শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৫ আশ্বিন ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

রেনু থেকে আমাদের বঙ্গমাতা

রেনু গোলাপ গঞ্জের টুঙ্গি পাড়ায় ১৯৩০ সনের ৮ আগস্ট জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি তিন বছর বয়সে বাবাকে হারান, মাকে হারান পাঁচ বছর বয়সে। তিনি দাদার আদরে বড় হয়েছেন এবং দাদা তার দুই নাতনিকে সম্পত্তি লিখে দিয়ে যান। বঙ্গবন্ধুর মাতা ও পিতা বাবা-মা হারা পুত্রবধু রেনুকে তাদের কাছে নিয়ে এনে পরম আদর-যত্নে বড় করতে থাকেন। তাদের স্নেহ-মমতায় রেনুকে পিতা-মাতার অভাব তেমন অনুভব করতে হয়নি। সকলের প্রিয় রেনু বঙ্গবন্ধুর ভাই-বোনদের সঙ্গে একই পরিবারিক আদর্শ বেড়ে উঠেন।

রেনুর শ্বশুর-শাশুড়ি তাদের ছেলে সম্পর্কে জানতেন। তার রাজনৈতিক আদর্শ, দেশপ্রেমের বিষয়টি তারা বুঝতেন। তিনি যে একদিন বাংলার কাণ্ডারি হবেন, এতে তাদের কারোরই কোনো সন্দেহ ছিল না। এমন একজন ব্যক্তির জন্য যে উপযুক্ত জীবনসঙ্গী সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন, সেটিও তারা ভালোভাবেই বুঝেছিলেন। আর সে লক্ষ্য নিয়েই বঙ্গবন্ধুর পিতা-মাতা পুত্রবধূ রেনুকে শৈশব থেকেই বঙ্গবন্ধুর মতো দেশপ্রেমিক নেতার উপযুক্ত সঙ্গী হিসেবে গড়ে তোলেন। রেনুও তার পরবর্তী জীবনে সে যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছেন।

বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কলামিস্ট বেবী মওদুদ ‘বঙ্গবন্ধুর জীবনে মাইলস্টোনে ফজিলাতুনেসা রেনু’ নিবন্ধে উল্লেখ করেছেন, বঙ্গবন্ধুর জীবনসঙ্গী ফজিলাতুন নেসা রেনু শৈশবে বাবা-মা হারালে বঙ্গবন্ধুর মা তাকে পুত্রবধূ করে নিজের কাছে রেখে শিক্ষা-দীক্ষায় উপযুক্ত করে গড়ে তোলেন। গ্রামে জন্ম, গ্রামীণ জীবনধারায় লালিত-পালিত হলেও দিনে দিনে রেনু একজন আদর্শ ও মমতাময়ী নারীর প্রতিকৃতি হয়ে ওঠেন। শৈশব থেকেই বঙ্গবন্ধুর প্রতি তার ভালোবাসা, শ্রদ্ধা- আস্থা এতটাই গভীর ছিল যে, তিনি নীরবে নিভৃতে বঙ্গবন্ধুর চিন্তা- ভাবনার অংশীদার হয়ে উঠেছিলেন। পরম প্রিয় ভালোবাসার এই জীবনসঙ্গীকে শেখ মুজিব তার জীবনের সব খুঁটিনাটি কথা শোনাতেন। তার রাজনৈতিক দর্শন ও স্বপ্নের বিশ্বস্ত সঙ্গী হিসেবে প্রস্তুত করে তোলেন। রেনু ছিলেন অসীম ধৈর্য, উপস্থিত জ্ঞানসম্পন্ন এক প্রেমিময়ী স্ত্রী ও মমতাময়ী জননী। পুত্রবধূ হিসেবে রেনু তার শ্বশুর-শাশুড়ির কাছ থেকে জীবন চলার এই পাঠকে অত্যন্ত যোগ্যতার সঙ্গে রপ্ত করতে পেরেছিলেন তার স্বভাবাজাত বুদ্ধিমত্তা দ্বারা।

