বাংলাদেশ-আফগানিস্তান সিরিজ
পেস শক্তি নিয়ে নামবে বাংলাদেশ
একটা সময় ছিল যখন দ্বিপাক্ষিক সিরিজ মানেই ছিল পরস্পরের বিপক্ষে খেলা। জয়ে আনন্দ। হারে বেদনা। তারপর আইসিসির প্রকাশিত র্যাঙ্কিয়ে অবস্থানের উঠা-নামা। কিন্তু এখন আর তা নেই। তিন ফরম্যাটই হয়ে উঠেছে আইসিসিরি আসরের খেলা। বিশেষ করে রঙিণ পোশাকের দুই ফরম্যাটে। সরাসরি খেলার যোগ্যতা নির্ধারণ হয়ে থাকে এই সব সিরিজ থেকে। এবছর অস্ট্রেলিয়া অনুষ্ঠিতব্য টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে র্যাঙ্কিংয়ে ছয়ে থেকে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো সরাসরি খেলার যোগ্যতা অর্জন করে নিয়েছে। এবার আগামী বছর ভারতে অনুষ্ঠিতব্য ওয়ানডে বিশ্বকাপে সরাসরি খেলার যোগ্যতা অর্জন করে নেয়ার পালা। স্বাগতিক ভারত ছাড়া আরো সাতটি দল খেলার সুযোগ পাবে সরাসরি। সেই লক্ষ্যে এগিয়ে চলছে খেলা। তারই ধারাবাহিকতায় আগামীকাল বুধবার থেকে শুরু হবে বাংলাদেশ-আফগানিস্তানের তিন ম্যাচের সিরিজ। পয়েন্ট টেবিলে বাংলাদেশ বেশ সুবিধাজনক অবস্থানে আছে। ১২ ম্যাচে ৮ জয়ে ৮০ পয়েন্ট নিয়ে বাংলাদেশ আছে দ্বিতীয় স্থানে। ১৫ম্যাচে ৯৫ পয়েন্ট নিয়ে সবার উপরে অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু আনুপাতিক হিসেবে আফগানিস্তান বেশ এগিয়ে। তারা ৬ ম্যাচ খেলে সব কটিতেই জয় পেয়ে পূর্ন ৬০ পয়েন্টই পেয়েছে। যদিও পয়েন্ট টেবিলে তাদের অবস্থান ছয়ে।
বাংলাদেশ যে ১২টি ম্যাচ খেলেছে সেখানে জয় পেয়েছে উইন্ডিজ ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৩টি করে ছয়টি এবং শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২টি। হেরেছে নিউ জিল্যান্ডের কাছে ৩টি এবং শ্রীলঙ্কার কাছে ১টিতে। আফগানিস্তান জয় পেয়েছে দুর্বল সব প্রতিপক্ষের বিপক্ষে। আয়ারল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ৩টি করে ছয়টি জয়। আগামীকালই তারা শক্ত কোনো প্রতিপক্ষের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো খেলতে যাচ্ছে।খেলা শুরু হবে বেলা ১১টায়।সরাসরি সম্প্রচার করবে জিটিভি ও টি-স্পোর্টস।
বাংলাদেশ ২১৮ দিন পর বাংলাদেশ ওয়ানডে খেলতে নামার কারণে দলে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। সর্বশেষ খেলা দল থেকে বাদ পড়েছেন ৭ জন ক্রিকেটার। পুরানো কয়েকজনকে ফিরিয়ে আনার সঙ্গে নতুন মুখ হিসেবে সুযোগ দেয়া হয়েছে মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টে নিউজিল্যান্ডকে তাদের মাটিতে প্রথমবারের মতো হারানোর নায়ক এবাদত, সঙ্গে মাহমুদুল হাসান জয়কেও। অবশ্য দীর্ঘ বিরতির পর খেলতে নেমে বাংলাদেশ পূর্ন শক্তির দল নিয়েও খেলতে নামার ক্ষেত্রেও আছে দীর্ঘ বিরতি। এ সময় যতো টেস্ট আর টি-টোয়েন্টি খেলেছে তাতে করে কখনোই দলের সেরা ক্রিকেটারদের পাওয়া যায়নি। তামিমতো