অলাভজনক ‘হুয়াওয়ে-বুয়েট আইসিটি অ্যাকাডেমি’
তরুণ ছাত্র, ছাত্রীদের আইসিটিখাতে আরো বেশি দক্ষতা তৈরি, আইসিটি মেধাবী গড়া, তাদের মধ্যে ইকোসিস্টেম গড়ে তুলতে বুয়েট (বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়)-এ আইসিটি একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেছে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় চীনা মোবাইল ও আইসিটি অবকাঠামো প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে। নাম ‘হুয়াওয়ে-বুয়েট আইসিটি অ্যাকাডেমি।’
বুয়েট কাউন্সিল ভবনে উদ্বোধন করা হয়েছে। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। ছিলেন বিশেষ অতিথি হুয়াওয়ে টেকনোলজিস, বাংলাদেশ লিমিটেডের সিইও প্যান জুনফেং ও বুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সত্যপ্রসাদ মজুমদার।
অলাভজনক শিক্ষা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে ‘হুয়াওয়ে-বুয়েট আইসিটি অ্যাকাডেমি’। বাংলাদেশের শিল্পখাতের চাহিদা অনুসারে শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ ও কারিগরি শিক্ষা দেওয়া হবে। আরেকটি প্রধান উদ্দেশ্য, আইসিটি খাতে মেধাবী তৈরি ও তাদের মধ্যে ইকোসিস্টেম গড়ে তোলা।
এই অ্যাকাডেমির মাধ্যমে ছাত্র, ছাত্রীরা বিশ্বের ৩ হাজারের বেশি প্রশিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ ও শিখতে পারবেন। তাদের কাজ জমা দিতে পারবেন। শুরু থেকে ১৯টি বিষয়ে ৮৩টি সার্টিফিকেশন প্রগ্রাম আছে। কোর্স ও সার্টিফিকেশন কো-অর্ডিনেটর ‘হুয়াওয়ে অথরাইজড ইনফরমেশন অ্যান্ড নেটওয়াক একাডেমি (এইচএআইএনএ)। পাশ করার পর একাডেমিটি ফলাফলের ভিত্তিতে তিনটি গ্রেডে সার্টিফিকেট প্রদান করবে-অ্যাসোসিয়েট, প্রফেশনাল ও এক্সপার্ট। শুরুতে ২শ ৫০ জন ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে ‘হুয়াওয়ে-বুয়েট আইসিটি একাডেমি’ শুরু করছে।
বিশ্বের ৯০টিরও বেশি দেশে হুয়াওয়ের এ ধরনের ১৫শ’রও বেশি আইসিটি অ্যাকাডেমি রয়েছে। পাকিস্তান, জাম্বিয়া ও চীনসহ পৃথিবীর কটি দেশে অ্যাকাডেমিগুলো কাজ করছে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, ‘হুয়াওয়ে-বুয়েট আইসিটি অ্যাকাডেমি দারুণভাবে কাজ করবে বলে শিক্ষার্থী, শিক্ষক সবার জন্য খুব উপকারী হবে। বাংলাদেশের সেরা বিশ্ববিদ্যালয় বুয়েটে অ্যাকাডেমিটি স্থাপন করায় হুয়াওয়েকে আমার আন্তরিক সাধুবাদ ও অভিনন্দন।’
বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক ড. সত্যপ্রসাদ মজুমদার বলেছেন, ‘আমাদের সঙ্গে হুয়াওয়ে সমঝোতা স্মারক সাক্ষরের স্বল্প সময়ে অ্যাকাডেমিটি প্রতিষ্ঠা করেছেন বলে কৃতজ্ঞতা জানাই। আইসিটি অ্যাকাডেমিটি আমাদের শিক্ষা পাঠ্যতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে ও শিক্ষার্থীদের প্রায়োগিক জ্ঞান অর্জনে আরো অনেক দক্ষ করে গড়ে তুলবে। সব ছাত্র, ছাত্রীকে বিশ্বের আইসিটি খাতের প্রায়োগিক ধারণা দেবে।’
হুয়াওয়ে টেকনোলজিস বাংলাদেশ লিমিটেডের সিইও প্যান জুনফেং বলেছেন, “বিশ্বে ২০১৩ সাল থেকে আইসিটি ইকোসিস্টেম গড়ে তুলতে সাহায্য করতে হুয়াওয়ে আইসিটি একাডেমি প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। এই দেশেও প্রকল্পটি সম্প্রসারিত করতে পেরে ও অ্যাকাডেমিটি চালু করতে পেরে আমরা খুব খুশি। ‘হুয়াওয়ে-বুয়েট আইসিটি একাডেমি’ বাংলাদেশে বাংলাদেশের জন্য কাজ করে যাবে।”
বুয়েটের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল জব্বার খান বলেছেন, ‘প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে আইসিটি শিল্পখাতে দক্ষ জনবল তৈরিতে বুয়েট বরাবর অগ্রণী ভূমিকা রেখে চলেছে। হুয়াওয়ের সহযোগিতায় তাদের হাতে এমন আইসিটি অ্যাকাডেমি স্থাপন সারা দেশে আরো দক্ষ জনবল তৈরিতে কাজ করবে।’
বুয়েট আইআইসিটি’র পরিচালক অধ্যাপক ড. রুবাইয়াত হোসাইন মন্ডল বলেছেন, “আধুনিক আইসিটি খাতের নতুন উদ্ভাবনগুলো টেকসই প্রবৃদ্ধি, অর্থনীতির উন্নয়ন, তরুণদের প্রডাক্টিভিটি ও তাদের চাকরি বাজার তৈরিতে এবং রূপান্তরে ইতিবাচক কাজ করবে। একাডেমিটি অ্যাকাডেমিয়া ও ইন্ডাস্ট্রিতে সেতুবন্ধন হবে। অত্যন্ত ও পূর্ণাঙ্গ আধুনিক আইসিটি প্রশিক্ষণ দেয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশে দক্ষ জনবল তৈরিতে অবদান রেখে যাবে।’
বুয়েটের (ইইই) ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিভাগীয় সভাপতি অধ্যাপক
ড. মো. কামরুল হাসান বলেছেন, ‘এই বিশেষ ও অসাধারণ প্রকল্পটির সাথে জড়িত সবাইকে ধন্যবাদ। এই ধরণের একটি অ্যাকাডেমি আমাদের খুব প্রয়োজন।’
ওএস।