বেবী মওদুদ আরও লিখেছেন, ‘বঙ্গবন্ধুর জন্য, জন্মদাতা পিতা-মাতা স্নেহ, যত্ন ও পরিচর্যা যেমন ছিল, তেমনি তাদের পরে তার জীবনসঙ্গী রেনুর ছিল সজাগ দৃষ্টি। তিনি বঙ্গবন্ধুর মিশন ও ভিশনকে হৃদয় দিয়ে ধারণ করেছিলেন।

বঙ্গমাতা অত্যন্ত ধৈর্যশীল ছিলেন। ছোট্ট রেনুর বিয়ে হলে, বঙ্গবন্ধুর পিতা-মাতা রেনুকে আদর-যত্নে বেড়ে ওঠায় সাহায্য করেন এটি যেমন সত্য, তেমনি রেনু তার দাম্পত্য জীবনে স্বামীকে একটানা কাছে পাননি, এটিও সত্য। স্বামীকে কাছে না পাওয়ার ধৈর্যের পরীক্ষায়ও তিনি উর্ত্তীণ হয়েছেন।

কারাগারে থাকাকালীন অবস্থায় বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা করার জন্য বঙ্গমাতা সন্তানদের নিয়ে কারাগারে যেতেন। কারাগারে সাক্ষাতের সময় অতিক্রান্ত হলেও অবুঝ সন্তানরা বাবাকে ছেড়ে ফিরতে চাইত না। বিশেষ করে শেখ রাসেলের বায়না এবং তাকে বুঝিয়ে বাসায় নিয়ে আসাটা বঙ্গমাতার জন্য যেমন ছিল কষ্টের, তেমনি তারা চলে যাওয়ার পর জেলখানার ছোট্ট একটি কক্ষে রাতযাপন ছিল বঙ্গবন্ধুর জন্য আরো বেদনার। জাতির পিতা এবং বঙ্গমাতা দেশের প্রতি, দেশের মানুষের জন্য যে ত্যাগ করেছেন তার তুলনা তারা নিজেরাই। ইতিহাস খুঁজে দ্বিতীয় পাওয়া যাবে না।

বঙ্গবন্ধু ১৭ বার কারাগারে যান। এই সময়ে দীর্ঘ ৩০৫৩ দিন তাকে কারাগারে থাকতে হয়। নাসিমা বেগম, ‘রেনু থেকে বঙ্গমাতা’। অথচ বঙ্গমাতা রেনুর জীবনে স্বামীকে কাছে না পাওয়ার যে দীর্ঘ সময় কারাগারে থামতে হয়। আমরা দেখতে পেলাম এবং এটি মেনে নিয়ে আমরণ বঙ্গবন্ধুর পাশে ছায়ার মতো থেকে তিনি যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তার কোনো তুলনা নেই। তিনি স্বামীর রাজনৈতিক কর্মকান্ডের কখনো কোনো বিরোধিতা তো করেইনি; বরং তার অনুপস্থিতিতে সংসারের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি স্বামীর খাবার নিয়মিত জেলখানায় পাঠিয়েছেন। কতটা ধৈর্যশীল হলে নিজের চাওয়া-পাওয়া তুচ্ছ করে এ ধরনের সহযোগিতা করা সম্ভব, তা সহজেই অনুমেয়।

