পথ চলা শুরু হলো বাংলাদেশ টাইগার্সের
বিসিবির বর্তমান কমিটি দায়িত্ব নেয়ার পরই জাতীয় দলের বাইরে থাকা ও সম্ভাব্য ক্রিকেটারদের নিয়ে কাজ করার অভিপ্রায়ে বাংলাদেশ টাইগার্স নামে নতুন একটি স্ট্যান্ডিং কমিটি গঠন করে। এর চেয়ারম্যান করা হয় কাজী ইনামকে। তারপর দ্রুততম সময়ে ২৩ জনের দলও ঘোষণা করা হয়। সঙ্গে বড় পরিসরের কোচিং প্যানেল। আর ভেন্যু হিসেবে বেছে নেওয়া হয় অপাংক্তেয় হয়ে পড়ে থাকা বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামকে। এই ত্রিফলের সমাহার আজ শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) থেকে কাজ শুরু করেছে।
প্রথম ক্যাম্পের মেয়াদ হচ্ছে স্বল্প মেয়াদী। শেষ হবে ৭ মার্চ। এরপর বিরতি। কারণ আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ শেষে জাতীয় দল উড়াল দেবে দক্ষিণ আফ্রিকায়। ক্যাম্পের এ রকম বিরতির কারণ বর্তমানে দলে সুযোগ পেয়েছেন টেস্ট দলের অনেকেই। শুধু নেই আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি দলে সুযোগ পাওয়া ক্রিকেটাররা। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে বাংলাদেশ খেলবে টেস্ট ও ওয়ানডে। যে কারণে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ শেষে টেস্ট ও ওয়ানডে দলের ক্রিকেটারদের নিয়ে যেতে হবে দক্ষিণ আফ্রিকা। এ ছাড়াও ক্যাম্প স্বল্প পরিসরে করার আরেকটি কারণ হলো ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ ক্রিকেট। এই আসর শুরু হবে ১৫ মার্চ। সব কিছু বিবেচনা করেই প্রথম ক্যাম্প স্বল্প মেয়াদী করা হয়েছে। আজ বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে পথ চলা শুরুর দিন মাঠে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ টাইগার্সের চেয়ারম্যান কাজী ইনাম ও প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন।
প্রথম দিন সকাল সাড়ে সাতটায় অনুশীলন শুরু হয়ে শেষ হয় বেলা ১১টায়। প্রথম ক্যাম্প স্বল্প মেয়াদী হলেও দলের ক্রিকেটারদের উপর সবসময় নজর রাখা হবে বলে জানিয়েছেন কাজী আহমেদ।
তিনি বলেন, ‘মার্চ মাসের ১৫ তারিখ আমাদের ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ শুরু হবে। তখন সকলে এখানে খেলবে। আমাদের এখানে ৮ জন লোকাল কোচ জড়িত আছেন, তারা সবাই ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে বিভিন্ন দলের সঙ্গে কোচিং করে। আমরা একটা রোস্টার করে দেব। সেই কোচরা আমাদের এখানে (বাংলাদেশ টাইগার্স) যে সকল ক্রিকেটার জড়িত আছে, তাদের যে কাজগুলো করা হচ্ছে এগুলো মনিটরিং করবেন।’
এই দল মূলত জাতীয় দলের ছায়া দল হিসেবে কাজ করবে। জাতীয় দল থেকে বাদ পড়া ক্রিকেটার যেমন থাকবেন, তেমনি থাকবেন সম্ভাব্য ক্রিকেটাররাও। এখান থেকে জাতীয় দলের জন্য খেলোয়াড় সাপ্লাই দেওয়া হবে। সঙ্গে মানসিকভাবেও ক্রিকেটারদের প্রস্তুত করে তোলা।
কাজী ইনাম বলেন, ‘আমাদের ক্রিকেট সিজন চলে এনসিএল, বিসিএল, বিপিএল, ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ। সে সময় খেলোয়াড়রা অনুশীলনের মধ্যে থাকে। এর বাইরে অফ সিজনে তাদের একটা অনুশীলন দরকার। আমাদের জাতীয় দলের অনেক খেলোয়াড় আছে, তারা অনেক সময় একটা ফরম্যাট খেলে আরেকটা খেলে না। এখন আফগানিস্তান সিরিজ চলছে। কিন্তু আমাদের টেস্ট টিমের ৮ থেকে ১০ জন এই ট্যুরের মধ্যে নেই। সামনেই তারা দক্ষিণ আফ্রিকা যাবে। এ রকম ক্রিকেটারদের নিয়ে এবং সম্প্রতি যারা ভালো করেছে, তাদের একটা সুযোগ দরকার। যাতে তারা সঠিক কোচদের অধীনে থেকে জাতীয় দলের জন্য মানসিক ও শারীরিকভাবে প্রস্তুত হতে পারে।’
বাংলাদেশ টাইগার্স:
মুমিনুল হক, ফজলে মাহমুদ রাব্বি, সাইফ হাসান, সাদমান ইসলাম, সৌম্য সরকার, ইমরুল কায়েস, পিনাক ঘোষ, এনামুল হক, মোসাদ্দেক হোসেন, মোহাম্মদ মিঠুন, সৈকত আলী, জাকির হাসান, তাইজুল ইসলাম, নাজমুল ইসলাম, নাহিদুল ইসলাম, নাঈম হাসান, রুবেল হোসেন, আবু জায়েদ, খালেদ আহমেদ, আবু হায়দার, কামরুল ইসলাম, মেহেদী হাসান, মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী।
কোচিং প্যানেল:
বাংলাদেশ টাইগার্স দলের দেখ-ভালের প্রধান দায়িত্ব পড়েছে কোচ মিজানুর রহমান বাবুলের উপর। তার সঙ্গে সহযোগী হিসেবে থাকবেন ব্যাটিং কোচ আফতাব আহমেদ ও আশিকুর মজুমদার। আর বোলিং ডিপার্টমেন্টে ফাস্ট বোলিং কোচ নাজমুল হোসেন ও তালহা জুবায়ের, স্পিন বোলিং কোচ সোহেল ইসলাম, ফিল্ডিং কোচ উমাকান্ত প্যাটেল এবং ফয়সাল হোসেন ডিকেন্স, উইকেট কিপিং কোচ ও অ্যানালাইসিস্ট নাসির আহমেদ নাসু, ট্রেইনার ইয়াকুব চৌধুরী, ফিজিওথ্যারাপিষ্ট মুজাদ্দেদ আলফা সানি, লজিস্টিকস ম্যানেজার সজল আহমেদ চৌধুরী। এ ছাড়া আগে কাজ করা শ্রীলঙ্কার চম্পাতা রামানায়েকও থাকবেন বোলিং কোচ হিসেবে।
এমপি/এসআইএইচ