সিলেটের জামাই মঈন আলী

সিলেটকে বলা হয় বাংলাদেশের লন্ডন। লন্ডনে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের যে কোনো অর্জনে দেখা যায় তিনি সিলেটের বা সিলেটের সঙ্গে তার যোগসূত্র রয়েছে। এবার সে রকমই এক যোগসূত্র দেখা গেছে ইংল্যান্ড জাতীয় দলের ক্রিকেটার অলরাউন্ডার মঈন আলীর।
তিনি সিলেটী কন্যা বিয়ে করেছেন। কনের নাম ফিরোজা হোসেন। বর্তমানে মঈন আলী সিলেটেই অবস্থান করছেন। তবে তা বিয়ের কারণে নয়, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের হয়ে বিপিএলে খেলতে।
মঈন আলী কিন্তু এবারই প্রথম বাংলাদেশে আসেননি। জাতীয় দল, অনূর্ধ্ব-১৯. বিপিএল, ঢাকা প্রিমিয়ার বিভাগ ক্রিকেট লিগ খেলতে অসংখ্যবার বাংলাদেশে এসেছেন। কিন্তু এবারই প্রথম সিলেট গিয়েছেন। আর সেখানে গিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় জানান তার শশুড় বাড়ি সিলেটে। তারপর এ নিয়ে বলেন অনেক কথা।
মঈন আলীর পৈতৃক বাড়ি পাকিস্তানে। কিন্তু তারও ফিরোজার মতো ইংল্যান্ডে জন্ম ও বেড়ে উঠা। সেখানেই ফিরোজার সঙ্গে পরিচয় ও পরিণয়। বিয়ের আগে-পরে ফিরোজা বাংলাদেশে বেশ কয়েকবার এসেছেন। এদিকে মঈন আলী বিয়ের পর বেশ কয়েকবার বাংলাদেশে আসেলেও কখনই সিলেটে আসা হয়নি। এবার সে সুযোগ হওয়ার কারণ বিপিএল সিলেটে খেলার পাশাপাশি তার স্ত্রী সন্তানেরাও বাংলাদেশে এসেছেন। যদিও তারা এখনো সিলেটে আসেননি। ঢাকায় অবস্থা করছেন। দুই-এক দিনের মধ্যেই তারা সিলেট আসবেন। মঈন আলী বলেন, ‘আমি এবারই প্রথম সিলেট এসেছি। কিন্তু এর আগেও আমার পরিবারের পক্ষ থেকে আমাকে সিলেট যাওয়ার জন্য বলত, ‘চলো সিলেট থেকে ঘুরে আসি।’ কিন্তু আমি সময় করে উঠতে পারিনি।’ এবার আসতে পেরে ভালো লাগছে বলে জানান মঈন আলী। কিন্তু জৈব সুরক্ষা বলয়ের কারণে বাইরে বের হতে না পারার কারণে তিনি হতাশ বলে জানান। মঈন আলী বলেন, ‘এবার সিলেট আসতে পেরে ভালো লাগছে। আমার স্ত্রীসহ পরিবারের অনেকেই এসেছে। তারা সবাই ঢাকায় আছেন। দুই/একদিনের মধ্যেই তারা সবাই সিলেট চলে আসবে। এই সুযোগে আমাদের পারিবারিক পুনর্মিলনীও হয়ে যাচ্ছে।’
এত কাছে, তবু দূরে। মঈন আলীর জন্য হয়েছে সে রকমই। সিলেটে এসেছেন। সিলেট বিভাগীয় স্টেডিয়াম থেকে হাঁটা দূরত্বে পীর মহল্লায় শশুর বাড়ি। কিন্তু তার সেখানে আপাতত যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। কারণ তিনি আছেন দলের সঙ্গে বায়োবাবলে। তিনি বলেন, ‘বাইরে বের হতে না পেরে আমি হতাশ।’।
লন্ডনে বাংলাদেশি বংশদ্ভুতরা বাংলা ভাষায় ভালোভাবে কথা বলতে পারেন না। অনেকে বুঝেনও না। কিন্তু সিলেটের আঞ্চলিক ভাষায় তারা বুঝেন, কথাও বলতে পারেন। মঈন আলীও সে পথে হেঁটেছেন। তিনি অল্প অল্প সিলেটী ভাষা শিখেছেন। আরো কিছু ভাষা তার শেখার ইচ্ছে আছে। এবার তিনি সেই চেষ্টা করবেন। তিনি বলেন, ‘আমি সিলেটি ভাষার কয়েকটি শব্দ শিখেছি। আরও বেশি বলতে পারলে ভালো হতো। আমি চেষ্টা করব আরও কিছু কথা শিখতে। আমি যে হোটেলে আছি, সেই হোটেলের লোকেরা আমার সঙ্গে সিলেটী ভাষায় কথা বলে। আমি সেখান থেকে শেখার চেষ্টা করছি।
মঈন আলী প্রথম বাংলাদেশে আসেন ২০০৫ সালে ইংল্যান্ড অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে। ২০১০ সালে মোহামেডানের হয়ে প্রিমিয়ার বিভাগ ক্রিকেট লিগ খেলে গেছেন। সেই দলে খেলেছিলেন তখন সাকিব-তামিম। ২০১৩ সালে দুরন্ত রাজশাহীর হয়ে খেলে যান বিপিএল। এরপর আসেন ২০১৬ সালে জাতীয় দলের হয়ে।
এমপি/এমএমএ/