বঙ্গমাতা বঙ্গবন্ধুর সকল কাজের প্রেরণাদাত্রী ছিলেন। তিনি বঙ্গবন্ধুকে সাহস দিয়ে, শক্তি দিয়ে এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা দিতেন। তিনি কখনোই বঙ্গবন্ধুকে পেছনে টেনে ধরেননি। তার জীবনে শত যন্ত্রণার ভেতরও ভেঙে পড়েননি। আমরা জানি, বঙ্গমাতা রেনু এবং বঙ্গবন্ধু মুজিবের শৈশব কেটেছে একসঙ্গে। বড় হয়েছেন একই পরিবারে। তাদের স্বভাব ও চরিত্র প্রায় একই। অভিন্ন সামাজিক মূল্যবোধ, মানবিক গুন, শুভবুদ্ধি ও সামাজিক কল্যাণে উদ্বুুদ্ধ ছিলেন দুজনেই। তারা দুজনেই মানুষকে ভালোবেসে অপরের দুঃখ-দুর্দশা লাঘবে সচেষ্টা ছিলেন। মানুয়ের আপদে-বিপদে, রোগে-শোকে তাদের পাশে দাঁড়াতেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমনের ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ এবং ‘কারাগারের রোজনামচা’ গ্রন্থ দুটির রচনা প্রসঙ্গে তার সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন, ‘আমার মায়ের প্রেরণা ও অনুরোধে আব্বা লিখতে শুরু করেন। তিনি যতবার জেলে গেছেন আমার মা খাতা কিনে জেলে পৌঁছে দিতেন। আবার যখন মুক্তি পেতেন, তখন খাতাগুলি সংগ্রহ করে মা নিজের কাছে সযত্নে রেখে দিতেন। তার এই দূরদর্শী চিন্তা যদি না থাকতো তাহলে এই মূল্যবান লেখা আমরা জাতির কাছে তুলে দিতে পারতাম না।’

কারাগারের রোজনামচা’র ভূমিকা লিখতে গিয়ে কন্যা শেখ হাসিনা উল্লেখ করেছেন ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দেবার সঙ্গে সঙ্গে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাকে ৩২ নম্বর ধানমন্ডির বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে পাকিস্তানে নিয়ে যায় এবং কারাগরে বন্দি করে রাখে। এরই একটি পর্যায়ে তারা এক মাসে ১৯ বার জায়গা বদল করেও পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাত থেকে রেহাই পাননি, তারা ধরা পড়ে যান এবং তাদের ধানমন্ডি ১৮ নম্বর থেকে সড়কে (বর্তমানে ৯/এ ২৬ নম্বর বাড়ি) একটি একতলা বাড়িতে বন্দি করে রাখা হয়।

রাজনীতি বঙ্গবন্ধুর জীবনের সঙ্গ এমনভাবে জড়িয়েছিল যে, বারবার তাকে কারাবরণ করতে হতো। আর এ সময় বঙ্গমাতা অত্যন্ত শক্তহাতে দলের হাল ধরতেন। সংসার পরিচালনার পাশাপাশি তিনি দলের নোতাকর্মীদের সঙ্গে যোাগাযোগ রাখা শুরু করতেন। তিনি ধীরস্থির এবং প্রচণ্ড মানসিক শক্তির অধিকারী ছিলেন। বিপদে-আপদে, দুঃখ-বেদনায় কখনো ভেঙে পড়েননি। বরং সেখান থেকে কীভাবে বের হয়ে আসা যায় তার সঠিক পথ তিনি খুঁজে বের করতেন।
বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতা তোফায়েল আহমদ বলেন, বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে অনেক সময়ে দলের নেতাকর্মীরাও গ্রেপ্তার হতেন। যখন মাঠে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো কেউ থাকতো না, বঙ্গমাতা দলের সারথির ভূমিকায় থাকতেন। কারাগারে যতবার তিনি বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা করেছেনম ততবারই তিনি পরিবার-পরিজন নিয়ে কথা বলার আগে দলের সংবাদ পরিবেশন করেছেন। আর বঙ্গবন্ধুর কাছ থেকে প্রাপ্ত বার্তা তিনি গোপনে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নিকট তা পৌঁছে দিতেন। তিনি নিজের ভালো-মন্দের কথা চিন্তা করেন নাই। চিন্তা করেছেন দেশ, জাতিকে নিয়ে। তিনি চিন্তা করেছেন দল, আওয়ামী লীগ- ছাত্রলীগকে নিয়ে। এভাবে তিনি রেনু থেকে হয়ে যান সবার বঙ্গমাতা।

