বিয়ে করেছেন শ্যারল স্যান্ডবার্গ
মেটার সিওও (চিফ অপারেটিং অফিসার) শ্যারল স্যান্ডবার্গ ব্যবসায়ী টম বেনথলকে বিয়ে করেছেন। তার বাস ক্যালিফোনিয়ার মেনলো পার্কে।
তার প্রতিষ্ঠান হলো ‘মেটা প্ল্যাটফর্মস ইনকারপোরেশন’। তারা মেটা নামে ব্যবসা পরিচালনা করেন। আগে নাম ছিল ‘ফেসবুক ইনকরপোরেশন’। মেনলো পার্ক নির্ভর একটি আমেরিকান বহুজাতিক প্রাযুক্তিক কম্পানি। তারা ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটস অ্যপের মালিক প্রতিষ্ঠান। তাদের আরো পণ্য এবং সেবা আছে। তাার বিশ্বের সবচেয়ে দামী কম্পানিগুলোর একটি। আমেরিকান তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর কম্পানিগুলোর প্রধান পাঁচটির একটি ‘মেটা’ বিগ ফাইভের অংশ। অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো হলো গুগলের মাতৃপ্রতিষ্ঠান ‘অ্যালফাবেট’, ‘আমাজন’, ‘অ্যাপল’ ও ‘মাইক্রোসফট’।
মেটার সেবাগুলো হলো ‘ফেসবুক’, ফেসবুক ‘ম্যাসেঞ্জার’, ‘ফেসবুক ওয়াচ’ ও ‘মেটা পোর্টাল’। তারা বিজ্ঞাপন থেকে আয়ের ৯৭.৪ শতাংশ সংগ্রহ করেন।
তাদের এই নারী প্রধান নির্বাহীর পুরো নাম শ্যারল কারা স্যান্ডবার্গ। ৫২ বছরের একজন মার্কিন ব্যবসায় নির্বাহী, শত কোটি মার্কিন ডলারের মালিক ও দাতা। মেটা নামের প্ল্যাটফর্মের তিনি প্রধান পরিচলন কর্মকর্তা। তিনি লিনেন.অর্গেরও প্রতিষ্ঠাতা। ২০০৮ সালে তাকে ফেসবুকের সিওও করা হয়েছে। তিনি এই প্রতিষ্ঠানের দ্বিতীয় পদে আসীন হয়েছেন। চার বছরের মধ্যে ২০১২ সালের জুনে ফেসবুকের বোর্ড অব ডিরেক্টরসের একজন নির্বাচিত হয়েছেন। প্রথম নারী হিসেবে তিনি ফেসবুকের বোর্ডে এসেছেন। তিনি তাদের বিজ্ঞাপন ব্যবসায়ের প্রধান ছিলেন। তিনিই ফেসবুককে প্রথম লাভে নিয়ে এসেছেন। এর আগে ছিলেন গুগলে। তাদের বৈশ্বিক অনলাইন বিক্রি ও কার্যক্রম পরিচালনা বিভাগের প্রধান হিসেবে ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তিনি তাদের দাতব্য কাযক্রম গুগল.অর্গে যুক্ত ছিলেন। যেটি বৈশ্বিকভাবে আমরা সবাই ব্যবহার করি। তার আগে ছিলেন লরেন্স হেনরি সামারস নামের মার্কিন অথনীতিবিদ, জাতিসংঘের ধনাগারের ৭১তম সচিব, ১৯৯০ থেকে ২০০১ সাল পযন্ত। তখন তার প্রধান কর্মকর্তা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। ২০১২ সালে টাইম ১০০’র একজন হয়েছেন তিনি। বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালীদের অন্যতম। ঠিক নয় বছর পর ২০২১ সালে ফোর্বসের বিলিয়নারের তালিকাতে তিনি এসেছেন ১.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মালিক হিসেবে। তার ফেসবুক ও অন্যান্য কম্পানিতে অংশ হিসেবে। ২০২২ সালে ঘোষণা করেছিলেন যে, মেটার সিওও হিসেবে তাকে নামিয়ে দেওয়া হতে পারে কিন্তু তিনি তাদের বোর্ডে থাকতে পারেন। এর পরের কাহিনী ইতিহাসের অংশ।
