নিজেদের মাঠে ‘ঐতিহাসিক’ ম্যাচে চেনা রূপে ফিরল বসুন্ধরা

বসুন্ধরা ফিরল নিজেদের চেনা রূপে। তাও নিজেদের মাঠে। যে মাঠে প্রথমবারের মতো খেলতে নেমে বাংলাদেশের ফুটবল ইতিহাসে হয়ে গেছে বসুন্ধরা কিংসের নাম লেখা। বাংলাদেশের ক্লাব ফুটবলে প্রথমবারের মতো কোনো ক্লাব হিসেবে বসুন্ধরা কিংস খেলেছে নিজেদের স্টেডিয়াম বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায়। এমন লগনকে কে না চাইবে বর্নিল করে সাজাতে। আর সেই সাজানো মানে ফুলে ফুলে কিংবা রং বেরংয়ের ফেস্টুন-ব্যানার দিয়ে নয়। দুই পায়ের কারুকাজে মনমাতানো খেলা উপহার দিয়ে। সেই কাজটি বসুন্ধরা কিংস করেছ নিখুতভাবে। প্রতিপক্ষ পুলিশকে পেয়ে হারিয়েছে ৩-০ গোলে। এর চেয়ে ভালো সূচনা আর কি হতে পারে? বসুন্ধরার হয়ে গোল করেন রবসন ২টি ও বাংলাদেশি নাগরিকত্ব পাওয়া নাইজেরিয়ান এলিটা কিংসলে ১টি। ৪ ম্যাচে বসুন্ধরার এটি ছিল তৃতীয় জয়। পয়েন্ট ৯। পুলিশের সমান ম্যাচে দ্বিতীয় হার। ২ ড্র থেকে তাদের পয়েন্ট ২।
নিজেদের মাঠে প্রথমবারের মতো খেলতে বসুন্ধরা চেনা রূপে ফেরার আগে এবারের লিগে ছিল অনেকটাই বিবর্ণ। স্বাধীনতা সংঘের কাছে হার দিয়ে শুরু করে লিগ। পরের দুই খেলায় জয় পেলেও ব্যবধান ছিল ১-০ গোলে। যা অন্তত বসুন্ধরা কিংসের মতো দলের সঙ্গে সম্পূর্ণ বেমানান ছিল। শেষ পর্যন্ত বড় জয় দিয়েই তারা যাত্রা শুরু করল।
বড় জয় দিয়ে শুভ সূচনা করলেও কিন্তু বসুন্ধরাকে ৬৫ মিনিট পর্যন্ত গোলবঞ্চিত করে রেখেছিল পুলিশ। মনে হচ্ছিল বসুন্ধরা এই ম্যাচেও পয়েন্ট হারাতে পারে কিংবা জিতলেও আগের মতো নুন্যতম ব্যবধানে। পুলিশের জমাট রক্ষণভাগের কারণে বসুন্ধরার জন্য গোল বের করে নেয়া কষ্ট সাধ্য হয়ে উঠেছিল। প্রথমার্ধে ১৫ মিনিটে ইব্রাহিমের কাছ বাড়িয়ে দিয়েছিলেন গোলমুখে থাকা তৌহিদুল আলম সবুজকে। কিন্তু তিনি বলই ধরতে পারেননি। ৩৪ মিনিটে মাসুক মিয়ার জনির বক্সের বাইরে থেকে নেয়া শট পুলিশের গোলরক্ষক নেহাল গ্রিপে নিয়ে নেন। ৪০ মিনিটে বসুন্ধরা নিশ্চিত একটি গোল থেকে বঞ্চিত হয়। ২ জনকে কাটিয়ে রবসনের নেয়া শট ক্রস বারে লাগলে বসুন্ধরা গোল বঞ্চিত হয়।
প্রথমার্ধে কোনো গোল না পাওয়াতে বসুন্ধরা কিংসের কোচ অস্কার ব্রুজেন দুইটি পরিবর্তন আনে দ্বিতীয়ার্ধে দলকে খেলতে নামান। সুমন রেজার পরিবর্তে এলিটা কিংসলে এবং সবুজের পরিবর্তে মাহাদী ইউসুখ খানকে নামানোর পর বসুন্ধরার খেলার গতি কিছুটা বেগবান হয়। সফলও হয় তারা। তিনটি গোলেই ছিল এই দুই জনের স্পর্শ। এলিটা গোল করেন। আর মাহাদি দুইটি গোলে সহযোগিতা করেন। বসুন্ধরা গোলের মুখ দেখে ৬৬ মিনিটে। বদলি মাহাদির কাছ থেকে বল পেয়ে রবিনিয়োা ডান পায়ের কোনাকুনি শর্টে নিশানাভেদ করেন। বসুন্ধরার দ্বিতীয় গোল ছিল পেনাল্টি থেকে। ৭৫ মিনিটে রেফারির দেয়া এই পেনাল্টি নিয়েও আছে বিতর্ক। বক্সে বল নিয়ন্ত্রণের লড়াইয়ে পুলিশের অগাস্তোর হালকা ছুঁয়াতে পড় যান মাহাদি। রেফিারি বাজান পেনল্টি বাঁশি। পুলিশের ফুটবলার রেফারির এই সিদ্ধোন্তেন প্রতিবাদও জানান। কিন্তু তাতে রেফারির তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেননি। পেনাল্টি থেকে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন রবিনিয়ো। খেলা শেষ হওয়ার ৩ মিনিট আগে মাহাদির কাছ থেকে বল পেয়ে এলিটা কিংসলে ডান দিক দিয়ে বক্সে ডুকে দেখে-শুনে বাম বায়ের প্লেসি শটে গোল করেন।
এমপি/