তিনি ছিলেন কোমলে-কঠোর এক শুদ্ধ নারী। প্রচণ্ড আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে সকল করে সকল প্রতিবন্ধকতাকে অতিক্রম করে শুধু এগিয়ে গিয়েছেন। অন্যায়ের কাছে মাথা নত করেননি। চারিত্রিক দৃঢ়তা ও সাহস নিয়ে সকল লোভ-লালসার ঊর্ধ্বে থেকে বাংলা ও বাঙালির আত্মমর্যাদা প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধুর সহযোদ্ধা হিসেবে কাজ করেছেন। রাজনৈতিক পরিবারের মধ্যে থেকে ভালোবেসেছেন সংসার-জীবন। জীবনের আড়ালে লুকিয়ে থাকা দুঃখ-কষ্ট সয়ে জীবন সমর্পিত করেছেন দেশ, মাটি ও মানুষের জন্য। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা, অসামান্য আত্মত্যাগ ও অসাধারণ অবদানের জন্যে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৯৮ সালে শহিদ শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবকে স্বাধীনতা পুরস্কার (মরণোত্তর) প্রদান করা হয়।

বঙ্গমাতা একদিন ড. নীলিমা ইব্রাহিমকে বললেন, “নিজের ভাইকে বানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু আর আমাকে বঙ্গমাতা, বেশ আমি বুঝি ‘বঙ্গবান্ধবী’ হতে পারি না। এতই কী বুড়ো হয়েছি।” তবে রেনু কৌতুক করে যা-ই বলুন না কেন, তিনি আমাদের বঙ্গমাতা থেকে গিয়েছেন এবং থাকবেনও।
বঙ্গবন্ধুর স্বীকারোক্তিতেই আছে। ১৯৭২- এর ২ মার্চ আজিমপুর গার্লস স্কুলে দেওয়া ভাষণে তিনি বলেছিলেন-

“আমি আমার জীবনে দেখেছি আমি বুলেটের সামনে এগিয়ে গেলেও আমার স্ত্রী কোনোদিন বাধা দেননি। আমি দেখেছি ১০/১১ বছর জেলখানায় থাকলেও তিনি কোনোদিন মুখ খুলে প্রতিবাদ করেননি। যদি তিনি তা করতেন তাহলে আমি জীবনে অনেক বাধার মুখোমুখি হতাম। এমন অনেক সময় ছিল যখন আমি জেলে যাবার সময় আমার সন্তানদের জন্য একটি পয়সাও রেখে যেতে পারিনি। আমার নিরন্তর সংগ্রামী জীবনে তার প্রচুর অবদান আছে।”

বঙ্গবন্ধুর নিজের ভাষায় “রেনু আমার পাশে না থাকলে, আমার সব দুঃখ-কষ্ট অভাব অনটন, বারবার কারাবরণ, ছেলে মেয়ে নিয়ে অনিশ্চিত জীবনযাপন হাসিমুখে মেনে নিতে না পারলে আমি আজ বঙ্গবন্ধু হতে পারতাম না।”

রেনু তার জীবনের শেষ অগ্নিপরীক্ষা দিলেন ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। ঘাতকের নির্মম বুলেট কেড়ে নিল বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। বেগম মুজিবকে ঘাতকরা বলল, আমাদের সাথে চলেন। তিনি বললেন, ‘তোমাদের সাথে কোথাও যাব না। তাকে মেরেছে, আমাকেও গুলি কর। আমি এক পা-ও নড়ব না।’ ঘাতকের হাতের বন্দুক গর্জে উঠল। বত্রিশ নম্বরের মেঝেতে লুটিয়ে পড়ল তার দেহে। তার শরীরের রক্ত গড়িয়ে গিয়ে মিশে যায় সিঁড়িতে পড়ে থাকা স্বামী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের রক্তের সাথে। আর সে রক্তের শ্রোতধারা গড়িয়ে মিশে যায় বাংলার মাটিতে।

