়াতে ইসলামী সুসংগঠিত, সুশৃঙ্খল ও জনসমর্থন নিয়ে গড়া দল। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ শত চেষ্টা আর অত্যাচার-নির্যাতন-নিপীড়ন চালিয়েও বিএনপি-জামায়াতের সম্পর্কে ফাটল ধরাতে পারেনি, পারবে না। উভয় দল একে অপরকে ছেড়ে দেওয়ার কথা কখনো ভাবছে না।

এখন দৃশ্যত যা হচ্ছে সেটাই রাজনীতি। আগামী দিনেও রাজপথ আন্দোলনেও জামায়াতে ইসলামী থাকবে। মাঠ ছাড়বে না। পক্ষান্তরে জামায়াতে ইসলামীর দীর্ঘ দিনের রাজনৈতিক মিত্র বিএনপির নেতারা বলছেন, তারা এই সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ নেবে না।

বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী কোনো নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দল নয়, সরকারও তাদেরকে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিষিদ্ধ করেনি। কাজেই বিএনপির সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর নির্বাচনী জোট হলেও তাতে দোষের কিছু নেই। বরং আজকে যারা জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে বিতর্ক তৈরি করছে তাদের সঙ্গেও তো জামায়াত জোটবদ্ধ হয়ে রাজপথে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করেছে। তাহলে এখন সমস্যাটা কোথায়?’

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় আরও বলেন, আসলে ক্ষমতাসীনদের আতঙ্কের নাম বিএনপি। ফলে বিএনপির সঙ্গে যারাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে সরকারবিরোধী প্রতিবাদ করবে তাদের বিরুদ্ধেই মিথ্যাচার ও বিতর্ক তৈরি করবে সরকার।

জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে জোট ছাড়ার কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। জোটে থাকা না থাকার বিষয়েও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। জোটে থাকলেও এই সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে আছি আর জোটে না থাকলেও তো এই সরকারের বিরুদ্ধেই যুগপৎ আন্দোলন করতে রাজপথে আছি।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামের সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, জামায়াতে ইসলামী গতানুগতিক কোনো রাজনৈতিক দল নয় বরং জামায়াত একটি গণতান্ত্রিক, আদর্শবাদী ও কল্যাণমুখী ইসলামী দল। মূলত গণমানুষের কল্যাণ ও ন্যায়-ইনাসাফের ভিত্তিতে কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা জামায়াতে ইসলামের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য। ভোটের রাজনীতিতে জামায়াতে ইসলামী নিজেদের মতো করে সক্রিয় আছে। তৃণমূলে মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ বহাল আছে। তাই অকারণে শক্তিনাশের পথে না হেঁটে তারা কৌশলে শক্তি বাড়িয়ে যাচ্ছে। জামায়াতকে নিয়ে রাজনীতি এবং জামায়াতের রাজনীতি সহজে শেষ হওয়ার নয়। জামায়াতে ইসলামী রাজনীতির মাঠে আছে এবং থাকবে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হওয়ার পর থেকে তাদের পরীক্ষিত জোটবন্ধু জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির কিছুটা দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে। অথচ বাস্তবতা হচ্ছে এটা দূরত্ব নয়, এটা উভয় দলের রাজনৈতিক কৌশল। সরকারবিরোধী সমমনা অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোকে পাশে পেতেই উভয় দল নিজেদের গুটিয়ে রেখেছে। জোট ও রাজনৈতিক বিষয়ে এখনো তাদের মধ্যে সুসম্পর্ক বিরাজমান।

বরং জামায়াতের নেতারা অনেকটাই গর্ব করে বলে থাকেন শত প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও বিএনপি-জামায়াত সম্পর্কে কেউ চির ধরাতে পারবে না। যুগপৎ আন্দোলন নিয়ে বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে আনুষ্ঠানিক কোনো বৈঠক না হলেও গোপনে দুই দলের সিনিয়র নেতাদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা হয়েছে এবং আরও হবে।

