লিটনের সেঞ্চুরিতে রানের পাহাড় টপকাতে হবে আফগানদের
৪৮ ঘণ্টার ব্যবধানে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন বাংলাদেশের টপ অর্ডারের ব্যাটসম্যানরা। আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে ৪ উইকেটে জয় পেলেও টপ অর্ডারের ব্যর্থতায় মাত্র ৪৫ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে লজ্জাজনক হারের মুখে পড়েছিল দল। পরে আফিফ হোসেন ও মেহেদি হাসান মিরাজ অপরাজিত ১৭৪ রানের জুটি গড়ে দলকে জয় এনে দিয়েছিলেন। সেখানে আজ আফিফ-মিরাজকে তেমন কিছু করার সুযোগ দেননি টপ অর্ডাররা। লিটন দাসের ১৩৬ ও মুশফিকুর রহিমের ৮৬ রানই বাংলাদেশকে বড় পুঁজি এনে দিয়েছে। ৪ উইকেট হারিয়ে করেছে ৩০৬ রান। এটি আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ দলগত। আগের সর্বোচ্চ ছিল ২০১৬ সালে মিরপুরে ৮ উইকেটে ২৭৯।
প্রথম ম্যাচে টস হারের পর বোলিং করতে নেমে বাংলাদেশের দলপতি তামিম ইকবাল বলেছিলেন টস জিতলে তিনি ব্যাটিং নিতেন। দ্বিতীয় ম্যাচে টস জিতে তিনি তার সেই মনোবাঞ্চনা পূর্ণ করেন। তার মনোবাঞ্ছনায় পূর্ণতা এনে দেন লিটন ও মুশফিক। জুটিতে তারা সংগ্রহ করেন ২০২ রান। যা তৃতীয় উইকেট জুটিতে সর্বোচ্চ। এই জুটিতে আগের সর্বোচ্চ রান ছিল ১৭৮। ২০১৫ সালে মিরপুরে পাকিস্তানের বিপক্ষে করেছিলেন তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিম। আর যে কোনো জুটিতে এটি পঞ্চম সর্বোচ্চ রান। সর্বোচ্চ রান ২৯২। প্রথম উইকেট জুটিতে তামিম ইকবাল ও লিটন দাস করেছিলেন ২০২০ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিলেটে।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে এ দিন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা শুরু থেকেই ছিলেন রান সংগ্রহে মনযোগী। শুরুতে লিটন দান একটু নড়বড়ে ছিলেন। কিন্তু ধীরে ধীরে নিজেকে সামলে নিয়ে তিন অংকের ম্যাজিক ফিগারের দেখা পেয়ে ফিরে আসেন। প্রথম পঞ্চাশ করেন ৬৫ বলে। পরের পঞ্চাশ আসে ৪২ বলে শতরান পূর্ণ করেন রশিদ খানের বলে কাভার দিয়ে চার মেরে। এটি ছিল তার পঞ্চম ওয়ানডে সেঞ্চুরি। ৮৭ রানে লিটন একবার জীবন পেয়েছিলেন। মুজিবুরের বলে কাভার ক্যাচ ধরতে পারেননি অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শহিদী। অপরদিকে মুশফিকুর রহিম শুরু থেকেই ছিলেন আস্থার প্রতীক হয়ে। ৫৬ বলে তুলে নেন ক্যারিয়ারের ৪১তম ফিফটি। তিনিও লিটন দাসের মতো রশিদ খানের বলে সুইপ শট খেলে বাউন্ডারি মেরে ফিফটির দেখা পান। ৮৬ রানের ইনিংস খেলার পথে মুশফিকুর রহিমও জীবন পেয়েছিলেন লিটন দাসের মতো মুজিবুরের বলে। তখন তার রান ছিল ৬৯। ক্রিজ ছেড়ে বের হয়ে এসে খেলতে গিয়ে তিনি ব্যাটে-বলে সংযোগ করতে পারেননি। উইকেটের পেছনে দাঁড়ানো বদলি উইকেট কিপার ইমরান আলী খিল। সহজ স্ট্যাম্পিং তিনি মিস করেন। লিটন দাস সেঞ্চুরি করে দলের রান বাড়ানোর দিকে মনযোগী হন। মুশফিক এগোতে থাকেন সেঞ্চুরির দিকে। কিন্তু ফরিদ আহমেদের পরপর দুই বলে দুইজনেই একই রকম ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ইনিংসের ইতি ঘটান। ফরিদের শট বলে পুল করতে গিয়ে ডিপ স্কয়ার লেগে ক্যাচ দেন মুজিবের হাতে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন লিটন দাস। তার ১২৬ বলের ইনিংসে ছিল ২টি ছক্কা ও ১৬টি চার। ফরিদের পরের বলও শর্ট ছিল। মুশফিক র্যাম্প শট খেলে থার্ড ম্যান দিয়ে ছক্কা হাাঁকতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনের কাছাকাছি ফজলহক ফারকীর হাতে ধরা পড়েন। তার ৯৩ বলে ৮৬ রানের ইনিংসে ছিল ৯টি চার।
এই দুই ব্যাটসম্যান কিন্তু জুটি বাঁধার আগেই বিদায় নিয়েছিলেন দলপতি তামিম ইকবাল ও সাকিব। দুই জনেই এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েছিলেন। তামিমকে আউট করে ফজলহক ফারুকী আউট করলেও প্রথম একদিনের ম্যাচের মতো এই ম্যাচে আর ভীতি ছড়াতে পারেননি। তবে রশিদ খান বল হাতে তুলে নিয়েই দ্বিতীয় বলে সাকিবকে আউট করে যে ভীতি ছড়িয়েছিলেন, পরে তা আর ছড়াতে পারেনি। লিটন-মুশফিকের সামনে পড়ে তা জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের পাশ ঘেষা বঙ্গোপোসাগরে বিলীন হয়ে যায়।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ৩০৬/৪, ওভার ৫০ (লিটন দাস ১৩৬, মুশফিকুর রহিম ৮৬, সাকিব ২০, আফিফ ১৩* তামিম ১২, মাহমুদউল্লাহ ৬* , ফরিদ আহমেদ ২/ ৫৬, রমিদ খান ১/৫৪, ফজলহক ফারকী ১/৫৯)।
এমপি/এসএন