শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪ | ২৬ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সমন্বিত সহযোগিতা প্রয়োজন

বর্তমানে বাংলাদেশের আশ্রয়শিবিরগুলোতে সাড়ে ১২ লাখ নিবন্ধিত রোহিঙ্গা বসবাস করছে। দীর্ঘ ছয় বছর ধরে বাংলাদেশ এই বোঝা টেনে চলছে যা শেষ হওয়া জরুরি। এর আগে দু’বার প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও রোহিঙ্গাদের অনীহা ও রাখাইন রাজ্যের নিরাপত্তা পরিস্থিতির কারণে তা বাস্তবায়িত হয়নি।

বৈশ্বিক সংকটের কারণে দাতাসংস্থা ও দেশগুলোর ত্রাণ তহবিলে চাপ পড়ায় রোহিঙ্গাদের জন্য সাহায্যের পরিমাণ কমে এসেছে এবং তা আগামীতে আরও কমে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি করছে। আন্তর্জাতিক সহায়তা কমে যাওয়ায় রোহিঙ্গাদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। ত্রাণ সহায়তা কমে গেলে বাংলাদেশের একার পক্ষে এই বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে অনির্দিষ্টকালের জন্য খাদ্য ও আশ্রয় দেওয়া সম্ভব হবে না। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নিরাপত্তা পরিস্থিতিও দিনদিন খারাপ হচ্ছে এবং স্থানীয় জনগণের সাথে রোহিঙ্গাদের সম্পর্কের অবনতি ঘটছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে সংঘটিত নানা ধরনের অপরাধ বাংলাদেশ ও আঞ্চলিক নিরাপত্তায় হুমকির সৃষ্টি করছে এবং ক্যাম্পের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যয় বাড়ছে যা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে চাপ ফেলছে। বাংলাদেশ সরকার বন্ধু রাষ্ট্র এবং দাতাসংস্থাগুলোর কাছে এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আর্থিক সহায়তা চেয়েছে যা এখনো পাওয়া যায়নি।

সম্প্রতি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে উদ্যোগী হয়ে মিয়ানমার গত ৮-৯ মার্চ সেদেশে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতসহ ৮ দেশের ১১ জন কূটনীতিককে মিয়ানমারের মংডু ও সিতওয়ে শহরে রোহিঙ্গাদের জন্য নির্মিত অর্ন্তবর্তীকালীন ক্যাম্পসহ আশপাশের এলাকা সরেজমিনে দেখাতে নিয়ে যায়। এরপর, ১৫ মার্চ মিয়ানমারের ২২ সদস্যের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশের কক্সবাজারে এসে ১৭৭টি পরিবারের ৪৮০ জন রোহিঙ্গার তথ্য যাচাই করে। ১৮ এপ্রিল কুনমিংয়ে চীনের মধ্যস্থতায় বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় এবং এর অংশ হিসেবে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের তৃতীয় এই উদ্যোগ নেওয়া হয়। এই বৈঠকের পর মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের পরিবেশ প্রত্যাবাসন উপযোগী কি না তা দেখার জন্য ২০ জন রোহিঙ্গাসহ ২৭ সদস্যের একটি প্রতিনিধি গত ৫ মে সেখানে যায়। রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদলের সদস্যদের মংডু শহরের আশপাশের ১৫টি গ্রাম, পুনর্বাসনকেন্দ্র, ট্রানজিট কেন্দ্রসহ নানা অবকাঠামো দেখানো হয়েছে। তাদের সাথে যাওয়া শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানায় যে, তারা মংডু শহর ও গ্রামে গিয়ে সেখানকার রোহিঙ্গাদের সাথে কথা বলেছে, সেখানকার পরিবেশ অনেক ভালো। মংডু শহরে রোহিঙ্গারা অবাধে ঘুরছে ও কাজকর্মে ব্যস্ত রয়েছে। তিনি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে আশাবাদী। রোহিঙ্গাদের আত্মবিশ্বাস বাড়াতে তাদের সরেজমিনে পরিস্থিতি দেখাতে এই সফরের ব্যবস্থা করা হয়। এর ধারাবাহিকতায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের পাইলট প্রকল্প নিয়ে আলোচনা করতে মিয়ানমারের একটি প্রতিনিধিদল মে মাসে বাংলাদেশ সফরে আসবে। সেসময় প্রতিনিধিদলটি প্রত্যাবাসন নিয়ে আস্থা বাড়াতে কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে আলোচনা করবে। সবকিছু ঠিকমত চললে মে মাসে ১ হাজার ১৭৬ জন রোহিঙ্গার প্রথম দলটি নিয়ে প্রত্যাবাসন শুরু করতে চায় চীন ও মিয়ানমার। এ বছর আরও ৫ ধাপে প্রতিবারে ১ হাজার ২০০ জন করে ৬ হাজার রোহিঙ্গাকে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে রাখাইনে ফিরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। এই পাইলট প্রকল্প নির্বিঘ্নে বাস্তবায়নের জন্য প্রত্যাবাসন ও অভ্যর্থনা কেন্দ্রগুলোতে আসিয়ান, ইউএনডিপি ও ইউএনএইচসিআরের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবে বলে জানা যায়। বর্তমান প্রত্যাবাসন উদ্যোগ ও সম্ভাব্য ছয় হাজার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন করা সম্ভব হলে পরবর্তী করণীয় ঠিক করতে আগামী ডিসেম্বরে আরেকটা বৈঠক হবে।