যিনি বঙ্গবন্ধুর শৈশবের সঙ্গী থেকে জীবনসঙ্গী হয়েছেন। সবশেষে একই সাথে বঙ্গবন্ধুর সাথে মৃত্যুতে আলিঙ্গন করেন। ভাবলে বিস্ময় জাগে এক আটপৌরে সাধারণ চিরায়ত মাতৃরূপে যিনি হাজারো বাঙালি হৃদয়ের মণিকোঠায় স্থান করে আছেন। যতই দিন যাচ্ছে এই মহীয়সী নারীর প্রজ্ঞা এবং সাহসিকতার আলোর বিচ্ছুরণ ঘটছে। তেজস্বিনী অথচ চলনে বলনে এক সাধারণ গৃহবধূ। সেই গৃহবধূ রেনু আজ আমাদের বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব।

ড. মাহবুবা রহমান, সাবেক বিভাগীয় প্রধান, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, লালমাটিয়া সরকারি মহিলা কলেজ, ঢাকা।

এসএন

Header Ad

১৪৯ রানেই অলআউট বাংলাদেশ, ফলো-অন করায়নি ভারত

ছবি: সংগৃহীত

প্রথম ইনিংসে ভারতের করা ৩৭৬ রানের জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমে ১৪৯ রানে অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ। তাতে ফলো অনে পড়েছে নাজমুল হোসেন শান্তর দল।

ভারতের শক্তিশালী বোলিং লাইনের বিপক্ষে দুই সেশনও বোলিং করতে পারল না বাংলাদেশ। তবে বেশিরভাগ উইকেটে ভারতের বোলারদের কৃতিত্বের চেয়ে বাংলাদেশি ব্যাটারদের ভুলটাই ছিল বেশি। ফলাফল, ১৪৯ রানে অলআউট।

চেন্নাই টেস্টের দ্বিতীয় দিনের তৃতীয় সেশনে অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ। ভারতের চেয়ে ২২৭ রানে পিছিয়ে থেকে প্রথম ইনিংস শেষ করেছে টাইগাররা।

দ্বিতীয় দিনের খেলায় মাঠে নেমে ভারতকে ৩৭৬ রানের মধ্যে অলআউট করে বাংলাদেশ। তাসকিন আহমেদের তোপে আগের দিনের ৩৩৯ রানের সঙ্গে ২৭ রান যোগ করতেই অলআউট হয় স্বাগতিকরা।

প্রথম বাংলাদেশি বোলার হিসেবে ভারতের মাটিতে পাঁচ উইকেট নিয়েছেন হাসান মাহমুদ। তাসকিন আহমেদ পেয়েছেন তিন উইকেট।

জবাব দিতে নেমে শুরু থেকেই দিশেহারা বাংলাদেশ। নাজমুল হোসেন শান্ত ছাড়া টপ অর্ডারের কোনো ব্যাটারই দুই অঙ্কে পৌঁছাতে পারেননি। ৪০ রানের মধ্যে ৫ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। জাসপ্রীত বুমরাহ এবং আকাশ দীপের তোপে ৪০ রানে প্রথম ৫ উইকেট হারায় টাইগাররা।

প্রথম ওভারে সাদমানকে ফিরিয়ে শুরুটা করেন জাসপ্রীত বুমরাহ। জাকির হাসানকে নিয়ে শান্ত ২০ রানের একটি জুটি গড়েন। তবে ব্যাটে বল লাগাতে পুরোটা সময়ই লড়াই করতে হয়েছে জাকিরকে। তার সেই লড়াইয়ের ইতি টানেন আকাশ দীপ। ৩ রান করে ফেরেন জাকির।

জাকিরের বিদায়ের পর একই ওভারের পরের বলে আউট হন মুমিনুল হক। গোল্ডেন ডাক নিয়ে সাজঘরে ফেরেন টেস্ট স্পেশালিষ্ট এই ব্যাটার। শান্ত ফেরেন দলীয় ৩৬ রানে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে। ২০ রান আসে অধিনায়কের ব্যাট থেকে।

অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিমও পাননি রানের দেখা। ৮ রান করে ফিরেছেন তিনি। ষষ্ঠ উইকেটে হাল ধরার চেষ্টা করেন লিটন দাস এবং সাকিব আল হাসান। প্রতি আক্রমণে দুজনে মিলে ৫১ রানের জুটিও গড়েন। তবে অতিরিক্ত আক্রমণাত্মক হতে গিয়ে নিজেদের উইকেট হারান তারা।

বাউন্ডারিতে ধ্রুব জুরেলের ক্যাচ বানিয়ে ফর্মে থাকা লিটন দাসকে ফিরিয়েছেন রবীন্দ্র জাদেজা। ৪২ বলে ২২ রান করে আউট হয়েছেন লিটন।

লিটন আউট হওয়ার এক ওভার পরেই জাদেজার বলে আউট হন সাকিবও। জাদেজাকে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে অভিনব কায়দায় আউট হন তিনি। রিভার্স সুইপটা ঠিকঠাক করতে পারেননি সাকিব। বল সাকিবের ব্যাটে লেগে তাঁর বুট ছুঁয়ে উইকেটকিপারের হাতে জমা পড়েছে। টিভি আম্পায়ার তাঁকে আউট ঘোষণা করেন। ৩২ রান করে আউট হয়েছেন সাকিব।

বায়তুল মোকাররমে দুই গ্রুপের সংর্ঘষ, নামাজ না পড়িয়ে পালিয়ে গেলেন সাবেক খতিব

বায়তুল মোকাররমে দুই গ্রুপের সংর্ঘষ। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর পল্টনে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে জুমার নামাজের সময় মারামারির ঘটনা ঘটেছে। অতীতের স্বৈরাচার আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত আওয়ামী খতিব মুফতি রুহুল আমিন নামাজের আগে বয়ান করার সময় সাধারণ মুসল্লি তার পেছনে নামাজ পড়তে অনীহা প্রকাশ করলে উপস্থিত পতিত সরকার পন্থী খতিবের কিছু লোক এর প্রতিবাদ করেন।

পরে দুই পক্ষের লোকজন হাতাহাতি ও মারামারিতে জড়ান। এ সময় বেশ কয়েকজন মুসল্লি আহত হয়েছেন। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে ধর্ষণের অভিযুক্ত আওয়ামী খতিব মুফতি রুহুল আমিন নামাজ না পড়িয়ে মসজিদ ত্যাগ করে পালিয়ে যান।

শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) জুমার নামাজের আগে খতিব মুফতি রুহুল আমিনের বয়ানের সময় এ সংষর্ষ হয়।

জানা গেছে, জুমার নামাজ শুরুর আগে বায়তুল মোকাররমের বর্তমান খতিব হাফেজ মাওলানা ড. মুফতি ওয়ালিয়ুর রহমান খান বয়ান করছিলেন। এমন সময় পলাতক খতিব মাওলানা মুফতি রুহুল আমীন অনুসারীদের নিয়ে বায়তুল মোকাররম মসজিদে এসে বর্তমানে খতিবের মাইক্রোফোনে হাত দেন। এ সময় বর্তমান খতিবের অনুসারীরা রুহুল আমিনের অনুসারীদের প্রতিরোধ করেন। তখন দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হন। এতে করে মসজিদের সাধারণ মুসল্লিরা বিচলিত হয়ে পড়েন।

