খুলনার প্লে অফ ভাগ্য ঝুলে থাকল কুমিল্লাতেই
আগেই প্লে অফ নিশ্চিত করা কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের সামনে শীর্ষে উঠার পালা। বিপরীতে খুলনার লক্ষ্য প্লে অফ রাউন্ডে যাওয়ার লড়াইয়ে টিকে থাকা। যেখানে সফল হয়েছে কুমিল্লা। ব্যাটে-বলে খুলনাকে পাত্তাই দেয়নি। ব্যাট হাতে মঈন আলী ও লিটন দাসের ঝড়ের পর বল হাতে আবু হায়দার রনি, মোস্তাফিজ, মঈন আলী, নাহিদুলের রাজত্বে কুমিল্লা বিনা বাঁধায় ম্যাচ জিতেছে ৬৫ রানে। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে কুমিল্লা করে ৬ উইকেটে এই আসরে তাদের সর্বোচ্চ ১৮৮ রান। জবাব দিতে নেমে খুলনার ইনিংস তাসের ঘরের মতো ভেঙ্গে পড়ে অলআউট হয় ১৯.৩ ওভারে ১২৩ রানে। এই জয়ে ৯ ম্যাচে ১৩ পয়েন্ট নেট রান রেটে ফরচুন বরিশালকে নিচে নামিয়ে কুমিল্লা উঠে গেছে শীর্ষে। আর খুলনা ভাগ্য ঝুলে থাকলো এই কুমিল্লারই হাতে।
আগামীকাল শনিবার আবার তারা মুখোমুখি হবে। অবশ্য আজকের ম্যাচে বড় ব্যবধানে হেরে খুলনার (-২০.১৪) নেট রান রেট অনেক মাইনাস হয়ে গেছে। পয়েন্ট টেবিলে তাদের অবস্থান পাঁচে। সমান পয়েন্ট নিয়ে নেট রান রেটে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ( -০.১৭২) আছে চারে। চট্টগ্রামেরও ভাগ্য নির্ধারিত হবে আগামীকাল সিলেট সানরাইজার্সের বিপক্ষে। সিলেট আসর থেকে আগেই বাদ পড়েছে।
কুমিল্লার ইনিংসে ঝড়ো ব্যাটিং করেন লিটন দাস ও ম্যাচ সেরা মঈন আলী। দুই জনের স্ট্রাইক রেট ছিল দুইশর উপরে। লিটন দাসের ২৪১.১৭ ও মঈন আলীর ২১৪.২৮। শুরুটা লিটনের হাত ধরে। পার্টনার মাহমুদুল হাসান জয়কে দর্শক বানিয়ে লিটন মাঘের কনকনে শীতে চার-ছয় মেরে উত্তাপ ঝড়িয়ে দেন। খালেদের প্রথম ওভারে ৩ রান আসার পরও ৩ ওভারে শেষ রান ৩৮। কুমিল্লার রান বন্যার ইনিংসে একমাত্র নাবিল সামাদ ছাড়া বাকি সব বোলারের ওভার প্রতি রান গড়ে আটে উপরে, সেখানে নাবিল সাদামের ছয়। অথচ তার করা ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই লিটন দাস চড়া ও হয়ে ১৬ রান সংগ্রহ করেন। খালেদের প্রথম ওভারে রান নেয়াটা পরের ওভারে লিটন দাস ও জয় মিলিয়ে পুষিয়ে দেন ১৯ রান নিয়ে।এই ওভারেই লিটন দাস উইকেটের পেছনে মুশফিকুর রহিমের কল্যানে বেঁচে যান ২১ রানে। পরে সেটি হয় চার। পরের বলে মারেন ছয়।
ব্যাটিং পাওয়ার প্লেতে রান আসে ১ উইকেটে ৫২। এরপরই লিটন দাস আউট হয়ে যান থিসারা পেরেরা বলে ১৭ বলে ৩ ছক্ক ও ৪ চারে ৪১ রান করে। তার আগে ১৫ বলে ১১ রান করে জয় আউট হন। ইমরুল কায়েসও (৫) দ্রুত বিদায় নেন। কিন্তু ডু প্লেসি যেন নামের প্রতি সুবিচার করতে পারছিলেন না। রানের চেয়ে বলের ব্যবহার ছিল বেশি। মঈন আলী এসে যখন জুটি বাঁধন তখন ডু প্লেসির রান ছিল ১৪ বলে ১৫। মঈন এসেও একটু সময় নেন। ফলে ১২ ওভার শেষে রানের গতিও নামতে নামতে সাতের নিচে (৬.৭৫) চলে আসে। এ সময় ডু প্লেসির রান ছিল ২৫ বলে ২০, মঈন আলীর ৭ বলে ৪। দলের রান ৮১। এরপর মেহেদী হাসানের ওভারে তিন ছক্কায় মেরে শুরু হয় মঈন আলীর তান্ডব। যে তান্ডবে শেষ ৮ ওভারে রান যোগ হয় ১০৭।ডু প্লেসির সঙ্গে চতুর্থ উইকেট জুটিতে ৮৩ রান যোগ করেন ৭.৪ ওভারে। মঈন আলী ২৩ বলে ৭ ছক্কায় ফিফটি করেন। এটি ছিল টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে তার পচিশতম ফিফটি। মঈন আলীর তান্ডব দেখে ডু প্লেসিও খোলস ছেড়ে[ বের হয়ে আসেন। আউট হওয়ার আগে স্ট্রাইক রেট একশর উপরে নিয়ে যান। করেন ৩৬ বলে ৩৮ রান। রানের চাকার উর্ধ্বগতি ধারা বজায় রাখতে গিয়ে মঈন আলী আউট হন থিসারা পেরেরা বলে ইয়াসির আলীর দর্শনীয় ক্যাচে তালুবন্দি হয়ে। তিনি ৩৫ বলে করেন ৭৩ রান। ইনিংসে ৯ ছক্কা মারার পর তিনি একমাত্র বাউণ্ডরি মারেন। শেষের দিকে মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন করেন ৬ বলে লপরাজিত ১২ রান। থিসারা পেরেরা ২৮ রানে নেন ২ উইকেট।
জবাব দিতে নেমে খুলনার শুরুটা ভালোই ছিল। নাহিদুলের ওভার থেকে আন্দ্রে ফ্লেচার ১৬ রান আদায় করে নেন। কিন্তু মোস্তাফিজের করা পরের ওভারেই ঘটেপ বিপত্তি। পরপর দুই বলে দলীয় ১৭ রানেই তিনি ফিরে দেন দুই ওপেনার রনি তালুকদার (০) ও আন্দ্রে ফ্লেচার (১৬)। এই ধাক্কা পরে আর কেউ সামাল দিতে পারেননি। পড়তে থাকে উইকেট। শেষে ৩ বল বাকি থাকতেই খুলনা অলআউট হয় ১২৩ রানে। সর্বোচ্চ ২৬ রান আসে পেরেরা ব্যাট থেকে। সৌম্য করেন ২২ রান। আবু হায়দার রনি ১৯ রানে নেন ৩ উইকেট। মোস্তাফিজ, মঈন আলী ও নাহিদুল নেন ২টি করে উইকেট।
এমপি