মিয়ানমারের সামরিক জান্তার ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে চীন কয়েক মাস ধরে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে তৎপর হয়ে উঠেছে। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে চীনের বিশেষ দূত দেং সি জুন মিয়ানমার সফর করে। গত ৬ এপ্রিল তিনি ঢাকায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রসচিবের সাথে দেখা করেন। বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন জানায় যে, চীন রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন ত্বরান্বিত করতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে ‘অবিচলভাবে মধ্যস্থতা’র কাজ করছে এবং প্রত্যাবাসনই রোহিঙ্গা সমস্যার একমাত্র সমাধান। চীনের রাষ্ট্রদূত আশা করে যে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন এবং বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের যৌথ প্রচেষ্টায় একটি টেকসই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু হবে এবং তা হওয়া উচিত। পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলছেন যে, গত পাঁচ-ছয় মাসে মিয়ানমার পক্ষের ইতিবাচক মনোভাব দেখা যাচ্ছে, এ অবস্থা অপরিবর্তিত থাকলে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন দ্রুত হবে বলে আশা করা যায়। ৪ মে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয় যে, চীন বাংলাদেশের সঙ্গে মিয়ানমারের আরও বন্ধুত্বপূর্ণ ও সহযোগিতামূলক দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক চায়।

রাখাইনের পরিস্থিতি বুঝতে হলে রোহিঙ্গাদেরকে এই প্রত্যাবাসনের উদ্যোগকে স্বাগত জানানো প্রয়োজন নচেৎ এই সংকট আরও দীর্ঘায়িত হবে যা কারো কাম্য নয়। অনির্দিষ্টকাল বাংলাদেশে থেকে রোহিঙ্গাদের পক্ষে মিয়ানমারের সুযোগ সুবিধা ও নাগরিকত্ব নিশ্চিত করা বাস্তবসম্মত হবে না— কারণ গত ছয় বছরে তা সম্ভব হয়নি। রোহিঙ্গাদেরকে মিয়ানমারে ফিরে গিয়ে সেখানকার পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে এবং স্থানীয় জনগণের সাথে সুসম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সংস্থা ও জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে তাদের অধিকার আদায়ের প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। রাখাইনদের সাথে মিলেমিশে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে যুগ যুগ ধরে বসবাস করতে হবে তাই তাদেরকে সেভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে। মংডুতে রোহিঙ্গাদের স্বাধীন ব্যবসা–বাণিজ্য এবং মডেল ভিলেজ প্রতিষ্ঠার বিষয়ে কক্সবাজারের আশ্রয়শিবিরে থাকা রোহিঙ্গাদের সচেতন করা গেলে প্রত্যাবাসনে তাদের আগ্রহ বাড়বে বলে আশা করা যায়।

রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরার পর তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জাতিসংঘ, আসিয়ান বা বাংলাদেশের বন্ধু কোনো রাষ্ট্রের উপস্থিতির প্রয়োজন হবে কি না কিংবা তাদের ভূমিকা কী হবে সে বিষয়ে সুষ্পষ্ট কিছু জানা যায়নি। আসিয়ান মিয়ানমারে মানবিক সহায়তা প্রদান অব্যাহত রাখার জন্য একটি মূল্যায়ন প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করার কাজ করছে। এর মাধ্যমে কতজন মানুষের সাহায্যের প্রয়োজন, কোথায় এবং কি সাহায্যের প্রয়োজন তা অন্তর্ভুক্ত থাকবে। রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফিরে গেলে তাদেরকেও এই উদ্যোগের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

দূরদৃষ্টি সম্পন্ন রোহিঙ্গা নেতাদের সাথে নিয়ে রোহিঙ্গাদের এই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণে উদ্বুদ্ধ করতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া দরকার। এই প্রেক্ষিতে দাতাগোষ্ঠী ও রোহিঙ্গা স্বার্থরক্ষায় কর্মরত সংস্থাগুলো ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসতে হবে। নিজেদের মধ্যে প্রয়োজনীয় সমন্বয়ের মাধ্যমে তারা এই কার্যক্রমে সহায়তা করতে সক্ষম।

বাংলাদেশ চলমান এই দীর্ঘমেয়াদী মানবিক সংকট উত্তরণে দায়িত্ববোধের পরিচয় দিয়েছে। সবদিক বিবেচনা করে পরিবারভিত্তিক এই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া রোহিঙ্গাদেরকে তাদের নিজ দেশে ফিরে যেতে আত্মবিশ্বাস যোগাবে এবং একটা আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি হবে। এই চলমান উদ্যোগে জাতিসংঘ এবং পশ্চিমা দেশগুলোকে সাথে নেওয়া না হলেও জাপানের সাথে মিয়ানমারের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকায় জাপান প্রত্যাবাসন সংক্রান্ত এই মানবিক উদ্যোগে পশ্চিমা বিশ্বের মুখপাত্র হিসেবে সমন্বয়কের কাজ করতে পারে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হওয়ার পর প্রথম দলের মিয়ানমারে অবস্থানকালীন কী সমস্যা হচ্ছে সেটা জেনে এই প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের বিষয়ে ধারণা পাওয়া যাবে।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে রাখাইনের জনগনের সাথে রোহিঙ্গাদের সুসম্পর্ক স্থাপন ও সহবস্থান নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার ব্যাপারে কাজ করতে হবে। ২০১৭ সালে মিয়ানমার সরকার, রাখাইনের জনগণ ও রাজনৈতিক দলগুলোর রোহিঙ্গাদের প্রতি যে কট্টর মনোভাব ও বিরূপ ধারণা ছিল গত ছয় বছরে তা কিছুটা হলেও ইতিবাচক হয়েছে যা আরাকান আর্মি ও এন ইউ জি’র বক্তব্য থেকে জানা যায়। রাতারাতি এই মনোভাব পরিবর্তন সম্ভব না তবে ইতিবাচক দিকে তা চলমান থাকলে একদিন তা বদলে যাবেই।

