বসুন্ধরা কিংসের ঘাম ঝরানো জয়

ঘরোয়া ফুটবলের পাওয়ার হাউজ বসুন্ধরা কিংসের নতুন মৌসুমটা মোটেই ভালো যাচ্ছে না। স্বাধীনতা কাপে রানার্স আপ হওয়ার পর ফেডারশেন কাপ খেলেনি 'মাঠ খেলার অনুপোযুক্ত' অভিযোগ এনে। এরপর প্রিমিয়ার লিগ শুরু হয়। সেখানেও কপাল মন্দ। নবাগত স্বাধীনতা ক্রীড়া সংঘের কাছে ১-২ গোলে হেরে লিগ শুরু করেছিল। খেলাও ছিল তাদের দৃষ্টিকটু, পরিকল্পহীন। সেই দুঃসময় যেন পিছু ছাড়ছে না। সোমবার উত্তরা বারিধারার বিপক্ষে কোনো রকমে ১-০ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে অস্কার ব্রুজেনের শিষ্যরা। গতবার লিগে উত্তরা বারিধারা ক্লাব কোনো রকমে অবনমনের হাত থেকে পরিত্রান পেয়েছিল। ১৩ দলের মাঝে তাদের অবস্থান ছিল ১১ নম্বারে। লিগে এটি ছিল তাদের টানা দ্বিতীয় হার। প্রথম ম্যাচে তারা হেরেছিল শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের কাছে ১-২ গোলে।
বসুন্ধরা কিংসের খেলায় কি পরিমান ছন্দ পতন ঘটেছে তা ধারনা করার জন্য গতবারে লিগে দুই দলের খেলার ফলাফলের দিকে দৃষ্টি ফেরানো যায়। বসুন্ধরা কিংস জিতেছিল ২-০ ও ৬-০ গোলের ব্যবধানে। আগের ম্যাচে অপ্রত্যাশিত হারের কারণে পরের ম্যাচে কোচ সেরা একাদশে পরিবর্তন আনবেন এটাই স্বাভাবিক। অস্কার ব্রুজেনও তাই করেন। সুমন রেজা ও মাশুক মিয়া জনির বদলে তৌহিদুল আলম সবুজ ও ইয়াসিন আরাফাতকে সেরা একাদশে রাখা হয়। কিন্তু মুন্সিগঞ্জের বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লে. মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে তার প্রতিফলন দেখা যায়নি। শুরু থেকে আক্রমণে ছিল উত্তরা বারিধারা। ১৫ মিনিটে গোলের সুযোগও তৈরি করে নিয়েছিল। কিন্তু গোলরক্ষককে একা পেয়েও সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি উজবেকিস্তানের রক্ষণের সাইদস্তোন ফজিলভ। মোস্তফা খারাবার ফ্রি কিক থেকে ফজিলভ বক্সে ঢুকে বল নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে গোলরক্ষককে একা পেয়ে যান। কিন্তু তার নেওয়া শট আটকে দেন ইরানি খালিদ শাফিই। ২৭ মিনিটে বারিধারার দ্বিতীয় সুযোগ আসে। পাপন সিংহের থ্রো পাস থেকে বল ধরে বক্সের দিকে ছুটছিলেন আরিফ হোসেন। কিন্তু স্লাইডিং ট্যাকেলে তাকে রুখে দেন বিশ্বনাথ ঘোষ। বারিধারার চাপ সামাল দিয়ে বসুন্ধরা খেলার ফেরার চেষ্টা করে। প্রতি আক্রমণে গোলও পেয়ে যায় তারা। ডানদিক থেকে মোহাম্মদ ইব্রাহিমের ক্রস থেকে সবুজের হেডে কিংসের হয়ে গোলের খাতা খুললেন বসনিয়া-হার্জেগোভিনার ফরোয়ার্ড স্তইয়ান ভ্রানিয়াস। ৪২ মিনিটে শাফির ক্রস থেকে ইব্রাহিমের হেড বাইরে দিয়ে চলে যায়। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে বুসন্ধরা কিংস ২-০ গোলে লিড নিতে চলছিল। কিন্তু পারেনি। বিশ্বনাথের ক্রস গোলরক্ষক সাইফুল ইসলাম খানের গ্লাভস থেকে বের হয়ে যায়। সেই বল ধরার জন্য ছুটে গিয়েছিলেন সবুজ। কিন্তু তিনি ধরার আগেই তা গ্লাভসে পুরে নেন।
প্রথমার্ধে এক গোলে এগিয়ে থাকার পরও দ্বিতীয়ার্ধে তাদের খেলার ধার কিছুটা বাড়ে। বল নিজেদের নিয়নন্ত্রণে রেখে বেশ কয়েকটি আক্রমণ তৈরি করেছিল। কিন্তু গোলের দেখা আর পায়নি। ৭০ মিনিটে রবিনিয়োর ফ্রি থেকে শাফিইয়ের হেড বার ঘেষে বাইরে চলে যায়। পাল্টা আক্রমণ থেকে বারিধারার পাপন সিংয়ের শট সরাসরি গোলরক্ষকের হাতে জমা পড়ে। ৭৮ মিনিটে ভ্রানিয়াসের জোরালো শট ফজিলভ আটকে দেন। ৮৩ মিনিটে সোহেল রানার থ্রু পাস থেকে রবিনিয়োর শট গোলরক্ষক আজাদ হোসেন ফিরিয়ে দেন। ৯০ মিনিটে রবিনিয়োর ফ্রি কিক থেকে কাতার প্রবাসী নবাব বল বুক দিয়ে রিসিভ করে ঠিকমতো শট নিতে না পারলে গোল বঞ্চিত হয় বসুন্ধরা ।
এমপি/এএস