জামায়াতের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, রাজনীতিতে শেষ বলে কোনো কথা নেই। কাউকে না কাউকে তো কিছু ছাড় দিতেই হবে। কারণ আজকে যারা আওয়ামী লীগ সরকারে বিরুদ্ধে ঐক্যে পৌঁছাতে যাচ্ছেন তাদের অনেকের জীবনের বেশি সময় কেটেছে আওয়ামী লীগের পক্ষে কথা বলে। তারাই যখন জামায়াত নিয়ে কথা বলে তখন বিষয়টা ভূতের মুখে রাম নাম ছাড়া অন্য কিছু নয়।

আরইউ/এমএমএ/

Header Ad

'পুনর্জন্ম'র প্রযোজক রূহানের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

'পুনর্জন্ম'র প্রযোজক রূহানের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত

প্রযোজক মাসুদুল মাহমুদ রূহান আর নেই। গতকাল বুধবার রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের একটি বাসা থেকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, আত্মহত্যা করেছেন তিনি।

তরুণ নির্মাতা শ্যামল শিশির তথ্যটি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, হতাশায় ভুগছিলেন রূহান। যা ফুটে উঠেছিল তার ফেসবুক পোস্টে। গত ৪ মে ফেসবুকে সবশেষ পোস্টে লিখেছিলেন, আমার চেনা পৃথিবীর বুকে যেমন তুমি নাই, তোমার বুকেও আমি নাই! তাহলে কেন সেদিন বলেছিলে? আমার সাথেই এই জন্ম কাটিয়ে দেবে? ভুল বুঝিও না। আমি দোষ দিচ্ছি না। জাস্ট বললাম আর কি!

জানা যায় ২০২০ সালে বিয়ের পিঁড়িতে বসেন রুহান। তবে টেকেনি সেই বিয়ে। সম্প্রতি হয় বিচ্ছেদ। বিষয়গুলো নিয়ে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন এ প্রযোজক। ভর করেছিল হতাশা।

বেশকিছু প্রশংসিত নাটক-সিরিজের প্রযোজক রূহান। স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম চরকির জনপ্রিয় ‘রেডরাম’ চলচ্চিত্রের প্রযোজনা করেছেন তিনি। এ ছাড়া ‘পুনর্জন্ম’, ‘চম্পা হাউজ’, ‘শুক্লপক্ষ’, ‘দ্য সাইলেন্স’, ‘আরারাত’র মতো জনপ্রিয় নাটক-সিরিজে ছিলেন নির্বাহী প্রযোজক হিসেবে।

জানা গেছে, বর্তমানে মর্গে আছে রূহানের মরদেহ। সেখানে প্রয়োজনীয় কাজ শেষে চিরতরে ঢাকা ছাড়বেন তিনি। রংপুর নিয়ে যাওয়া হবে তার মরদেহ।

নায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা: আজিজ মোহাম্মদ ভাইসহ তিনজনের যাবজ্জীবন

নব্বই দশকের চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা মামলায় ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই ওরফে আব্দুল আজিজসহ তিনজনের বিরুদ্ধে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। এছাড়া অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমনসহ ছয়জনকে খালাস দিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (৯ মে) দুপুর ১২টায় ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক আরুণাভ চক্রবর্ত্তী এ রায় ঘোষণা করেন। এর আগে গত ২৯ এপ্রিল রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে এ মামলায় রায় ঘোষণার আজ দিন ধার্য করেন আদালত।

দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- ট্রাম্পস ক্লাবের মালিক আফাকুল ইসলাম ওরফে বান্টি ইসলাম, ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই ওরফে আব্দুল আজিজ ও আদনান সিদ্দিকী।

কারাদণ্ডের পাশাপাশি তাদের প্রত্যেককে ২ লাখ টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া বাকি ৬ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত তাদের খালাস দিয়েছেন।

খালাস প্রাপ্তরা হলেন- তারেক সাঈদ মামুন, সেলিম খান, ফারুক আব্বাসী, হারুন অর রশীদ ওরফে লেদার লিটন, দুই শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমন, আশিষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরী।