ইউএনএইচসিআর রোহিঙ্গাদেরকে আত্মনির্ভর হওয়ার জন্য প্রশিক্ষণ চলমান রাখবে বলে জানিয়েছে যা তাদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধি করে রখাইনের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখতে সহায়তা করবে। রাখাইনের আর্থিক ও সামাজিক পরিস্থিতির উন্নতি হলে সেখানে কর্ম পরিবেশ সৃষ্টি হবে, অর্থনৈতিক স্বাচ্ছন্দ্য ফিরে এলে এই দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে বিরাজমান বৈরি মনোভাব কমে যাবে। এই পরিবেশ দ্রুত সৃষ্টি করতে হলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তা জরুরি। রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফিরে গেলে দাতাগোষ্ঠী ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে প্রথম দিকে আরাকানে তাদের এই কর্মকাণ্ড চালিয়ে যেতে হবে। আশা করা যায় যে, মিয়ানমার সরকার ও আরাকানের রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সেখানে মানবিক কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়ে তারা তাদের চুক্তি নবায়ন করে কিংবা নতুন করে চুক্তি করে মানবিক সাহায্য প্রদান অব্যাহত রাখবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে সবাইকে যার যার অবস্থানে থেকে এই প্রক্রিয়ায় কীভাবে সহায়তা করা যায় সে বিষয়ে সর্বতোভাবে চেষ্টা করতে হবে।

পাইলট প্রকল্পটি যেভাবে শুরু হয়েছে সেই পথ অনুসরণ করে এই প্রক্রিয়া যেন সফলতার মুখ দেখে এবং বাংলাদেশে অবস্থানরত ১.২ মিলিয়ন রোহিঙ্গা স্বেচ্ছায় তাদের নিজ বাসভূমে ফিরে যেতে পারে তার জন্য সকল পক্ষকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে। বৈশ্বিক এই সংকট বৈশ্বিকভাবে মোকাবিলা করা হোক এবং বাংলাদেশকে এই সংকট থেকে পরিত্রাণের জন্য সবার আন্তরিক সমর্থন প্রয়োজন।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) হাসান মো. শামসুদ্দীন: মিয়ানমার ও রোহিঙ্গাবিষয়ক গবেষক

আরএ/

Header Ad

রাফায় বড় অভিযান হলে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ: বাইডেন

ছবি: সংগৃহীত

গাজার শহর রাফায় ইসরাইল বড় ধরনের স্থল অভিযান চালালে যুক্তরাষ্ট্র দেশটিকে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করে দেবে বলে সতর্ক করেছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি ইসরাইলকে এমন হুঁশিয়ারি দেন।

গতকাল বুধবার প্রচারিত সাক্ষাৎকারে বাইডেন বলেছেন, ‘যদি তারা রাফায় হামলা চালায়, তাহলে সেখানে এখন পর্যন্ত যে ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে, এমন অস্ত্র আর আমরা সরবরাহ করবো না। আমরা অস্ত্র ও আর্টিলারি শেল সরবরাহ করবো না।’ খবর বিবিসি’র।

যদিও যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলের ‘পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত’ করা চালিয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন বাইডেন।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের সরব বিরোধিতা সত্ত্বেও ইসরাইল রাফাহতে একটি বড় আকারের আগ্রাসন চালাতে প্রস্তুত বলে মনে হচ্ছে।

দক্ষিণ গাজার ঘনবসতিপূর্ণ এ এলাকা হামাসের শেষ প্রধান শক্ত ঘাঁটি। যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা সতর্ক করেছেন যে, গাজার অন্যান্য শহর থেকে আসা উদ্বাস্তুদের কারণে পূর্ণ এ শহরে এখন অভিযান চালালে ব্যাপক পরিমাণ বেসামরিক মানুষ হতাহতের ঘটনা ঘটবে।

বাইডেন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র রাফাহর বর্তমান পরিস্থিতিকে স্থল অভিযান হিসেবে সংজ্ঞায়িত করেনি। তারা জনবহুল এলাকাগুলোতে যায়নি। তারা যা করেছে, সেটা সীমান্তে।

বাইডেন জানান, তিনি ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও যুদ্ধকালীন মন্ত্রীসভাকে পরিষ্কার করে জানিয়েছেন যে তারা যদি জনবহুল এলাকায় যায়, তবে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন পাবে না।

এ সাক্ষাৎকারে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র ইসরাইল গাজার বেসামরিক মানুষ হত্যায় ব্যবহার করেছে বলে স্বীকার করেছেন বাইডেন। তবে, ইসরাইল ‘রেড লাইন’ অতিক্রম করেছে কি না- জানতে চাইলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘এখনও নয়’।

রাফাহতে সম্ভাব্য স্থল অভিযানের বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্টের এসব মন্তব্য এখন পর্যন্ত সবচেয়ে শক্তিশালী সতর্কবার্তা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এবং প্রথমবারের মতো তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলে অস্ত্রের চালান বন্ধ করতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যেই ইসরাইলে হাজার হাজার বোমার চালান আটকে রেখেছে এবং ভবিষ্যতে সরবরাহের বিষয়টি তারা পর্যালোচনায় রাখছে।

বুধবার প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন সিনেটের সামনে সাক্ষ্য দেয়ার সময় পশ্চিমা সামরিক অস্ত্রাগারের সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক কিছু অস্ত্র ও বোমার চালান সরবরাহ বিলম্বের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তবে, যুক্তরাষ্ট্র যে অস্ত্র সরবরাহ আটকে রেখেছে, তা ভবিষ্যতে সরবরাহের জন্য। ফলে এই পদক্ষেপের কারণে তাৎক্ষণিক প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা কম। কিন্তু, ইসরাইল যে হারে এখন বোমা বর্ষণ করছে, তাতে নিকট ভবিষ্যতের হামলাগুলোতেই এর প্রভাব পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।

ইসরাইল সরকার যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপে হতাশা প্রকাশ করেছে। ইসরাইলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, দুই দেশ এসব মতবিরোধ ‘বন্ধ দরজার আড়ালে’ সমাধান করবে।

গাজায় অনবরত বেসামরিক লোকের মৃত্যু ও মানবিক পরিস্থিতি ক্রমাগত খারাপ হওয়ায় ইসরাইলি অভিযানে লাগাম টানতে ডেমোক্র্যাট ও যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের একাংশের অভ্যন্তরীণ চাপের মুখে পড়েছেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন।

বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীর বাসভবন এলাকায় লোডশেডিংয়ের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

ছবি: সংগৃহীত

চলছে বিদ্যুৎ সংকট। রাজধানীর চেয়েও বেশি সংকট গ্রামে। এই সংকটের মধ্যেই বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের বাসভবন এলাকায় লোডশেডিংয়ের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বৃহস্পতিবার (৯ মে) সন্ধ্যায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদে চলমান দ্বিতীয় অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে এ কথা জানান তিনি। অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদন বহুমুখী করছে সরকার। হ্যাঁ, গেল কিছুদিন তীব্র গরমে কিছুটা লোডশেডিং হয়েছে। আমরা তা স্বীকার করি। আমি নির্দেশ দিয়েছি লোডশেডিং গ্রামে নয়, এখন থেকে বিদ্যুৎ সংকটে লোডশেডিং হবে গুলশান-বনানীতে। বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীর বাসভবন এলাকায়ও লোডশেডিংয়ের নির্দেশ দিয়েছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদনে বিশেষ আইন নিয়ে সমালোচনা কেন? পৃথিবীতে এমন কোনো দেশ নেই, যারা ক্যাপাসিটি পেমেন্ট ছাড়া বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করেছে। কিন্তু প্রতিদিন এটা নিয়ে চিল্লাচিল্লি শুনি। ওই আইনে কাউকে দায়মুক্তি দেয়া হয়নি।

সামিটের বিলম্ব বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য জরিমানা আদায় হয়েছে বলেও জানান এই সংসদ নেতা। তিনি বলেন, বিশেষ আইন নিয়ে যারা কথা বলছেন, সমালোচনা করছেন তারা অর্বাচীন।

রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ নিয়ে সমালোচনা হয় জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, অথচ সেটাই সবচেয়ে ক্লিন বিদ্যুতের সোর্স। রূপপুরে আরও একটি পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হবে।

নবাবগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ১৩ প্রার্থীর মনোনয়ন দাখিল