ছিলেনই। কখনো ছিলেন না মুশফিকুর রহিম. কখনো ছিলেন না সাকিব কিংবা মাহমুদউল্লাহ। এর সঙ্গে অন্যরাও ছিলেন। কিন্তু আগামীকাল মাশরাফি অবসর নেয়ার পর পঞ্চম পান্ডবে থেকে চার পান্ডবে নেমে আসা তামিম-সাকিব-মুশফিক-মাহমুদউল্রাহ থাকছেনতো। সঙ্গে আছেন লিটন-মোস্তাফিজ-তাসকিন-আফিফও। ২১৮ দিন পর আবার ওয়ানডে ম্যাচে ফেরা তামিম ইকবাল আছেন দুর্দান্ত ফর্মে। বিপিএলে তার ব্যাটে থেকে একটি সেঞ্চুরি আর চারটি হাফ সেঞ্চুরি এসেছিল। সর্বশেষ খেলা সেরা একাদশের মোসাদ্দেক-মোহাম্মদ মিঠুন-মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন-নুরুল হাসান সোহান এবার দলেই নেই। এদের জায়গায় সেরা একাদশে সুযোগ পাওায়ার অপেক্ষায় আছেন মাহমুদুল হাসান জয়, শরিফুল ইসলাম, ইয়াসির আলী চৌধুরী, এবাদত হোসেন, নাসুম আহমেদ, মেহেদি হাসান মিরাজরা।
ওপেনিংয়ে তামিম-লিটন যথারীতি নামলেও তিনে খেলবেন সাকিব। চারে মুশফিক খেললেও পাঁচে ইয়াসির আলী অথবা মাহমুদুল হাসান জয়ের যে কোনো একজনের কথা বলেছেন দলপতি তামিম ইকবাল। যিনিই খেলবেন তার অভিষেক হবে। ছয়ে মাহমুদউল্রাহ আর সাতে আফিফ হোসেন। কিন্তু বাংলাদেশকে ভাবতে হচ্ছে আফগানিস্তোনের স্পিন ত্রয়ী রশিদ-নবী-মুজিবকে নিয়ে। যে কারণে দলকে স্পিন শক্তিতে বলীয়ান হবে, না পেস আক্রমণে? যেহেতু বাংলাদেশের স্পিন আক্রমণ আফগানিস্তানের চেয়ে দুর্বল তাই পেস আক্রমণে নির্ভরশীল হয়ে সেরা একাদশে সাজাবে। সেরা একাদশে তিন পেসারকে রাখা হচ্ছে। মোস্তাফিজ-তাসকিনের সঙ্গে তৃতীয় পেসার কে হবেন শরিফুল না এবাদত এ নিয়ে ভাবতে হচ্ছে টিম ম্যানেজমেন্টকে। এবাদত খেললে তারও অভিষেক হবে। স্পিন আক্রমণে সাকিবের হাতকে শক্তিশালী করার জন্য মেহেদি হাসার মিরাজ ও নাসুম আহমেদের যে কোনো একজনকে দেখা যাবে সেরা একাদশে। ব্যাটিংয়ের কথা বিবেচনা করলে মিরাজ থাকবেন এগিয়ে। আর শুধুই বোলিংয়ের কথা বিবেচনা করেলে নাসুম আহমেদের কপাল খুলে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে তারও অভিষেক হবে।দলনেতা তামিম ইকবাল চাইছেন স্পোর্টিং উইকেট। তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রামের উইকেট তো সাধারণত ভালোই হয়। বিপিএলেও ভালোই ছিল। স্পোর্টিং উইকেট আশা করছি। যেখানে পেসার, ব্যাটসম্যানরা সবার জন্য সহায়তা থাকবে।’
এদিকে আফগানিস্তানের অধিনায়ক হাসমতউল্লাহ বাংলাদেশ দলের দুর্বলতা জানেন বলে জানান। তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের পুরো দল নিয়েই ভাবছি। আমরা সবার জন্য আলাদ করে পরিকল্পনা করেছি। তাদের শক্তি এবং দুর্বলতা জানি।’ আফগানিস্তানের ভয়ংকর লেগ স্পিনার রশিদ খানকে সামাল দিতে মঙ্গলবার চট্টগ্রামে স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের নেট অনুশীলনে দুই লেগ স্পিনার রিশাদ হাসান ও আমিনুল ইসলাম বিপ্লবকে এনে তালিম নেয়।
এমপি