মসজিদের ভিতরে ভাঙচুর করা হয়। দরজা-জানালার গ্লাস ভেঙে ফেলা হয়। এতে বেশ কয়েকজন আহত হন। খবর পেয়ে মসজিদে আসেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা। তা ছাড়া আগে থেকেই বায়তুল মোকাররম এলাকায় পুলিশের বিপুল সংখ্যক সদস্য অবস্থান করছিলেন।

অনেকে ওই সময় মসজিদ থেকে বেরিয়ে পড়েন। পরে পরিবেশ কিছুটা ঠান্ডা হলে সোয়া একটার দিকে আবার সাধারণ মুসল্লিরা মসজিদে প্রবেশ করেন।

এরপর থমথমে পরিস্থিতিতে নামাজ শেষে সাধারণ মুসল্লিরা মসজিদ থেকে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু হঠাৎ দেখা যায় মসজিদ থেকে স্লোগান দিতে দিতে একদল মুসল্লি বের হন। তারা ‌‘একটা একটা লীগ ধর, ধইরা ধইরা জবাই কর’ বলে স্লোগান দিচ্ছিলেন।

এ সময় পুলিশ তাদের মসজিদ এলাকা থেকে চলে যেতে বলেন। কিন্তু তারা রাস্তায় গিয়ে দাঁড়ান। পরে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র‍্যাবের সদস্যরা তাদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দেন।

পুলিশের ২৩ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার রদবদল

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ পুলিশের ডিআইজি, অতিরিক্ত ডিআইজি ও পুলিশ সুপার পদমর্যাদার ২৩ কর্মকর্তার পদে রদবদল হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডারের নিম্নবর্ণিত কর্মকর্তাগণকে বর্ণিত পদ ও কর্মস্থলে বদলি বা পদায়ন করা হলো। জনস্বার্থে জারি করা এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর করা হবে।

 

ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

 

সর্বশেষ সংবাদ

১৪৯ রানেই অলআউট বাংলাদেশ, ফলো-অন করায়নি ভারত
বায়তুল মোকাররমে দুই গ্রুপের সংর্ঘষ, নামাজ না পড়িয়ে পালিয়ে গেলেন সাবেক খতিব
পুলিশের ২৩ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার রদবদল
বান্দরবানে অস্ত্র, গুলি ও ড্রোন সিগন্যাল জ্যামারসহ বিপুল সরঞ্জাম উদ্ধার
পাহাড়ি-বাঙালি সংঘর্ষ: রাঙ্গামাটিতে ১৪৪ ধারা জারি
মা-বাবা-ভাইয়ের কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন ঢাবিতে নিহত তোফাজ্জল
লেবাননে ইসরায়েলের ভয়াবহ হামলা, যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা
গরম কমে বৃষ্টি হবে কবে, জানালো আবহাওয়া অফিস
হাসানের ৫ উইকেট, ৩৭৬ রানে থামল ভারত
জাবিতে কোনো কমিটি নেই, হত্যাকাণ্ড নিয়ে অপপ্রচার চলছে: ছাত্রদল
দ্বিতীয় দিনের শুরুতেই জাদেজাকে ফেরালেন তাসকিন, সাকিবের ক্যাচ মিস
পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি মশিউর রহমান গ্রেফতার
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক হলেন সিপিডির ফাহমিদা খাতুন
ঢাকা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনায় যে প্রশ্ন তুললেন জয়
নিউইয়র্কে যাদের সঙ্গে বৈঠক হতে পারে প্রধান উপদেষ্টার
ছাত্রলীগ নেতাকে পিটিয়ে হত্যায় জাবির ৮ শিক্ষার্থী বহিষ্কার, তদন্ত কমিটি গঠন
সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান গ্রেপ্তার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ধরনের রাজনীতি বন্ধ ঘোষণা
সরকারি ৬ ব্যাংকের এমডির নিয়োগ বাতিল
প্রধান উপদেষ্টার সহকারী প্রেস সচিব হলেন সাংবাদিক সুচিস্মিতা তিথি ও নাইম আলী