এই দলের টেস্ট খেলার যোগ্যতা আছে: মুমিনুল
পাঁচ দিনের টেস্ট বৃষ্টি ও আলোর স্বল্পতার কারণে নেমে এসেছিল আড়াই দিনে। কিন্তু তারপরও সেই টেস্ট বাঁচাতে পারেনি বাংলাদেশ দল। হেরেছে। তাও আবার ইনিংস ব্যবধানে। কোনো ব্যাখ্যা নেই দলপতি মুমিনুলের। দিতে চান না কোনো অজুহাত। তিনি বলেন, ‘ আমার কাছে বিষয়টি হতাশার। বিশেষ করে ১-৪ ব্যাটসম্যানরা। এক কথায় বলব খুবই বাজে দিন ছিল গতকাল (মঙ্গলবার)। এক সেশনে ৭ উইকেট হারিয়েছি। এখানে অজুহাত দেয়ার কিছু নেই। আমরা খুব বাজে ব্যাট করেছি। এরকম অবস্থায় ফিরে আসা কঠিন। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে মুশফিক-সাকিব ভাই ও লিটন-মিরাজ খুব ভাল চেষ্টা করেছে।’
বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা টেস্ট ক্রিকেট খেলে লিমিটেড ওভারের মতো। আর লিমিটেড ওভারের ম্যাচ খেলে টেস্ট মেজাজে। এখানে কী ব্যাটসম্যানদের এ্যপ্রোচের সমস্যা আছে? জানতে চাওয়া হলে মুমিনুল বলেন, ‘এটা যদি প্রথম ইনিংসের কথা বলেন। দেখেন আমারটাই সিলি মিসটেক ছিল, আমার হয়ত তাড়াহুড়ো করে রান নেয়া উচিত হয়নি। কিন্তু সবাই মারতে গিয়ে আউট হয়নি। কারণ ওই উইকেটে মুশফিক ও লিটনকে সমর্থন করবো। কারণ তখন উইকেটে বল ঘুরছিল অনেক। ওই উইকেটে ওরা যে টার্গেটটা নিয়েছিল যেমন মুশফিক ভাই স্কয়ার অব দ্যা উইকেটে মেরেছিল দুর্ভাগ্যবশত সংযোগ হয় নাই। আসলে এসব উইকেটে বেশি রক্ষনাত্মক খেললে কঠিন হয়ে যায়।’
বুধবারে (৮ ডিসেম্বর) মুশফিকের রান আউট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘যে ফরম্যাটেই খেলেন। সবসময়ই রানটা গুরুত্বপূর্ণ। শুধু রক্ষনাত্মক খেললে হবে না। রানতো নিতে হবে। এতে মাঝে মাঝে একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়। মুশফিক ভাইয়ের রান আউটটা আনলাকি ছিল। ব্যাটটা নিচে থাকলে বেঁচে যেত।’
আড়াই দিনের টেস্ট ম্যাচেও ইনিংস হার। এমন দলের টেস্ট খেলার সামর্থ্য আছে কি না জানতে চাওয়া হলে মুমিনুল হেসে বলেন, ‘আপনার কাছে কি মনে হয়? আমারতো মনে হয় আছে। সাদমান দেখেন এ সিরিজের আগের সিরিজে সেঞ্চুরি মেরেছে। জিম্বাবুয়ের মাটিতে রান করা এতো সহজ না। তার আগে শ্রীলঙ্কাতে শান্ত সেঞ্চুরি করলো। মুশফিক ভাইতো সবসময় সিনিয়র খেলোয়াড়। সাকিব ভাইয়ের কথা তো বলা লাগেনা। হয়তো আমার কথা বলতে পারেন আমি চার ইনিংসে রান করিনি। আমারটা নিয়ে হয়তো প্রশ্ন তুলতে পারেন। এবাদত কিন্তু খুবই ভালো বল করেছে। খালেদ অনেক দিন পরে খেললো, প্রথমদিন হয়তো প্রথম স্পেলে ভালো করতে পারেনি কিন্তু দ্বিতীয় স্পেলে খুবই ভালো বল করেছে। তারপর মিরাজ আছে। আপনি যদি দেখেন সবাই ক্যাপাবল। আমি আপনার সাথে একমত না যে টেস্ট খেলার যোগ্য না। অবশ্যই তাদের টেস্ট খেলার যোগ্যতা আছে দেখেই টেস্ট খেলে।’
টেস্টে ধারাবাহিক এমন ব্যর্থতায় দলকে নেতৃত্ব দেয়াটাকে মুমিনুল কঠিন মনে করেন না, তবে চ্যালেঞ্জিং মনে করেন। তিনি বলেন, ‘কঠিন না। চ্যালেঞ্জিং। আমি এই চ্যালেঞ্জটা নিতে পেরেছি বলে এই সিটে বসে আপনাদের সঙ্গে কথা বলতে পারছি। এটা সবাই নিতে পারে না। এটা আমার মনে হয় একধরনের প্র্যাকটিক্যাল এক্সপেরিয়েন্স। আর দল যখন এরকম অবস্থার মধ্যে দিয়ে যায় তখন সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো এটা আপনি কিভাবে দেখেন। আমি এখনও আশা রাখি এটা চ্যালেঞ্জিং এবং সামনেও চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। আমি এটাকে ইতিবাচক হিসেবে নিচ্ছি। আর চাপ পেয়ে বসেনি। জিনিস নিয়ে সামনে এগোতে হবে।’
নেতৃত্ব পাওয়ার পর মুমিনুল বলেছিলে টেস্ট দল পূর্ণগঠন করবেন। তা কী তিনি পেরেছেন? এ রকম প্রশ্নের জবাবে মুমিনুল সরাসরি আত্মসমর্পন করেন। তিনি বলেন, ‘সত্যি কথা এটা। আমি বলেছিলাম চেষ্টা করবো, কিন্তু পারিনি। দিন শেষে আমরা সবাইতো আসলে রেজাল্ট দেখি। আমরা যেহেতু রেজাল্ট অরিয়েন্টেড, আমরা রেজাল্টটা বেশি কাউন্ট করি। প্রসেসে হয়তো আমরা বিশ্বাস করিনা, আপনি, আমি কিংবা আমরা কেউই করিনা। আমার কাছে মনে হয় আপনি যতই প্রসেস নিয়ে আগান, রেজাল্ট না করলে খুবই কঠিন। রেজাল্ট যেহেতু হয়নি, আমি আপনার সাথে একমত।’
এমপি/এএস