ডেঙ্গু ও কিউলেক্স থেকে নগরবাসীকে রক্ষা করতে মশা নিয়ন্ত্রণে পরিচ্ছন্ন বিভাগকে কার্যকর ভূমিকা রাখার নির্দেশনা দিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। প্রয়োজনে মশা নিয়ন্ত্রণে ওষুধ ক্রয়, যন্ত্রপাতি সংগ্রহ এবং নতুন কৌশল খুঁজে বের করার নির্দেশ দেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) টাইগারপাসস্থ চসিক কার্যালয়ে পরিচ্ছন্ন বিভাগের সঙ্গে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। মেয়র জানান, ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে অভিযান চালানোর ফলে নগরীর পরিচ্ছন্ন কার্যক্রমে গতি এসেছে। তবে বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা ও মশা নিয়ন্ত্রণে ওয়ার্ডভিত্তিক মনিটরিং জোরদার করা হবে।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে ১০০টি ফগার মেশিন এবং ১২০টি স্প্রে মেশিন কেনা হয়েছে। সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে বেশ কিছু ব্যাংক চসিককে ডেঙ্গু ও মশাবাহিত রোগ মোকাবিলায় অত্যাধুনিক ফগার মেশিন উপহার দিয়েছে। আরও কিছু প্রতিষ্ঠান সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে।
জলাবদ্ধতা নিরসনে চসিক ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে দুটি ব্যাকহোলোডার গাড়ি সংগ্রহ করেছে এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ৪০ হাজার বিন বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মেয়র বলেন, “জনগণ যেন মশার কামড়ে হসপিটালে যেতে না হয় কিংবা মৃত্যু ঝুঁকিতে না পড়ে, এজন্য কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।”
মশা নিয়ন্ত্রণের ওষুধ সরবরাহ প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, “মশার ওষুধের কোনো ঘাটতি রাখা যাবে না। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে মশার জীবনচক্র বদলে যাচ্ছে। তাই প্রয়োজনে নতুন ওষুধের সন্ধান করতে হবে। যদি কোনো কোম্পানি ভালো ওষুধ সরবরাহ করতে পারে, তা সংগ্রহ করা হবে। মশা নিয়ন্ত্রণে আমরা কোনো আপস করবো না।”
তিনি আরও বলেন, “কিছু বিকল্প পদ্ধতি ভাবা হচ্ছে, যেমন মশার লার্ভা খেয়ে ফেলা এমন মাছ বা কীটপতঙ্গ ব্যবহার করা যেতে পারে।”
জনসচেতনতার ওপর গুরুত্ব দিয়ে মেয়র বলেন, “নগরবাসীর সচেতনতা বাড়াতে প্রচারণা জোরদার করতে হবে। নালা, ঝোপ-ঝাড় পরিষ্কার রাখা জরুরি। আমরা ডেঙ্গু প্রতিরোধে লিফলেট বিতরণ করছি, এটি আরও বাড়াতে হবে। ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সংখ্যা শূন্যে নামিয়ে আনতে হবে।”
মশার স্প্রে কার্যক্রমে গাফিলতির বিষয়ে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে মেয়র বলেন, “যেসব পরিচ্ছন্ন কর্মী ফাঁকি দিচ্ছে, তাদের চাকরি থেকে বের করে দেওয়া হবে। সুপারভাইজারদের দায়িত্ব নিতে হবে। কেউ গাফিলতি করলে তা লুকানোর চেষ্টা না করে আমাদের জানাবেন। প্রয়োজনে নতুন লোক নিয়োগ দিয়ে কাজ করানো হবে।”
সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা ইখতিয়ার উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, চসিকের ম্যালেরিয়া ও মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা শরফুল ইসলাম মাহি, উপ-প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা প্রণব কুমার শর্মাসহ পরিচ্ছন্ন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ।