অস্ত্র নিয়ে প্রস্তুত ডোমিঙ্গো বাহিনী
বাংলাদেশ যেমন কাউকে আমন্ত্রণ জানিয়ে স্পিনিং পিচ তৈরি করে আতিথেয়তা দিয়ে থাকে, তেমনি নিউ জিল্যান্ড দিয়ে থাকে পেস ব্যাটারি দিয়ে। বাংলাদেশ নিজেদের পাতা ফাঁদ থেকে সুবিধা খুব বেশি নিতে পারেনা। বলা যায় নিজেদের ফাঁদে নিজেরাই পড়ে। যেমন ২০১৯ সালে স্পিনিং উইকেট বানিয়ে আফগানিস্তানের মতো টেস্টের দুগ্ধ শিশুর কাছে ঘায়েল হয়েছিল ২২৪ রানে হেরে। নিউ জিল্যান্ড কিন্তু তাদের পাতা ফাঁদের পুরোটাই ফায়দা নিয়ে থাকে। তাইতো তারা ঘরের মাঠে অপরাজেয় হয়ে উঠেছিল। বাংলাদেশ সেখানে কাঁটা বিছিয়ে দিয়েছে মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে প্রথম টেস্ট ৮ উইকেটে জিতে। এটি ছিল ২০১৭ সালের পর ঘরের মাঠে তাদের প্রথম হার। মাঝে ১৭ টেস্টের ১৩টিতেই তারা জিতেছে।
বাংলাদেশের কাছে এক টেস্টে হেরেই অনেক চাপে পড়ে গেছে স্বাগতিকরা। কারণ এই টেস্টের ফলাফল যে ক্রিকেট বিশ্বে ব্যাপক সাড়া ফেলে দিয়েছে। তাইতো আগামীকাল শুরু হতে যাওযা ক্রাইস্টচার্চ টেস্ট জিতে তারা সিরিজ ড্র করে হারানো গৌরব ফিরে পেতে চাইবে। আর এ কারণেই তারা চাপে থাকবে। বিপরীতে বাংলাদেশের চাওয়া টেস্ট জিতেই সিরিজ জেতা। কোনো রকমের ড্র করার কথা দলের কারও মুখ দিয়ে উচ্চারিত হচ্ছে না। কোচ রাসেল ডোমিঙ্গো আছেন মুখিয়ে।
তিনি বলেন, ‘নিউ জিল্যান্ডই চাপে থাকবে। আমাদের পেসাররা বোলিং করার জন্য মুখিয়ে আছে। তারা জানে, এ রকম কন্ডিশন ঘরের মাঠে পাওয়া যাবে না। সেখানে স্পিনাররাই বেশি (৯০ শতাংশ) বল করে থাকে। তাই তারা এই রকম কন্ডিশনে খেলার জন্য উন্মুখ হয়ে আছে। আশা করছি তারা ভালো করবে।’ তিনি আলাদা করে নাম নিয়েছেন এবাদতের। বলেন, ‘গত তিন থেকে এবাদতের হাসি থেমেছে বলে মনে হয় না। সে যা করেছে, তা অতুলনীয়। আমি দারুণভাবে খুশি হয়েছি।’
ক্রাইস্টচার্চের ইতিহাস বলে এখানে আগে ব্যাট করা দল ফায়দা নিতে পারে না। সর্বশেষ ১০ টেস্টে আগে ব্যাট করা দল জিতেছে মাত্র দুবার। আর প্রথম ইনিংসে রান তিনশর নিচে থাকে। তাই নতুন বলের সুবিধা নেওয়ার জন্য টস জেতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে মনে করেন কোচ। কারণ, তিনি তার পেসারদের নিয়ে খুবই আত্মবিশ্বাসী।
তিনি বলেন, ‘এখানে (সংবাদ সম্মেলনে) আসার আগ পর্যন্ত আমি পিচ দেখিনি। ডানেডিন, ওয়েলিংটন ও হ্যামিল্টনে আমি আগে গেলেও কোনো টেস্টের আগে ক্রাইস্টচার্চে আমার আসা হয়নি। যতদূর মনে হচ্ছে এই পিচে পেসারদের সুবিধা নেওয়ার জন্য উত্তম। তাউরাঙ্গার (মাউন্ট মঙ্গানুই) চেয়ে সুবিধা বেশি এখানে। এটা আমাদের জন্যও সুবিধা হবে। আমাদের ভালোমানের কয়েকজন পেসার আছে।’
এই টেস্ট ড্র করলেই বাংলাদেশ সিরিজ জিতবে। কিন্তু ডোমিঙ্গো এই টেস্ট জিতেই সিরিজ জয় করতে চান। তিনি বলেন, ‘আমি আগের সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলাম, এই দলটা তরুণ। দলের কয়েকজন সিনিয়র ক্রিকেটার যাদের আগে নিউ জিল্যান্ড খেলার অভিজ্ঞতা আছে, তারা এবার আসেননি। বাংলাদেশের ক্রিকেটে দলের এইসব তরুণরা লম্বা ক্যারিয়ার গড়তে চায়। তারা খুবই পরিশ্রমী। বাংলাদেশের কোনো দলই আগে নিউ জিল্যান্ডে সিরিজ জিততে পারেনি। এবার তারা তা জেতার জন্য উদগ্রীব হয়ে আছে।’
প্রথম টেস্ট জেতার পর দলের ক্রিকেটাররা অনেক আনন্দ করছে জানিয়ে ডোমিঙ্গো বলেন, নিউ জিল্যান্ডে সব সময় বাংলাদেশের খুবই বাজে সময় গেছে। তিন ফরম্যাটেই আমরা কখনোই ভলো করতে পারিনি। নিউ জিল্যান্ডের মাটিতে তারা খুবই শক্তিশালী। তাদের হারাতে হলে তিন বিভাগেই অনেক ভালো খেলতে হয়। তাই প্রথম টেস্ট জেতা আমাদের জন্য ছিল খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। সবাই খুব উপভোগ করছে। নিউ জিল্যান্ডকে হারাতে পরিশ্রমের পাশাপাশি পরিকল্পনাও বাস্তবায়ন করেছে ক্রিকেটাররা। তাই তাদের অনেক কৃতিত্ব দিতেই হবে।’
এমপি/এমএমএ/