উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে টাইব্রেকারে সাইফকে হারিয়ে ফাইনালে আবাহনী
টানটান উত্তেজনার দ্বিতীয় সেমি ফাইনালে আবাহনী টাইব্রেকারে ৪-৩ গোলে সাইফ স্পোর্টিং ক্লাবকে হারিয়ে ফেডারেশন কাপ ফুটবলের ফাইনালে উঠেছে। নির্ধারিত সময় খেলা ৩-৩ গোলে ড্র ছিল। শনিবার আবাহনী ফাইনাল খেলবে রহমতগঞ্জের বিপক্ষে।
আক্রমণ পাল্টা আক্রমণে খেলা দারুণ উপভোগ্য হয়ে উঠেছিল। ৬ গোলের ম্যাচে আবাহনী দুইবার ও সাইফ স্পোর্টিং একবার এগিয়ে ছিল। প্রথমে আবাহনী এগিয়ে গিয়েছিল। পরে সাইফ স্পোর্টিং গোল করে সমতা এনে আবার এগিয়ে যায়। পরে আবাহনী আবার সমতা এনে তারাও এগিয়ে যায়। পরে সাইফ সেই গোল পরিশোধ করে খেলা টাইব্রেকরে নিয়ে যায়।
দুই দলের খেলায় কাকতলীয়ভাবে দুইটি মিল ছিল। দুই দলই একটি করে গোল করে পেনাল্টি থেকে। আবার দুই দলই গোল পরিশোধ করে সমতা আনে যোগ করা অতিরিক্ত সময়ে। নির্ধারিত সময়ে আবাহনীর হয়ে সান্তোষ সিলভা, কলিনদ্রেস ও রাকিব এবং সাইফের হয়ে সানডে উদোহ, ওগবাহ ও সাজ্জাদ। টাইব্রেকারে আবাহনীর হয়ে মিরাজ শেখ, রেজাউল মেহেদী ও ফয়সাল গোল করলেও সাইফের এমফন ও অধিনায়ক জামাল ভুইয়ার শট আবাহনীর গোলরক্ষক শহীদুল ইসলাম সোহলে আটকে দেন। গোল করেন এমেরি ও ফাহিম। আবাহনীকে পঞ্চম শট আর নিতে হয়নি।
আবাহনী প্রথম গোল পেলেও প্রথম সুযোগ হারায় সাইফ। ৪ মিনিটে এমফন সানডের কোনাকুনি শট ক্রসবার লেগে ফিরে আসে। এই গোল থেকে রক্ষা পেয়ে আবাহনী ৮ মিনিটে গোল করে এগিয়ে যায় পেনাল্টি থেকে। বক্সে আবাহনীর রাকিবকে ফাইল করেন সাইফের মানিক। রেফারি পেনাল্টি বাঁশি বাজান। তা থেকে গোল করেন সান্তোষ সিলভা। এই গোলের পর আবাহনী ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ নষ্ট করে ১১ ও ১৭ মিনিটে। প্রথমে কলিনদ্রেসের ত্রস থেকে রাকিবের ভলি গোললাইন থেকে বাঁচিয়ে দেন এমেরি বাইসেঙ্গে। পরে সান্তোষ সিলভার ক্রস থেকে রাকিবের শট ঝাঁপিয়ে পড়েন রক্ষা করেন পাপ্পু।
আবাহনী দুইটি সুযোগ কাজে না লাগনোর খেসারত দেয় ২০ মিনিটে গোল হজম করে। আসরোরভ গফুরভের শট গোলরক্ষক সোহেল ফিস্ট করে ফেরালেও শেষ রক্ষা হয়নি। ফিরতি শটে গোল করে সমতা আনেন সানডে উদোহ।
দ্বিতীয়ার্ধে এগিয়ে যায় সাইফ। খেলার ৭১ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করেন ওগবাহ। বক্সে সাদ্দাম হোসেনকে ফাউল করেন মনির হোসেন। প্রাপ্ত সুযোগকে কাজে লাগাতে ভুল করেননি ওগবাহ ২-১। ৮০ মিনিটে ব্যবধান ৩-১ করতে নিতে পারতো সাইফ। এবারো তারা পেনাল্টি পেয়েছিল। এই পেনাল্টি নিয়ে মাঠে উত্তেজনা ছড়িয়ে ছিল। সানডে উদোহকে বক্সে ফাউল করেছিলেন জুয়েল রানা। রেফারির এই সিদ্ধান্ত নিয়ে আবাহনীর খেলোয়াড়রা প্রতিবাদ করেছিলেন। এক পর্যায়ে রেফারিকে ধাক্কাও মেরেছিলেন। কিন্তু রেফারি সিদ্ধান্ত বদলাননি। কিন্তু পেনাল্টি শট মারা নিয়েও নাটক হয়। এমেরি বাইসেঙ্গে গোল করলেও আগেই খেলোয়াড় বক্সে ডুকে পড়াতে রেফারি গোল বাতিল করে দেন। পরে আবার পেনাল্টি শট নিতে যান বাইসেঙ্গে। কিন্তু এবার তিনি নিয়ম বহির্ভূতভাবে গোলরক্ষককে ডজ দিতে যান। এর ফলে রেফারি পেনাল্টি বাতিল করে তাকে হলুদ কার্ড দেখান। বিপরীতে আবাহনী পায় ইনডাইরেক্টি ফ্রি কিক। নিশ্চিত গোল হাত ছাড়া হয় সাইফ স্পোর্টিং ক্লাবের। তারপরও সাাইফ স্পোর্টিং ছিল ফাইনালের পথে। যোগ করা অতিরিক্ত সময়ের খেলা চলছিল। যে কোনো সময় বাজতে পারে শেষ বাঁশি। আর তখনই আবাহনীর হয়ে গোল পরিশোধ করেন কলিনদ্রেসে।
এরপর খেলা গড়ায় অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে। এবারও শুরুতেই গোল পেয়ে যায় আবাহনী। অতিরিক্ত সময়ের ৪ ও খেলার ৯৪ মিনিটে আবাহনীর হয়ে গোল করেন রাকিব। সেই গোল আবার সাইফ পরিশোধ করে যোগ করা অতিরিক্ত সময়ে। এরপর খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে।
এমপি/এএস