শ্যারল স্যান্ডবার্গ এই বছরের জুনে ঘোষণা করেছিলেন, তিনি ফল (ইংরেজি বর্ষ হিসেবের একটি কাল) ফেসবুকের মাতৃ প্রতিষ্ঠানের প্রধান পরিচলন কর্মকর্তার পদ ও ভূমিকাটি ছেড়ে দিতে পারেন। তিনি তখন পোস্ট করেছিলেন ‘বিবাহিতা’। দিয়েছেন কয়েকটি হৃদচিহ্ন। এই কথাগুলো বলেছিলেন তার ফেসবুক ও ইনস্ট্রাগ্রাম অ্যাকাউন্টে। এই তথ্যের অনুসঙ্গী হয়েছে তার ও টম বেনথলের ছবি।
এবার তার স্বামী। ভালো নাম টমাস বেনথল। একজন আমেরিকান মার্কেটিং বা বিপনন সিইও (চিফ অপারেটিং অফিসার) এবং এনবিসি নিউজের সাবেক প্রযোজক। তিনি জন্মেছেন স্ত্রীর মতো যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে। মা জোয়ান লিওরি ও বাবা এরিক লরেন্স বেনথল। তিনি একজন সাবেক আইনজীবি-লেইথাম অ্যান্ড ওয়াটকিংন্স এল.এল.পির। এখন তিনি মার্কিন প্রাণী অধিকার সংস্থা-ইউএস হিউমেইন সোসাইটির বোর্ড পরিচালকদের চেয়ার। তার দাদা একজন বিখ্যাত গায়ক ও প্রযোজক। এক ভাই জন বেনথল অভিনেতা। আরেক ভাই অস্থিচিকিৎসাবিদ ও সার্জন-ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া লস অ্যাঞ্জেলসের চিকিৎসা শাস্ত্রের অধ্যাপক। তারা ইহুদী পরিবার।
স্যান্ডবার্গের পক্ষে ব্যান্ডন মেকমেক একজন মুখপাত্র নিশ্চিত করেছেন মেটার সিওও ওয়াইওমিংয়ে শনিবার বিয়ে করেছেন।
২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে স্যান্ডবার্গ ও বেনথল তাদের বাগদানের কথা ঘোষণা করেছিলেন।
টিভির পেশাজীবন ছাড়াও তার স্বামী প্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও কেলটন গ্লোবাল নামের একটি কৌশল নির্ধারণ পরামর্শ সেবা ফামের। তারা লস অ্যাঞ্জেলসভিত্তিক।
২০১৯ সালের বসন্ত থেকে তারা সম্পর্কের মধ্যে আছেন। তাদের পরিচয় হয়েছে স্যান্ডবার্গের মৃত স্বামীর ভাইয়ের মাধ্যমে-জানিয়েছে পিপল। ফলে স্যান্ডবার্গের ব্যক্তিগত জীবন। ব্রায়ান ক্রাফকে তিনি ১৯৯৩ সালে খুব অল্প বয়সে বিয়ে করেছেন। তবে এক বছর পর বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছে। ২০০৪ সালে আবার বিয়ে করলেন ডেইভ গোল্ডবার্গকে, তিনি ইয়াহুর একজন নির্বাহী ছিলেন। পরে তার এই স্বামী সার্ভে মাঙ্কির সিইই হয়েছেন। তাদের একটি ছেলে ও মেয়ে আছে। পরে তাদের সংকটে দুজনে যৌথ আয় ও যৌথ পিতা-মাতার শর্তে আসেন। স্যান্ডবার্গ একক পিতা বা মাতার নানা বিষয় নিয়ে কাজ করেছেন ও বিষয়গুলোকে সামনে নিয়ে এসেছেন। তিনি আরো বলেছেন, তাতে পেশা ও আমেরিকার অথনৈতিক উন্নয়ন কার্যক্রমে অংশগ্রহণ বড় ধরণের সংকট তৈরি করে। ২০১৫ সালের মে মাসের এক তারিখে তার স্বামী হঠাৎ মারা যান। তখন তারা মেক্সিকোতে ছুটি কাটাচ্ছিলেন। তবে স্ত্রী জানিয়েছেন, তিনি হৃদযেন্ত্রের স্পন্দন খুব বেশি বা খুব কমের রোগে আক্রান্ত ছিলেন ও এই কারণেই মারা গিয়েছেন। এরপর টানা তিন বছরের সম্পর্ক তার ভিডিও গেম তৈরি প্রতিষ্ঠান অ্যাকটিভিশন ব্লিজার্ডের ববি কটিকের সঙ্গে। তবে তারা আলাদা হয়ে গিয়েছেন। ২০২০ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি তিনি ফেসবুকে টম বেনথলের সঙ্গে তার সম্পর্কের কথা ঘোষণা করেন।
ওএফএস।