বিচারক রায়ে বলেন, এ মামলার সিডি (কেইস ডকেট) পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হয় সিডি গায়েব করা হয়েছে। আদনান সিদ্দিকী ঘটনাস্থল থেকে ধরা পড়েন। তিনি সাক্ষ্য দিয়েছেন তবে তা অনেকটা গাঁ বাঁচিয়ে দেওয়ার মতো। সোহেল চৌধুরী কোনও অখ্যাত ব্যাক্তি ছিলেন না অথচ তিনি খুন হলেন। ট্রাম্পস ক্লাবের ম্যানেজার বলেছেন জেনেছি সোহেল চৌধুরী নামে একজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। অথচ এ ঘটনায় আহত অপর একজনকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। যারা পুলিশের কাছে সাক্ষ্য দিয়েছেন তাদের অনেকেই মারা গেছেন তাই তাদের পরীক্ষা করা সম্ভব হয়নি। জবানবন্দি গ্রহণ করা ম্যাজিস্ট্রেটরাও আদালতে সাক্ষ্য দিতে আসেননি। যারা সাক্ষ্য দিয়েছেন তারাও পক্ষপাতদুষ্ট ও সত্য গোপনের চেষ্টা করেছেন।

তিনি বলেন, এত বছর ধরে মামলার বিচার না হওয়ায় মানুষের মধ্যে বিরুপ প্রভাব পড়ে। প্রতিটি মৃতের আত্মা বিচার চায়। আদনান সিদ্দিকী কয়েকজনের নাম বলেছেন নিজের গাঁ বাঁচিয়ে। যে নিজের গাঁ বাঁচিয়ে সাক্ষ্য দিতে পারে সে অন্যের নামও অসত্য বলতে পারে। তবে যাদের নাম বলেছে তাদের কাছ থেকে কোনো রিকোভারি হয় নাই। তারা যে সেখানে ছিল সেটা বিশ্বাস করার কারণ থাকা সত্ত্বেও যাদের নাম বলেছে আদনান সিদ্দিকী তাদের মধ্যে একজনও যদি সেখানে না থাকে বা একজনের নাম অন্তর্ভুক্ত করে থাকে তাহলে তার ভাষ্য অনুযায়ী আসামিদের গুরুদণ্ড দেওয়া ঠিক হবে না।

এছাড়া আসামি আফাকুল ইসলাম ওরফে বান্টি ইসলাম, আজিজ মোহাম্মদ ভাই ওরফে আব্দুল আজিজ ও আদনান সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রাপ্ত সাক্ষ্য পারিপার্শ্বিক সাক্ষ্যে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়। বান্টির বক্তব্যে ইমন ও আশীষ রায় চৌধুরীর নাম এলেও ঘটনাস্থলে তাদের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়নি বিধায় তাদের খালাস দেওয়া হলো।

১৯৯৮ সালের ১৭ ডিসেম্বর রাজধানীর বনানীতে ট্রাম্পস ক্লাবের নিচে সোহেল চৌধুরীকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তার ভাই তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী গুলশান থানায় মামলা করেন। সোহেল চৌধুরী নিহত হওয়ার পরপরই এই হত্যাকাণ্ডে চলচ্চিত্র প্রযোজক ও ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সম্পৃক্ততার অভিযোগ উঠে।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, হত্যাকাণ্ডের কয়েক মাস আগে আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সঙ্গে সোহেল চৌধুরীর কথা-কাটাকাটি হয়। এর প্রতিশোধ নিতে সোহেল চৌধুরীকে হত্যা করা হয়। ঘটনার রাতে সোহেল তার বন্ধুদের নিয়ে ট্রাম্পস ক্লাবে ঢোকার চেষ্টা করেন। তাকে ভেতরে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। রাত আড়াইটার দিকে আবারও তিনি ঢোকার চেষ্টা করেন। তখন সোহেলকে লক্ষ্য করে ইমন, মামুন, লিটন, ফারুক ও আদনান গুলি চালান।

মামলাটির তদন্ত শেষে ১৯৯৯ সালের ৩০ জুলাই গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার আবুল কাশেম ব্যাপারী নয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০০১ সালের ৩০ অক্টোবর ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। এর দুই বছর পর মামলাটির বিচার দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য ঢাকার দুই নম্বর দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়।

মামলা দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আসামি আদনান সিদ্দিকী ২০০৩ সালের ১৯ নভেম্বর হাইকোর্টে রিট করেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট ২০০৪ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুলসহ আদেশ দেন। বিচারপতি মো. রূহুল কুদ্দুস এবং বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর তৎকালীন ডিভিশন বেঞ্চ শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ৫ আগস্ট রায় দেন। রায়ে রুলটি খারিজ করে দেওয়া হয়। এবং হাইকোর্টের দেওয়া স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করা হয়।

সবশেষ ২০২২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি মামলার নথি বিচারিক আদালতে ফেরত আসলে সাক্ষ্যগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরুর উদ্যোগ নেন বিচারিক আদালত। বিচার চলাকালে ১০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত।

চট্টগ্রামে বিধ্বস্ত হওয়া প্রশিক্ষণ বিমানের এক পাইলট নিহত

নিহত পাইলট অসীম জাওয়াদ। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামে বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় অসীম জাওয়াদ নামে এক পাইলট মারা গেছেন। এ ঘটনায় আহত কো-পাইলট উইং কমান্ডার সোহান চিকিৎসাধীন।

বৃহস্পতিবার (৯ মে) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পতেঙ্গার বানৌজা ঈসা খাঁ হাসপাতালে (নেভি হাসপাতাল) তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নগর পুলিশের উপকমিশনার (বন্দর) শাকিলা সুলতানা।

তিনি বলেন, বিধ্বস্ত প্রশিক্ষণ বিমানের পাইলট ও কো-পাইলট প্যারাসুট দিয়ে নেমে এলে তাদের উদ্ধার করে বানৌজা ঈসা খাঁ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অসীম জাওয়াদ নামে একজনের মৃত্যু হয়। অন্যজনের অবস্থা মোটামুটি ভালো।

এর আগে এক বার্তায় আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানায়, বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি ইয়াক-১৩০ (YAK 130) প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। পরে বিমানের দুজন পাইলটকে উদ্ধার করা হয়।

জানা গেছে, বিমানটি উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পরে এটিতে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। একপর্যায়ে বিমানটিতে আগুন ধরে যায়। এসময় বিমানে থাকা দুজন পাইলট প্যারাশুট দিয়ে নেমে যান। একপর্যায়ে বিমানটি কর্ণফুলী নদীতে বিধ্বস্ত হয়।

দুর্ঘটনাস্থলের পাশেই সার্জেন্ট জহুরুল হক বিমান ঘাঁটির অবস্থান। দুর্ঘটনাকবলিত বিমানটি সেখান থেকে উড়াল দিয়েছিল বলে জানা গেছে।

সর্বশেষ সংবাদ

'পুনর্জন্ম'র প্রযোজক রূহানের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
নায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা: আজিজ মোহাম্মদ ভাইসহ তিনজনের যাবজ্জীবন
চট্টগ্রামে বিধ্বস্ত হওয়া প্রশিক্ষণ বিমানের এক পাইলট নিহত
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের বৈঠক
২১৮ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১২ রানেই অলআউট
পতেঙ্গায় বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত
সন্ধ্যার মধ্যে ৬ অঞ্চলে ঝড়-বৃষ্টির আভাস, কমবে তাপমাত্রা
ব্রাজিলে ভয়াবহ বন্যায় নিহত বেড়ে ১০০, নিখোঁজ শতাধিক
বায়ার্নকে কাঁদিয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদ
চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলার রায় আজ
৫ ঘণ্টা পর ঢাকার সঙ্গে উত্তরবঙ্গের রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক
হজের প্রথম ফ্লাইটে ঢাকা ছাড়লেন ৪১৯ হজযাত্রী
প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনে জয়ী হলেন যারা
বগি লাইনচ্যুত: ঢাকার সঙ্গে উত্তরবঙ্গের রেল যোগাযোগ বন্ধ
ফুলছড়ি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন আবু সাঈদ
গণমাধ্যমের তথ্য প্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিত করা হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
দুই দিনের ঢাকা সফরে এসেছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব
ছেলে-পুত্রবধূর অপমান সইতে না পেরে বৃদ্ধ মা-বাবার বিষপান
৪৬তম বিসিএস প্রিলির ফল প্রকাশ হতে পারে আগামীকাল
জনগণের কষ্ট লাঘবে সরকার সবসময় সচেষ্ট: প্রধানমন্ত্রী