ছবি: সংগৃহীত

দিনাজপুরের নবাবগঞ্জে উপজেলায় ষষ্ঠ পরিষদ নির্বাচনে তৃতীয় ধাপে চেয়ারম্যান পদে ৩ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ জনসহ মোট ১৩ জন প্রার্থী অনলাইনে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।

বৃহস্পতিবার (৯ মে) উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, চেয়ারম্যান পদে ৩ জন প্রার্থী হলেন, নবাবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. তাজওয়ার মোহাম্মদ ফাহিম (নাইন্টি), বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. আতাউর রহমান ও স্বতন্ত্র প্রার্থী নিজামুল হাসান।

ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬ জন প্রার্থী হলেন- আফতাবুজ্জামান, গোলাম ফিরোজ করিব, মো. আইনুল হক চৌধুরী, আব্দুর রাজ্জাক, আজিজার রহমান ও ওয়ায়েস করুনী।

মহিলা ভাই চেয়ারম্যান পদে ৪ জন হলেন- বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান পারুল বেগম, শিউলি বেগম, শাবানা খাতুন ও শেফালী বেগম রেখা মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।

আগামী ৫ জুন ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এবার নির্বাচনে উপজেলার ৭৩টি ভোট কেন্দ্রে নবাবগঞ্জ উপজেলার সাধারণ ভোটাররা গোপন ব্যালোটের মাধ্যমে তারা তাদের মতামত প্রকাশ করবেন। এবার উপজেলার মোট ভোটার সংখ্যা এক লক্ষ ৯৪ হাজার ৭৫ জন। পুরুষ ভোটার ৯৭ হাজার ৮শত ৩৩ জন, মহিলা ভোটার ৯৬ হাজার ২৩৮ জন ও তৃতীয় লিঙ্গের ৪ জন ।

নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার জানান, অবাধ সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ণ গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে আমরা ইতিমধ্যে সব ধরনের কার্যক্রম সম্পূর্ণ করেছি। আমরা নবাবগঞ্জ উপজেলাবাসীকে একটি সুন্দর নির্বাচন উপহার দিতে পারবো।

সর্বশেষ সংবাদ

রাফায় বড় অভিযান হলে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ: বাইডেন
বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীর বাসভবন এলাকায় লোডশেডিংয়ের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
নবাবগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ১৩ প্রার্থীর মনোনয়ন দাখিল
ভবিষ্যতে শতভাগ কানেক্টিভিটি তার ভূগর্ভে স্থাপন করা হবে: পলক
নয়া সরকারের ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম বাজেট ঘোষণা ৬ জুন
প্রকল্প-স্থাপনায় ‘শেখ হাসিনা’ নাম না রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
প্রথম ধাপে ১৩৯ উপজেলায় ভোট পড়েছে ৩৬.১ শতাংশ
৪৬তম বিসিএসের প্রিলির ফল প্রকাশ, উত্তীর্ণ ১০৬৩৮
ইউরোপে ছড়িয়ে পড়েছে ইসরাইলবিরোধী বিক্ষোভ
নওগাঁয় বজ্রপাতে ধানকাটা শ্রমিকের মৃত্যু
ভারত-কানাডা দ্বন্দ্ব চরমে, পাল্টাপাল্টি হুঁশিয়ারি
জামিন পেলেন না মিল্টন সমাদ্দার
চীনের আগে ভারত সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী : হাছান মাহমুদ
গাজায় আরো এক গণকবরের সন্ধান, ৪৯ মরদেহ উদ্ধার
মংডুতে তুমুল সংঘর্ষ, টেকনাফ সীমান্তে ফের আতঙ্ক
ভারতে বেড়েছে মুসলিম, কমছে হিন্দুদের সংখ্যা: রিপোর্ট
নির্বাচনে হেরে গেলেন সাবেক কৃষিমন্ত্রী রাজ্জাকের খালাতো ও মামাতো ভাই
শুক্রবার টুঙ্গিপাড়ায় যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী
'পুনর্জন্ম'র প্রযোজক রূহানের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
নায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা: আজিজ মোহাম্মদ ভাইসহ তিনজনের যাবজ্জীবন