টি-টোয়েন্টিতে পরিবর্তনের ডাক দিয়ে সফল হবে কি বাংলাদেশ
ক্রিকেটের রঙিন পোষাকের দুনিয়ায় ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের ভিত যতটা মজবুত, সেখানে টি-টোয়েন্টিতে পায়ের নিচে মাটিই নেই! খেলতে নামলে ২২ গজে হাবুডুবু খায়। অসহায়দের মত ছটফট করতে থাকে। একটি করে সিরিজ বা টুর্নামেন্ট আসে, আর আশার ফুলঝুরি ছিটিয়ে বলা হয় ভালো কিছু হবে এবার। কিন্তু কথা কথাতেই থেকে যায়। অবস্থার আর কোনো পরিবর্তন হয় না। রেকর্ডের পাল্লা ভারী হয় ব্যর্থতার দিক দিয়ে।
সেই বাংলাদেশের সামনে আবার আরেকটি টি-টোয়েন্টি সিরিজের দরজা খুলতে যাচ্ছে। আজ চট্টগ্রামে বেলা ৩টায় তারা মুখোমুখি হবে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে । সিরিজে ম্যাচ তিনটি। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট শুরু হওয়ার পর এবারই প্রথম বাংলাদেশ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ খেলবে। এর আগে তারা ম্যাচ খেলেছে মাত্র একটি। ২০২১ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবিতে বাংলাদেশ হেরেছিল ৮ উইকেটে।
আজকের ম্যাচে সব দিক দিয়েই বাংলাদেশ আছে স্রোতের বিপরীতে। এমনিতে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে বাংলাদেশের নাজুক অবস্থা। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নেই খেলার একাধিক অভিজ্ঞতা। ইংল্যান্ড আবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন।
সময় বাজে যায় বলে সবসময় যাবে এমনতো কোনো কথা নয়। সেই বাজে সময় উত্তোরণের জন্য চেষ্টা করা হয়ে থাকে। কিন্তু সাফল্য আসেনি। তাই বলে হালও ছেড়ে দেয়া হয়নি। প্রতিবার যখনই খেলা আসে, তখন নতুন করে ফুলানো হয় আশার বেলুন। এবারও আশার বেলুন ফোলানোর জন্য স্বপ্নের জাল বুনন করা হয়েছে। দেওয়া হয়েছে পরিবর্তনের ডাক।
নতুন করে আবার দায়িত্ব নেওয়া লঙ্কান চন্ডিকা হাথুরুসিংহের হাত ধরে এই জগতে পেখম মেলতে চায় বাংলাদেশ। কাজটি খুবই কঠিন। তারপরও সেই কঠিনেরেই জয় করতে চান হাথুরু। টার্গেট ২০২৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। হাতে আছে পর্যাপ্ত সময়। তাইতো দল সাজতে চান ঢেলে। শুরুটা এই সিরিজ দিয়ে। সর্বশেষ খেলা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দল থেকে আনা হয়েছে ব্যাপক পরিবর্তন। এক দু্ই করে পরিবর্তনে সংখ্যা পাঁচটি। বিপিএলে ভালো করার পুরস্কার হিসেবে সবাইকে নেওয়া হয়েছে দলে। যেখানে নতুন মুখের সন্ধানে আছেন তিনজন ব্যাটসম্যান তৌহিদ হৃদয়, পেসার রেজাউর রহমান রাজা ও স্পিনার তানভীর ইসলাম। দীর্ঘ বিরতি (৮ বছর) পর ফিরিয়ে আনা হয়েছে ওপেনার রনি তালুকদার। ফিরিয়ে আনার তালিকায় আছেন মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান শামীম হোসেন পাটোয়ারীও। একমাত্র রনি তালুকদার ছাড়া বাকি সবাই তারুণ্যের প্রতিনিধি।
বাংলাদেশের মত ইংল্যান্ডও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর প্রথম খেলতে নামবে। কিন্তু তাদের শরীরে মাখানো আছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপার ঘ্রান। শিরোপা জেতা ফাইনাল ম্যাচসহ সর্বশেষ টানা ৪ ম্যাচ তারা জিতেছে। এখন পর্যন্ত তারা ১৭০টি ম্যাচ খেলে জয় পেয়েছে ৯২টিতে। হেরেছে ৭২টিতে। ফলাফলহীন ছিল ৬টিতে। জয়ের সেই ধারা তারা এই সিরিজেও টেনে আনতে চায়। যদিও ইংল্যান্ড দল পূর্ণ শক্তির নয়। তারপরও দলের প্রতিনিধি হয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসা বোলার ক্রিস ওকস জানিয়েছেন সেরকমটিই। তিনি বলেন, ‘ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর আমরা আর কোনো ম্যাচ খেলিনি। আমরা যে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন, তার প্রমাণ রাখার সুযোগ এই সিরিজ । এখানকার কন্ডিশনে খেলাটা আমাদের জন্য অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। বাংলাদেশের কন্ডিশনে বাংলাদেশ খুবই শক্তিশালী দল। ’
তিনি আরও বলেন, আমরা যে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন সেটার ছাপ রেখে যাওয়ার একটা বড় সুযোগ এই সিরিজ। বিশ্বকাপ জয়ের পর থেকে আমরা আর কোনো সিরিজ খেলিনি। তাই আবারও, এই কন্ডিশনে আমাদের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ। এখানে বাংলাদেশের মতো ভালো দলের বিপক্ষে খেলাটা রোমাঞ্চকর।
বাংলাদেশ ১৪৪ ম্যাচ খেলে জয় পেয়েছে ৪৯টিতে। হেরেছে ৯২টিতে। ৩টি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছিল।
এমপি/আরএ/