ঢাকায় শুরু আজ দুই দলের প্লে অফে উঠার লড়াই
বিপিএলের এবারের সূচি ছিল অদ্ভুত। ডাবল লিগ পদ্ধতির খেলা। একবার করে সব দল একে অপরের বিপক্ষে খেলার পর আবার নিজেদের মাঝে খেলা শুরু করবে। কিন্তু এ সবের কোনো বালাই ছিল না। দেখা গেছে কোন একটি দল অপর একটি দলের বিপক্ষে খেলার আগেই অন্য কোনো দলের বিপক্ষে পরপর দুইবার খেলে ফেলেছে। যেমন চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ও খুলনা টাইগার্স পরপর দুইটি ম্যাচ খেলেছে নিজেদের মাঝে। তাও বিপিএলের শুরুতে। যা ছিল চট্টগ্রামের তৃতীয় ও চতুর্থ ম্যাচ এবং খুলনার দ্বিতীয় ও তৃতীয় ম্যাচ। একইভাবে মিনিস্টার গ্রুপ ঢাকা ও সিলেট সানরাইজার্সও পরপর দুইটি ম্যাচ খেলেছে নিজেদের মাঝে। ঢাকার চতুর্থ ও পঞ্চম এবং সিলেটের দ্বিতীয় ও তৃতীয় ম্যাচ ছিল। খুলনা ও বরিশালও এভাবে পরপর দুইটি ম্যাচ খেলেছে।
এ রকম ম্যাচ আরও আছে। আজ যখন ঢাকায় বিপিএলের শেষ দুই রাউন্ডের ম্যাচ শুরু হবে, যেখানে থেকে প্লে অফ রাউন্ডের বাকি দুইটি দল উঠে আসবে, সেখানেও দুইটি দল নিজেদের শেষ দুইটি ম্যাচ খেলবে নিজেদের মাঝে। এই দল দুইটি হলো কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস ও খুলনা টাইগার্স। আজ দিনের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হবে এই দুই দল। ৮ ম্যাচে ১১ পয়েন্ট নিয়ে কুমিল্লা প্লে অফ রাউন্ড নিশ্চিত করলেও ৮ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট নিয়ে খুলনা ঝুলে আছে। খুলনার লড়াই হবে মিনিস্টার গ্রুপ ঢাকার ও চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের সঙ্গে। খুলনার দুইটি ম্যাচ বাকি থাকলেও ঢাকা ও চট্টগ্রামের একটি করে ম্যাচ অবশিষ্ঠ আছে। ঢাকার ৯ ম্যাচে ৯ পয়েন্ট, চট্টগ্রামের ৯ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট। আজ দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হবে ঢাকা ও ৯ ম্যাচে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের সবার উপরে থাকা ফরচুন বরিশাল।
প্লে অফ নিশ্চিত করলেও কুমিল্লার এখন টার্গেট থাকবে পয়েন্ট টেবিলে সবার উপরে থাকা কিংবা দুইয়ে থাকা। তা’হলে তারা প্লে অফে কোয়ালিফায়ার রাউন্ড-১ খেলতে পারবে। যেখানে জিতলেই ফাইনালে। আর হেরে গেলেও সব শেষ হয়ে যাবে না। পরে ফাইনালে উঠার জন্য এলিমেনেটর রাউন্ডে বিজয়ী দলের সঙ্গে আরেকবার খেলার সুযোগ পাবে। এখানে তাদের প্রতিপক্ষ খুলনাই। দুইটি ম্যাচ খুলনা জিতলে তারা দুইয়ে উঠে আসবে। আর কুমিল্লা যে কোন এক ম্যাচ জিতলেই লক্ষ্য পূরণ হবে। কিন্তু খুলনা যদি একটিতে জয়ী হয় ও আরেকটিতে হেরে যায়,তাহলে তাদের প্লে অফ রাউন্ডে যাওয়াটা ঝুলে যাবে। তখন দেখতে হবে পয়েন্ট টেবিলে ঢাকা কিংবা চট্টগ্রামের অবস্থান কী?
এবারের আসরে সব থেকে তারকা সমৃদ্ধ দল ঢাকা। সেই দলের ভাগ্যও কিন্তু ঝুলে আছে। প্লে অফ রাউন্ডে যেতে হলে আজ তাদের জিততেই হবে। বরিশালকে হারালে তারা তৃতীয় দল হিসেবে পৌছে যাবে প্লে অফ রাউন্ডে। হেরে গেলেও যে বাদ পড়ে যাবে তা কিন্তু নয়; তখন চট্টগ্রাম ও খুলনার সব ম্যাচে হার কামনা করতে হবে। তারপর বাইলজ অনুসরন করতে হবে। তবে ঢাকা চাইবে না এতো সব জটিল সমীকরণে যেতে। বরিশালকে হারাতে পারলেই সব হিসেব শেষ হয়ে যাবে। তখন বাকি থাকবে খুলনা ও চট্টগ্রামের মাঝে কে যাবে প্লে অফ রাউন্ডে।
বরিশাল ও ঢাকার প্রথম লড়াইয়ে শেষ হাসি হেসেছিল ঢাকা। লো-স্কোরিং ম্যাচে জিতেছিল ৪ উইকেটে। যা ছিল প্রথম দুই ম্যাচে হারের পর ঢাকার প্রথম জয়।
বরিশাল এখন অপ্রতিরোধ্য। শেষ পাঁচ ম্যাচে তারা হারেনি। চারটিতে জিতেছিল। একটি হয়েছিল পরিত্যক্ত। বরিশালের চারটি জয়েই ম্যাচ সেরা হয়েছেন সাকিব। ঢাকাও শুরুর ব্যর্থতা কাটিয়ে উঠে জয়ের ধারার ফিরেছিল। আগের ম্যাচে চট্টগ্রামের কাছে হারের পূর্বে তারা চার ম্যাচের তিনটিতে জিতেছিল। একটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছিল। চট্টগ্রামের কাছে হেরেছিল লো-স্কোরিং ম্যাচে। শেষ ওভারে ৯ রানের প্রয়োজন ছিল। ক্রিজে তামিম ইকবাল ও মোহাম্ম নাঈমের মতো জাতীয় দলের দুই ওপেনার থাকার পরও করেছিল মাত্র ৫ রান। যেখানে ছিল আবার একটি ওয়াইড ও একটি নো বল। নো বল ছিল শেষ বলে। জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল তখন ৫ রানের। ফ্রি। হিট কিন্তু মোহাম্মদ নাঈম তা কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন। রান আসে ১। হার ছিল ৩ রানে। গেন ওভারে তামিম ইকবাল মাত্র ১ বল খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন। আজকের ম্যাচে কিন্তু ঢাকার কোনো রকমের ভুল করা চলবে না। ভুল করলেই তার মাশুল দিতে হবে চড়া মূল্যে?
এমপি/কেএফ/