ভালোবাসার জায়গায় ফিরতে পেরে উচ্ছ্বসিত সিডন্স
ছিলেন জাতীয় দলের প্রধান কোচ। ২০০৭ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালনকালে বাংলাদেশ ঘরের মাঠে একটি বিশ্বকাপও খেলেছিল। কিন্তু ভালো করতে পারেনি। এতে করে নাখোস হন বিসিবির তৎকালীন কিছু কর্তারা। ফলে বিদায় ঘটে জেমি সিডন্সের। সেই সিডন্স ১০ বছর পর আবার এসেছেন বাংলাদেশে। তবে আগের দায়িত্বে নয়। এখন তিনি দলের একটি নির্দিষ্ট দায়িত্বে। পালন করবেন ব্যাটিং কোচের দায়িত্ব। নতুন করে দায়িত্ব নেয়ার পর আজ শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রামে প্রথমবারের মতো সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় জেমি ফিরে যান অতীতে। রোমন্থন করেন স্মৃতিচারণ। জানান, বাংলাদেশ তার ভালোবাসার একটি জায়গা। কিন্তু কিছু লোক তাকে বিশ্বাস করতে পারেনি বলে তার বিদায় হয়েছিল।
জেমি সিডন্স বলেন, ‘আমি গতবারই বাংলাদেশকে খুব ভালোবেসে ছিলাম। কিন্তু কিছু মানুষ সেটা বিশ্বাস করেনি। গতবার তিন বছরের সময়টা খুব উপভোগ করেছি। আমি সবসময়ই ভাবতাম যে আরেকটি সুযোগ আসবে। এখন তা এসেছে।’
১০ বছর পর বাংলাদেশে আসলেও তার সব পরিচালক থেকে ক্রিকেটার-এ রকম কয়েকজনের সঙ্গে তার সব সময়ে যোগাযোগ ছিল। তিনি সব সময় বাংলাদেশকে কোচিং করানোর জন্য প্রস্তুত ছিলেন বলেও জানান।
সিডন্স বলেন, ‘আমি কোচিংয়ের জন্য তৈরিই ছিলাম। বাংলাদেশের সঙ্গে আমার সবসময় যোগাযোগ ছিল। বিসিবির কিছু পরিচালক, যাদের সঙ্গে আমার ভালো সম্পর্ক ছিল তাদের সঙ্গেই হোক বা ক্রিকেটারদের সঙ্গে হোক। ব্যাটিং পরামর্শকের একটা পদ তৈরি হয়েছিল। এইচপি এবং জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের সঙ্গে কাজ করার। সবসময় জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের সঙ্গে কাজ করার কথা ছিল। তবে এটা পূর্ণকালিন সময়ের জন্য নাকি খণ্ডকালিন; এ ব্যাপারে আমি নিশ্চিত ছিলাম না। তবে এটা নিয়ে আমার মাথা ব্যাথা নেই।’
দল নিয়ে খুব বেশি পরীক্ষা-নিরীক্ষায় যেতে চান না জেমি সিডন্স। তিনি বলেন, ‘আমি দল নিয়ে পরীক্ষায় যেতে চাই না। আমাকে যেই দল দেওয়া হবে তা নিয়েই কাজ করব। অবশ্যই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের কথা মাথায় রেখে ক্রিকেটারদের একটা তালিকা আছে। এই ফরম্যাটে ওদের উন্নতি করানোর ব্যাপারে কাজ করব।’
গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। আগামী অক্টোবর-নভেম্বরে অনুষ্ঠিত হবে আরেকটি আসর। সিডন্স মনে করেন, এই আসরে ভালো করতে পারলে ভারতে আগামী বছর অনুষ্ঠিতব্য ওয়ানডে বিশ্বকাপ ক্রিকেটেও দল ভালো করতে পারবে।
তিনি বলেন, ‘যদি অক্টোবর-নভেম্বরের মধ্যে ভালো টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটার পেতে পারি তবে ভারতে বিশ্বকাপে পা দেওয়ার আগেই আমরা ভালো ওয়ানডে দল হয়ে উঠতে পারব। আমরা জানি বিশ্বকাপে জিততে হলে ভারতে আমাদের খুব বড় স্কোর করতে হবে। ২৬০-২৭০ রান করে ভারতে জেতা যাবে না। সেখানে ৩২০ করতে হবে।’
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ছাড়াও চলতি বছরে বাংলাদেশের ব্যস্ত সূচিতে ঠাসা। সিডন্স চান, এসব দ্বি-পাক্ষিক সিরিজেও ভালো করা।
তিনি বলেন, ‘আমাদের কিছু গুরুত্বপূর্ণ ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ আছে। আমরা চাই ওই সব ম্যাচে জিততে। এই মুহুর্তে টি-টোয়েন্টি সর্বোচ্চ ফোকাসে থাকবে। কারণ এই বছর বিশ্বকাপ আছে।’
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সমস্যার অন্যতম নাম ওপেনিং জুটি। সর্বশেষ পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজে সাইফ হাসানের মতো টেস্ট ব্যাটসম্যানকে দিয়েও ওপেন করানো হয়েছিল। যেখানে পুরোপুরি ব্যর্থ ছিল টিম ম্যানেজমেন্ট। আফগানিস্তানের বিপক্ষে আছে দুইটি ম্যাচ। লিটন দাস ফিরেছেন। মোহাম্মদ নাঈম জাতীয় দলের হয়ে ভালো করলেও স্ট্রাইকরেট খুবই কম। বিপিএলে নিয়মিত খেলার সুযোগই পাননি। আবার খেললেও ওপেনিং করার সুযোগ পাননি। নিচের দিকে ব্যটিং করেছেন। দলে আবার নতুন মুখ হিসেবে নেওয়া হয়েছে বিপিএল মাতানো মুনিম শাহরিয়ারকে। ওপেনিংয়ে লিটনের খেলা নিশ্চিত। তা হলে তার সঙ্গি হবেন কে? মুনিম, না নাঈম?
এ রকম প্রশ্নের জবাবে জেমি সিডন্স সরাসরি কোনো মন্তব্য না করে বলেন, ‘আমি আজই দুজনকে প্রথম দেখলাম। এখনও দুজনের খেলার ধরন নিয়ে অবগত নই। আগামীকাল এবং টি-টোয়েন্টি ম্যাচের আগে তাদের আবার দেখবো। বিপিএলে তাদের কিছুটা দেখেছি। খুব ভালোই মনে হলো, যদিও একজন প্রত্যাশিত সুযোগ পায়নি। এটা হতাশার। আশা করছি সে আমাদের জন্য বড় কিছুই উপহার দেবে।’
এমপি/এসআইএইচ