কম্পিউটারের রাজকুমার
ভালো নামটি আপনি তার ভুলেই গেছেন বা নিশ্চিতভাবে কোনোদিন শোনেননি। উইলিয়াম হেনরি গেটস ৩। জ্বী। জন্মেছেন ১৯৫৫ সালের ২৮ অক্টোবর। তিনি একজন আমেরিকান ব্যবসায়ী, তুমুল খ্যাতিমান এবং অবিশ্বাস্য বড়লোক। একজন সফটওয়্যার ডেভেলপার, বিনিয়োগকারী, লেখক, বিশ্বের প্রধান কম্পিউটার ব্যক্তিত্ব, দাতা। তার মাইক্রোসফটের সহ-প্রতিষ্ঠাতা। গড়েছেন তার ছোটবেলার বন্ধু পল অ্যালেনের সঙ্গে। তিনি মাইক্রোসফটে তার ক্যারিয়ারে চেয়ারম্যান, প্রধান নিবাহী কর্মকর্তা, প্রেসিডেন্ট এবং চিফ সফটওয়ার আকিটেক্ট হিসেবে নিষ্ঠা ও ভালোবাসা নিয়ে প্রবলভাবে কাজ করেছেন।
তিনিই ২০১৪ সালের মে মাস পর্যন্ত এককভাবে বিশ্বের বৃহত্তম কম্পিউটার কম্পানি মাইক্রোসফটের শেয়ার মালিক ছিলেন। ১৯৭০ ও ১৯৮০’র দশকের বিশ্বজুড়ে এবং পরের ১৯৯০ এবং ২০০০ থেকে আজ পর্যন্ত অনুন্নত বিশ্বে বাসাবাড়িতে ব্যবহার করা কম্পিউটার এবং কম্পিউটার থেকে তৈরি নানা পণ্যের প্রধান ও অন্যতম উদ্যেক্তা, প্রচারাভিযানকারী এবং বিশ্বের এই খাতের সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন।
জন্মেছেন ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্যের সাগর তীরবতী শহর সিয়াটলে।
১৯৭৫ সালে নিউ ম্যাক্সিকোতে তারা দুজনে মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠা করেছেন। এই কম্পানিটিই বিশ্বের সবচেয়ে বড় ব্যক্তিগত কম্পিউটার সফটওয়্যার তৈরির প্রতিষ্ঠান। এই জীবনে আসলে বিল ও পল অ্যালেনকে প্রবল কাঠখড় পোহাতে হয়েছে।
বিল গেটস মাইক্রোসফটের বোর্ড অব ডিরেক্টরসের চেয়ারম্যান ছিলেন।
এই মানুষটিকেও ১৯৯০’র দশকের শেষের দিকে তার ব্যবসায় কৌশলগুলোর জন্য সমালোচনার মুখোমুখি হতে হয়েছে। তবে তিনি সামান্যই সমালোচিত। তিনি যে কম্পিউটার বিপ্লবের নায়ক। তাকে তার সঙ্গে প্রতিদ্বদ্বীতার বিপক্ষে।
২০০৮ সালে বিল গেটস তার মাইক্রোসফটের প্রধান নির্বাহীর আনুষ্ঠানিক পদ থেকে সরে এলেন। এরপর থেকে তার জীবনের আংশিক সময় পাচ্ছে তার গড়া কম্পানি।
তিনি বিল ও মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনে চলে গেলেন। একটি ব্যক্তিগত দাতব্য প্রতিষ্ঠান বিল-মেলিন্ডার। গড়েছেন তার সাবেক স্ত্রী ২০০০ সালে। সে গল্প অরেকটি। আর মাইক্রোসফটের পরিচালকদের প্রধান পদ থেকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে চলে গেলেন তিনি ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে। এরপর থেকে তিনি কাজ শুরু করলেন কর্মজীবনের উল্লেখযোগ্য সময়ে প্রধান প্রযুক্তি পরামর্শক হিসেবে সাটিয়া নাদেলাতে।
২০২০ সালের মার্চে বিল গেটস চলে গেলেন মাইক্রোসফটের বোর্ড সদস্য থেকে। তিনি পরিবেশের বিপর্যয়, জলবায়ুর অভিঘাত, বৈশ্বিক স্বাস্থ্য সমস্যা, উন্নয়ন ও শিক্ষায় কাজ করছেন বিল ও মেলিন্ডা গেটসের মাধ্যমে।
১৯৮৭ সাল পর্যন্ত এই আমেরিকান নিপাট ভদ্রলোক, দারুণ সুদর্শন মানুষটিই ফোবর্সের বিচারে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী। এরপরও তিনি ছিলেন অনেক ওপরে। ১৯৯৫ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ফোবর্সের সবচেয়ে বড়লোক। কেবল ২০১০ ও ২০১৩ সালে তাকে সেখান থেকে টলানো গিয়েছে।
২০১৭ সালের অক্টোবরের হিসেবে, গেটসের টাকার পরিমাণ ৮৯. ৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এই বছরের অক্টোবর পর্যন্ত আনুমানিক ১শ ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মালিক। এখন তিনি বিশ্বের পঞ্চম ধনী।
ছবি : ১৯৭০ সালের বিল ও পল অ্যালেন।